ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় প্রশাসন। তামিলনাড়ুর উপকূলীয় জেলাগুলির পাশাপাশি চেন্নাইতেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফলের আগে থেকেই তুমুল বৃষ্টি শুরু হয় চেন্নাই-অন্ধ্র উপকূলে। রবিবার রাত থেকে গত দু'দিনের ভারী বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত চেন্নাই। রাস্তাঘাট ভেসে গেছে, উপড়ে পড়েছে গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বিপর্যয় নেমেছে। বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ঝড়বৃষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭।
অন্ধ্র উপকূলে মঙ্গলবার ৫ ডিসেম্বর আছড়ে পড়ার পরে দুর্বল হয়েছে মিগজাউম। মৌসম ভবন জানিয়েছে, বাপতালা থেকে ১০০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে ও খাম্মান থেকে ৫০ কিমি দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়। এর অভিমুখ উত্তর-পশ্চিম দিকে। ধীরে ধীরে গভীর নিম্নচাপে বদলে যাবে ঘূর্ণিঝড়।
মিগজাউম-এর প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ৩ এবং ৪ ডিসেম্বরে চেন্নাইয়ের বেশির ভাগ জায়গায় ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। যা ২০১৫ সালের বন্যার পর এই প্রথম। ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চেন্নাই, কাঞ্চিপুরম, তিরুভাল্লুর এবং চেঙ্গলপেটে জেলাতে। কোট্টুরপুরম, মুথিয়ালপেট, তাম্বারম, অশোকনগর, কাট্টুপক্কম, পেরুনগুড়ির মতো শহরের বেশির ভাগ এলাকা কয়েক ফুট জলের তলায় চলে গেছে।
এনএলসি ইন্ডিয়া লিমিটেডের পক্ষ থেকে জল নামাতে ১৬টি বড় মাপের পাম্প পাঠানো হয়েছে চেন্নাইয়ে। এই শক্তিশালী মোটরচালিত পাম্পগুলি সাধারণত খনিতে জমা জল দ্রুত বের করার জন্য ব্যবহার করা হয়। বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে চেন্নাইয়ের রাস্তায় নিজেদের নৌকা নামিয়েছে ভারতীয় নৌসেনা। কোনও কোনও এলাকায় নৌবাহিনীর কর্মীরা খাবারের প্যাকেট, পানীয় জল বিতরণ করেছেন।
নৌসেনার পাশাপাশি উদ্ধার ও ত্রাণের কাজে হাত লাগিয়েছে বায়ুসেনাও। দু'টি হেলিকপ্টার মাধ্যমে ৫০০ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী এবং রেশন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য আরও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে বায়ুসেনা। উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযানে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ - এই দুই রাজ্য মিলিয়ে তাদের মোট ২৭টি দল কাজ করছে।