বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “একতরফা নির্বাচনের আগে, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেশের জনগণের সঙ্গে তামাশা।” রবিবার (৩ ডিসেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, “একতরফা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো তাৎপর্য নেই। যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নেই এবং ভোটারদের ভোট দেয়ার আগ্রহ নেই। নির্বাচন কমিশন জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তফসিল ঘোষণা করে সংবিধানের অখণ্ডতা নষ্ট করেছে। এখন আওয়ামী ধাঁচের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য নোটিশ দেয়া মানে, কমিশন জনগণকে নিয়ে মজা করছে।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “এটি একটি একতরফা নির্বাচন, যেখানে একই দলের লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কেউ এক নম্বর প্রার্থী, কেউ দুই নম্বর প্রার্থী; আবার কেউ তিন নম্বর প্রার্থী। তবে সবাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী।”
তিনি আরো বলেন, “নির্বাচন উপলক্ষে ইউএনও এবং ওসি বদলির ইসির সিদ্ধান্ত আওয়ামী মতাদর্শী ইউএনও ও ওসির মধ্যে রদবদল মাত্র। পুরো প্রক্রিয়াটি একটি অভূতপূর্ব হাস্যরস-উদ্দীপক নাটক।”
রিজভী বলেন, “৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে প্রহসন করতে, বিএনপিসহ গণতন্ত্রপন্থী দলগুলোর নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছে সরকারের পেশিশক্তি। সারাদেশে বিএনপিসহ গণতন্ত্রপন্থী নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা অব্যাহত রয়েছে। তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িঘর লুটপাট করছে এবং আলবদর ও রাজাকারদের মতো পুরুষহীন ঘরে নারীদের হয়রানি করছে।”
“এ অবস্থায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে শুধু বিএনপি নেতাকর্মীদের পরিবারের নয়, সাধারণ ভোটারদেরও ভয় ও উদ্বেগ গ্রাস করেছে। সরকার ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে, জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করছে;” উল্লেখ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
দগ্ধ মানুষের আর্তনাদ কি আগুন সন্ত্রাসীদের কানে পৌঁছায় না : হাছান মাহমুদ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “জীবন্ত দগ্ধ মানুষদের আর্তনাদ কি তাদের কানে পৌঁছায় না?”
রবিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। হাছান মাহমুদ আরো বলেন, “অগ্নিসন্ত্রাসী ও তাদের হুকুমদাতা, অর্থদাতাদের বিচার হলেই কেবল অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধ হবে।”
অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ নামের একটি সংগঠন এই মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে। এতে আরো বক্তব্য দেন সংগঠনের আহ্বায়ক শাহাদত হোসেন বাবুল, আইনজীবী খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এমপি, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় নিহত নাহিদের মা রুনি বেগম।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বা দ্রুততম সময়ে বিচারের মাধ্যমে ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে যারা আগুনসন্ত্রাস চালিয়েছিলো, তাদের এবং হুমুকদাতা ও অর্থদাতাদের যদি আমরা বিচার করতে পারতাম, তাহলে, ২০২৩ সালে এই আগুনসন্ত্রাস হতো না। সেই সময় তারা আগুনসন্ত্রাস চালিয়েছিলো খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে; এখন চালানো হচ্ছে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “একটি রাজনৈতিক দল অবরোধ ডেকে ঘরের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকে; আর তাদের কিছু কর্মী, সন্ত্রাসী আর কিছু মানুষকে ভাড়া করে হাতে পেট্রোলবোমা তুলে দিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা করাচ্ছে; গাড়িতে আগুন দেয়াচ্ছে। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না। গত দুই দশকে পৃথিবীর কোথাও রাজনীতির জন্য এভাবে আগুনসন্ত্রাস করে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটেনি; যেটি বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত করছে।”