বুধবার জাতিসংঘের মহাসচিব ইসরাইল ও হামাসকে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময়কাল বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন আট সপ্তাহ ব্যাপী দীর্ঘ এই যুদ্ধে একটি “সত্যিকারের মানবিক যুদ্ধবিরতি” প্রয়োজন।
পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কার্যনির্বাহী পর্যায়ের বৈঠকে আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “গাজার জনগণ বিশ্বের চোখের সামনে একটি মহাকাব্যিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। আমাদের মুখ ফেরালে চলবে না।”
শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বিরতির সময় উত্তর ও দক্ষিণ উভয় দিক থেকে গাজায় প্রবেশকৃত অসংখ্যা ত্রাণবাহী ট্রাক এবং জ্বালানি সরবরাহকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন। এই বিরতির সময় থেকে এ পর্যন্ত হামাসের হাতে আটক ষাটজন জিম্মি এবং ১৮০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
তবে গুতেরেস বলেছেন, গাজার ২২ লাখ বাসিন্দার মানবিক চাহিদা মেটাতে “আরও অনেক বেশি কিছু” প্রয়োজন।
৭ অক্টোবরের নৃশংস সন্ত্রাসী হামলার সময় হামাস ইসরাইলে প্রায় ১২০০ মানুষকে হত্যা করেছে এবং ইসরাইলের শহরগুলোতে অব্যাহত ভাবে রকেট নিক্ষেপ করে চলেছিল।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছে, যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ধসে পড়া ভবনের নিচে নিখোঁজ রয়েছে আরও বহু মানুষ।
সোমবার ও মঙ্গলবার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৬০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ইসরাইলের দূত হামাসের হুমকির অবসানের প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। হামাসকে ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্যরা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেন, “যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বানের অর্থ হলো হামাসের আরও একদিন টিকে যাওয়া, ইসরাইলিদের আতংকিত করা এবং গাজাবাসীকে দরিদ্র করা।”
তিনি বলেন, ইসরাইল নিশ্চিহ্ন হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত হামাস ৭ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলার পুনরাবৃত্তি করার হুমকি দিয়েছে। তিনি অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে একই পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে তা-ও জিজ্ঞাসা করেছে।
ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র গাজার সহায়তা বৃদ্ধি করার এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছে। গাজায় ১১০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি জাতিসংঘের কর্মী এবং ৫০ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।