চলতি মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশে যুদ্ধজাহাজ ভিড়িয়েছে রাশিয়া। গত পাঁচ দশকে প্রথমবার এমনটা ঘটল। পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গে এই প্রথম যৌথ নৌ-মহড়া দিয়েছে মস্কো। রাশিয়া ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বৃহত্তর ভূমিকা নিতে চায় এবং এশিয়ার ছোট দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার দিকে তাদের নজর।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত পুরোনো মিত্র রাশিয়ার প্রতি বিরূপ নয়। কৌশলগত জলসীমায় চীনের ক্রমবর্ধমান হাজিরার পাল্টা জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারতের গভীর অংশীদারিত্ব সত্ত্বেও রাশিয়া তাদের সামুদ্রিক প্রতিবেশে উপস্থিতি বাড়াচ্ছে।
নয়াদিল্লি তার পশ্চিমা অংশীদারদের চাপ উপেক্ষা করে মস্কোর সঙ্গে তার কয়েক দশকব্যাপী সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং ইউক্রেনের যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে।
ভারতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র বিশ্লেষক প্রাভিন ডন্থি ভিওএ-কে বলেন, “ভারত চায় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করুক রাশিয়া, কারণ নয়াদিল্লি যাকে বহু মেরুর বৈশ্বিক শৃঙ্খল বলে থাকে সেই বৃহত্তর কৌশলী লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সঙ্গতিপূর্ণ। নয়াদিল্লি বিশ্বাস করে, বহু মেরুবিশিষ্ট বিশ্ব গড়ে তোলার চাবিকাঠি হল বহু মেরুযুক্ত এশিয়া।” তিনি আরও বলেন, “এ পর্যন্ত ভারত এই ধরনের কৌশলগত দ্বিধা প্রকাশের দক্ষতা দেখিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলা যায়।”
চলতি বছরের ৭ থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত আন্দামান সাগরে মিয়ানমারের সঙ্গে নৌ-মহড়াকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক “আধুনিক ইতিহাসে প্রথম রুশ-মিয়ানমার নৌ-মহড়া” বলে অভিহিত করেছে।
মিয়ানমারের সঙ্গে নৌ-মহড়ার কয়েক দিন পর এই একই রুশ যুদ্ধজাহাজ বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরে হাজির হয়েছে। ৫০ বছরে এটাই তাদের প্রথম বাংলাদেশ সফর। ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস একে “রুশ-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশাল মাইলফলক” বলে অভিহিত করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বক্তব্য অনুযায়ী, “নৌ সহযোগিতা মজবুত” করতে রাশিয়া গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে ভারতের সঙ্গে দুই দিনের নৌ মহড়া পরিচালনা করেছে।