ভারতে ডিপ ফেক-এর ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। প্রথম এর শিকার হন অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্ধানা, তারপর একে একে অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফ, কাজলের ডিপ ফেক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এবার শচীন তেণ্ডুলকরের কন্যা সারা তেন্ডুলকরের ভুয়ো ভিডিয়ো ভাইরাল হল।
এই এআই প্রযুক্তির শিকার হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তাকে গান গাইতে দেখা গিয়েছিল।
এআই প্রযুক্তি বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে ভিডিয়োয় থাকা মুখকে ডিজিট্যালি বদলে রশ্মিকা মান্ধানার মুখ ব্যবহার করা হয়েছিল। তখন থেকেই ডিপফেক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, ভারতের পুরুষদের জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য শুভমন গিলের কাঁধে হাত রেখে ঘনিষ্ঠভাবে দাঁড়িয়ে আছেন সারা। পরে প্রকাশ্যে আসে ভাইরাল হওয়া ছবিটি 'ডিপ ফেক'। ফটোশপের সাহায্যে শচীনের পুত্র অর্জুন তেণ্ডুলকরের মুখের জায়গায় শুভমনের মুখ বসানো হয়েছে।
ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সোশ্যাল মাধ্যমে সরব হয়েছেন সারা। ইনস্টাগ্রাম-এ নিজে বিবৃতি দিয়ে সারা লিখেছেন, "সোশ্যাল মিডিয়ার মতো অসাধারণ জায়গায় প্রযুক্তির অপব্যবহার দেখে আমি বিরক্ত। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য আমার ছদ্মবেশে এক্স-এ বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছে। এবং সেখান থেকে বেশ কিছু ফেক ছবি ছাড়া হয়েছে, বাস্তবে যার কোনও অস্তিত্ব নেই।”
সারা আরও লিখেছেন, “এক্স-এ আমার কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। আশা করি এক্স কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং সংশ্লিষ্ট ফেক অ্যাকাউন্টগুলি সাসপেন্ড করবে।”
বেশ কিছু দিন যাবত সংবাদমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়ায় গুঞ্জন চলছে সারা তেণ্ডুলকর ও শুভমন গিলের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে। তবে তাদের দু'জনের কেউই প্রকাশ্যে এই সম্পর্ক নিয়ে কোনও বিবৃতি এখনও দেননি। এই 'ডিপ ফেক' ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর আরও একবার গুজব ছড়িয়ে পড়ে শুভমন ডেট করছেন সারা-র সঙ্গে।
এই ডিপফেক নিয়ে আগেই সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। গত ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন থেকে এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, “এআই-এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে সারা বিশ্ব চিন্তিত। এটা একটা ভয়ঙ্কর প্রবণতা। সমাজ এবং ব্যক্তির জন্য ডিপফেক অত্যন্ত বিপজ্জনক। এই জিনিস বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক আইন জরুরি। সকল দেশকে একত্রিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
ডিপফেক হল এমনই একটি প্রোগ্রাম, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের একটি ধরন যা ‘ডিপ লার্নিং টেকনোলজি’ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। মূলত এই পদ্ধতিতে অডিও, ভিডিও ও ছবিতে কারসাজি করে এমন কনটেন্ট বানানো হয়, যা দেখে আসল কি নকল তা বোঝার উপায় থাকে না।