মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট শুক্রবার বলেছেন, তার দেশের মাটিতে যাতে কোন বিদেশি সামরিক বাহিনী না থাকে, তা নিশ্চিত করতে তিনি কুটনীতি ব্যবহার করবেন।
এই বক্তব্যের মাধ্যমে নতুন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ মুইজ্জু মালদ্বীপে অবস্থিত অল্প সংখ্যক ভারতীয় বাহিনীকে সরিয়ে ফেলার ব্যাপারে তাঁর সমর্থনকে আবারও নিশ্চিত করলেন।
সেখানে ভারত ও চীন তাদের নিজ নিজ প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা করছে।
সেপ্টেম্বর মাসের নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর শুক্রবার তিনি তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন। ঐ নির্বাচনে ফিরতি ভোটে তিনি ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলিহকে পরাস্ত করেন।
সোলিহ “ইন্ডিয়া ফার্স্ট” নীতি অনুসরণ করতেন, কিন্তু মুইজ্জু তাঁর নির্বাচনী প্রচারাভিযানেই মালদ্বীপে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৭৫-সদস্য বিশিষ্ট এই ক্ষুদ্র দলকে সরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
মুইজ্জু তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে বলেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ভারত মহাসাগরের দ্বীপটিতে, “ মোটা দাগের লাল রেখা” থাকবে। তিনি “অন্য যে কোন দেশের লাল নিরাপত্তা রেখার” প্রতি সম্মান জানানোরও প্রত্যয় প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “কুটনীতিকে ব্যবহার করে আমি এটা নিশ্চিত করবো যে এ দেশের মাটিতে কোন বিদেশী সামরিক বাহিনী থাকবে না। আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই যে আমার প্রিয় মালদ্বীপের প্রতি আমার আনুগত্য প্রকাশের চাইতে আমার জন্য আর কোন বড় সম্মানের বিষয় নেই।‘’
গত মাসেই তিনি বলেছিলেন, “যথা শীঘ্র সম্ভব” তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর লোকদের ফেরত পাঠানোর জন্য কাজ শুরু করবেন। তবে তিনি সমৃদ্ধির জন্য ভারত ও চীন উভয়ের সাথে বিনিয়োগ-বন্ধন আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে তাঁর প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেন।
চীন ও ভারতের প্রতিযোগিতা
এশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বি দু’টি শক্তি ভারত ও চীন সেই দ্বীপপুঞ্জে তাদের প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে লক্ষ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করেছে।
মালদ্বীপের বাজেট ঘাটতি পুষিয়ে তুলতে এবং অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলির জন্য অব্যাহত ভাবে ঋণ নেয়ায় সাধারণ ভাবে ঋণের পরিমাণ অনেক বেশি।
বিশ্ব ব্যাংকের হিসেব মতে ২০২২ সালের শেষ নাগাদ মোট ঋণের পরিমাণ ৭০০ কোটি ডলার যা কী না মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১১৩.৫ শতাংশ। এর আগের বছর তা ছিল ৫৯০ কোটি ডলার বা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ১১২.১ শতাংশ।
মুইজ্জো ঋণের পরিমান বৃদ্ধিকে “ বিপজ্জনক” বলে বর্ণনা করেন এবং এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে, “ দ্রুত ও সাহসী” পদক্ষেপ গ্রহণের সংকল্প ব্যক্ত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রশাসক সামান্থা পাওয়ার এবং চীনের স্টেট কাউন্সিলার শেন ই কিনসহ মুইজ্জোর এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলির রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।