হামাস নিয়ন্ত্রিত ছিটমহলের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে আহতদের সরিয়ে নিতে ব্যবহৃত একটি অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার ইসরাইলি বিমান হামলার কবলে পড়ে। এতে ১৫ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হয়েছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা হামাসের একটি সন্ত্রাসী সেলের ব্যবহৃত একটি অ্যাম্বুলেন্সকে সনাক্ত করে আক্রমন চালিয়েছে। হামলায় হামাস যোদ্ধারা নিহত হয়েছে বলে জানায় তারা। অ্যাম্বুলেন্সে করে জঙ্গি ও অস্ত্র স্থানান্তর করছে হামাস, এই অভিযোগও করেছে তারা।
১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসরে ম ন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।
হামাসের কর্মকর্তা ইজ্জাত এল রেশিক বলেছেন, তাদের যোদ্ধাদের সেখানে উপস্থিত থাকার অভিযোগ “ভিত্তিহীন”। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেন, গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের কাছে ইসরাইল যে গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, তারই অংশ ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি।
কিদরা বলেন, ইসরাইল আল-শিফা হাসপাতালের গেট এবং এক কিলোমিটার দূরে আনসার স্কয়ারসহ একাধিক স্থানে অ্যাম্বুলেন্স বহর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে অ্যাম্বুলেন্সটি হামাসের সঙ্গে যুক্ত থাকার দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ দেয়নি। তবে তারা বলেছে,
তারা আরও তথ্য প্রকাশ করার ইচ্ছা রাখে। সামরিক বাহিনী "আমরা জোর দিয়ে বলছি যে এই অঞ্চলটি একটি যুদ্ধক্ষেত্র। ওই এলাকার বেসামরিক নাগরিকদের নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে দক্ষিণ দিকে সরে যাওয়ার জন্য বারবার আহ্বান জানানো হচ্ছে।”
রয়টার্স স্বাধীনভাবে কোন পক্ষের কথার সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, শহরের রাস্তায় একটি অ্যাম্বুলেন্সের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় মানুষ পড়ে আছে। লোকজন তাদের সাহায্যের জন্য সে দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতির সত্যতা রয়টার্স নিশ্চিত করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, “অ্যাম্বুলেন্সে হামলার খবরে তিনি মর্মাহত।”তিনি আরও বলেন রোগী, স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিত্সা স্থাপনাগুলোকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।
এর আগে শুক্রবার কিদরা বলেন, গুরুতর আহত ফিলিস্তিনিদের অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হবে। অবরুদ্ধ গাজা শহর থেকে ছিটমহলের দক্ষিণে চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে মিশরে নিয়ে যাওয়া দরকার তাদের।
গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও ইসরাইলের সামরিক বাহিনী গাজা ভূখন্ডের দক্ষিণাঞ্চলেও বোমা বর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
হামাস এবং আল-শিফা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, এই হাসপাতালটি জঙ্গি যোদ্ধাদের ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহৃত হবার অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে।