কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলে, চেচেন বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তি শুক্রবার তার সাবেক হাইস্কুলের এক শিক্ষককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো তিন জন। ইসলামী উগ্রবাদে জড়িত সন্দেহে, এই ব্যক্তিকে আগে থেকেই ফ্রান্সের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা নজরদারিতে রেখেছিলো।
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে, ফ্রান্স তার হুমকি সংশ্লিষ্ট সতর্কতা সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করেছে। আর, সন্ত্রাসবিরোধী প্রসিকিউটররা এই হামলার তদন্ত শুরু করেছেন। এ ঘটনার প্রায় তিন বছর আগে, প্যারিসের একটি স্কুলের কাছে স্যামুয়েল প্যাটি নামে আরেক শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করেছিলো চেচেন বংশোদ্ভূত উগ্রবাদীরা।
ফ্রান্সের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এপিকে জানিয়েছে, ইসলামিক উগ্রবাদে যুক্ত সন্দেহে, এই সন্দেহভাজন হামলাকারীকে গত গ্রীষ্ম থেকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিলো। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন বলেছেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তার ফোন কল পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার তাকে আটক করা হয়েছে। তবে সে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে তদন্তকারীরা কোনো আলামত পাননি।
মন্ত্রী বলেন, ফরাসি গোয়েন্দারা মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তির হামলার সিদ্ধান্তের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে।
প্রসিকিউটররা সন্দেহভাজনকে মোহাম্মদ এম হিসেবে শনাক্ত করেছেন। জানান, মোহাম্মদ এম তদন্তকারীদের সাথে কথা বলতে বার বার অস্বীকার করছিলেন বলে জানা গেছে। জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী প্রসিকিউটর জ্যঁ-ফ্রাঁসোয়া রিকার্ড জানিয়েছেন, শুক্রবার আরো কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের মধ্যে সন্দেহভাজনের ছোট ভাই রয়েছে ।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্স আবার ইসলামি সন্ত্রাসবাদের বর্বরতার শিকার হয়েছে।
প্যারিস থেকে ১৮৫ কিলোমিটার উত্তরে আরাস শহরে এই হামলা হয়। সেখনে ম্যাক্রোঁ বলেন, “স্যামুয়েল প্যাটির হত্যাকাণ্ডের প্রায় তিন বছর পর আবার একটি স্কুলে সন্ত্রাসবাদ আঘাত হানলো। আর, আমরা এর প্রেক্ষাপট জানি।”
গ্যামবেটা-কার্নোট স্কুলের ফরাসি ভাষার শিক্ষক ছিলেন মৃত ডোমিনিক বার্নার্ড। তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। একই সময় একজন শিক্ষক, নিরাপত্তাকর্মী এবং একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আহত হন।
প্রসিকিউটর জানান, হামলাকারী সেখানকার একজন সাবেক ছাত্র এবং হামলার সময় বারবার আরবি ভাষায় “আল্লাহু আকবার” বা “আল্লাহ মহান” বলে স্লোগান দেয়। জাতীয় পুলিশ বাহিনী হামলার সন্দেহভাজন-কে চেচেন বংশোদ্ভূত রুশ নাগরিক বলে শনাক্ত করে।
ম্যাক্রোঁ বলেন, শনিবার সকালের মধ্যেই আরাস শহরের স্কুল খুলে দেয়া হবে।তিনি ফ্রান্সের জনগণকে “ঐক্যবদ্ধ থাকার” আহ্বান জানিয়েছেন।