ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মঙ্গলবার বলেছেন, তেহরানের ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তার "সদিচ্ছা এবং অভিপ্রায়" প্রমাণ করা। দীর্ঘদিন ধরেই এই দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রের পরোক্ষ আলোচনা কোন কাজে আসেনি।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে রাইসি বলেন, "জেসিপিওএ থেকে বেরিয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি এবং সদিচ্ছার নীতি লঙ্ঘন করেছে।” তেহরান ও ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যে যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তার সদিচ্ছা ও অভিপ্রায় প্রদর্শন করা।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে এই চুক্তি থেকে সরে আসেন। তিনি যুক্তি দেন, চুক্তিটিতে তেহরানকে অনেক ছাড় দেয়া হয়েছে। তিনি নতুন করে ইরানের উপর যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। যা তেহরানকে ধীরে ধীরে চুক্তির উল্লেখিত পারমাণবিক সীমা লঙ্ঘন করতে প্ররোচিত করে।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পারমাণবিক চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার অভিপ্রায়ে আলোচনার চেষ্টা করেন। যার আওতায় ইরান যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তির বিনিময়ে তার পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করেছিল।
কিন্তু কয়েক মাস ধরে চলা পারমাণবিক আলোচনা গত সেপ্টেম্বর থেকে থেমে যায়। উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ছাড় দাবি করার অভিযোগ এনেছে।
দেশ দুটির মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা ভেস্তে যাবার পর থেকেই তেহরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড বন্ধের উপায় খুঁজছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা।
উত্তেজনা প্রশমনে তেহরান ও ওয়াশিংটন গত মাসে কাতারের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তিতে পৌঁছে। ফলে সোমবার দুই পক্ষের পাঁচজন বন্দী বিনিময় এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় তেহরানের তহবিলের ৬০০ কোটি ডলার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইরানের কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যা কিনা আগের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কে আরও প্রভাব ফেলেছে।