জাতিসংঘের ড্রাগ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল মেথামফেটামিন উৎপাদনকারী দেশ। দেশটি একটি প্রধান আফিম উৎপাদনকারী এবং হেরোইনের উৎস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যদিও তালিবান ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতায় ফিরে আসার পরে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক দপ্তর জানিয়েছে, আফগানিস্তানে মেথ মূলত বৈধভাবে প্রাপ্ত পদার্থ থেকে তৈরি । বনে বেড়ে ওঠা এফেড্রা উদ্ভিদ থেকেও আহরণ করা হয়।
প্রতিবেদনে আফগানিস্তানের মেথ উৎপাদনকে জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি বলে অভিহিত করা হয়েছে । এটি সিন্থেটিক ড্রাগের বাজার এবং জ্বালানী আসক্তিকে ব্যাহত করতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পূর্ব আফ্রিকাতে আফগানিস্তান থেকে আসা সন্দেহভাজন মেথ জব্দের খবর পাওয়া গেছে ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের অভ্যন্তরে বার্ষিক মেথ জব্দের পরিমাণ ২০১৯ সালে ১০০ কিলোগ্রামেরও কম ছিল। ২০২১ সালে তা বেড়ে প্রায় ২,৭০০ কিলোগ্রাম হয়েছে, যা উৎপাদন বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়।
ইউএনওডিসির রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেন্ড অ্যানালাইসিস শাখার প্রধান অ্যাঞ্জেলা মি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, আফগানিস্তানে হেরোইন বা কোকেইন উৎপাদনের চেয়ে মেথ তৈরির বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে।
আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র আবদুল মতিন কানি বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, তালিবান শাসিত সরকার আফগানিস্তানে সব ধরনের মাদকদ্রব্যের চাষ, উৎপাদন, বিক্রয় ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
তিনি জানান, কর্তৃপক্ষ ৬৪৪টি কারখানা এবং প্রায় ১২ হাজার একর জমি ধ্বংস করেছে যেখানে নিষিদ্ধ মাদক চাষ, প্রক্রিয়াকরণ বা উৎপাদিত হতো। তাছাড়া পাঁচ হাজারেরও বেশি অভিযান চালিয়ে ৬ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নভেম্বরে প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, তালিবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে আফিম চাষ আগের বছরের তুলনায় ৩২% বৃদ্ধি পেয়েছে । ২০২২ সালের এপ্রিলে কর্তৃপক্ষ আফিম চাষ নিষিদ্ধ করার ঘোষণার পরে আফিমের দাম বেড়েছে। আফিম বিক্রি থেকে কৃষকদের আয় ২০২১ সালে ৪২.৫ কোটি ডলার থেকে তিনগুণ বেড়ে ২০২২ সালে ১৪০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিলে কর্তৃপক্ষ আফিম চাষ নিষিদ্ধ করার ঘোষণার পরে আফিমের দাম আরও বেড়েছে। আফিম বিক্রি থেকে কৃষকদের আয় ২০২১ সালে ৪২৫ মিলিয়ন ডলার থেকে তিনগুণ বেড়ে ২০২২ সালে ১.৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।