ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষ দেশগুলোর গ্রুপ জি-২০ তে স্থায়ী সদস্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন-কে । এই পদক্ষেপ, দক্ষিণী বিশ্বকে (গ্লোবাল-সাউথ) বৃহত্তর কন্ঠস্বর দেয়ার বিষয়ে তার উদ্যোগে গতি যোগ করবে। জি-২০ সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ ভারত।
সপ্তাহান্তের জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্ধোধনী ভাষণে মোদী এই ঘোষণা এমন এক সময়ে দেয়া হয়েছে, যখন বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান বিভেদ চলছে। আর, সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর অনুপস্থিতির কারণে, সবচেয়ে জটিল ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছানোর বিষয়টি অধরা থেকে যাচ্ছে।
মোদী বলেন, “আমি আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধিকে জি-২০-এর স্থায়ী সদস্য হিসেবে তার স্থান নেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।”
মোদী প্রতিনিধিদের সামনে বক্তৃতা দেয়ার সময়, তার সামনে রাখা নাম ফলকে তার দেশের নাম ইন্ডিয়ার বদলে ভারত লেখা ছিলো। ভারত নামটি সংস্কৃত ভাষার, যা তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী সমর্থকরা ব্যাপকভাবে প্রচার করে। আর তার সরকার জি-২০ সম্মেলনে এটা তুলে ধরেছে।
মোদী দক্ষিণী বিশ্বকে (গ্লোবাল সাউথ) এই বছরের শীর্ষ সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছেন। আর সম্মেলনের শুরুতেই আফ্রিকান ইউনিয়নকে জোটে যোগ করার বিষয়টিকে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
তিনি নেতৃবৃন্দকে, বৈশ্বিক অর্থনীতির উত্থান-পতন, উত্তর ও দক্ষিণের বিভাজন, পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে ফারাক এবং সন্ত্রাসবাদ, সাইবার নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পানি নিরাপত্তার মতো অন্যান্য ইস্যু থেকে উদ্ভূত ব্যাপক চ্যালেঞ্জের “সুনির্দিষ্ট সমাধান” খুঁজে বের করতে আহ্বান জানান।
শীর্ষ সম্মেলনে বেশিরভাগ দেশই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের ওপর আলোকপাত করতে চাইছে।আর ভারত, উন্নয়নশীল বিশ্বের চাহিদা মোকাবেলায় আরো মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে। তবে, এই ইউরোপীয় সংঘাত থেকে খাদ্য ও জ্বালানি সুরক্ষার মতো অনেক ইস্যুকে আলাদা করা অসম্ভব।
মোদী তার উদ্বোধনী বক্তব্যে যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি যুদ্ধে জড়িত কোনো দেশের নাম নেননি।
সম্মেলন শুরু হওয়ার সময় জি-২০ প্রধানদের অন্তত এক পঞ্চমাংশ নয়াদিল্লিতে ছিলেন না। রাশিয়া ও চীনের নেতারা না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, নিশ্চিত করেছেন যে একাধিক বিরোধ, বিশেষত ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে যাতে তাদের আমেরিকা এবং ইউরোপীয় প্রতিপক্ষের সাথে কোনো মুখোমুখি কড়া কথোপকথন না হয়। স্পেনের প্রেসিডেন্ট কোভিড-১৯ এর কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টও না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সপ্তাহান্তের এই বৈঠকের আগে অনেকগুলো প্রস্তুতি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে সেগুলোতে কোনো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আর তা হয়নি বৈশ্বিক শক্তিগুলোর মধ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকা টানাপেড়েনের জন্য, বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মতানৈক্যের কারণে।