পোপ ফ্রান্সিস এখন মঙ্গোলিয়া সফর করছেন।শনিবার পোপ ফ্রান্সিস বলেন, ক্যাথোলিক চার্চের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই এবং এ কারণে কোনো দেশের সরকারের উচিৎ নয় একে ভয় পাওয়া। ধারণা করা হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ চীনের উদ্দেশ্যে তিনি এই কথা বলেছেন।
ফ্রান্সিস(৮৬)মঙ্গোলিয়ায় এই মন্তব্যগুলো করেন।দেশটিতে মাত্র ১ হাজার ৪৫০ জন ক্যাথোলিক আছেন। এখানকার একটি ক্ষুদ্র গির্জার সঙ্গে সরকারের বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে।আর, সরকার এই গির্জার সমাজসেবা, স্বাস্থ্যসেবা ও দাতব্য কার্যক্রমের প্রশংসা করে।
মঙ্গোলিয়ায় প্রথম কার্যদিবসে, দেশটির সরকার পোপকে বিভিন্ন প্রথাগত আয়োজনের মাধ্যমে সম্মান জানিয়েছে।এর মধ্যে আছে, প্রাচীন মঙ্গোল যোদ্ধাদের পোশাক পরিহিত ঘোড়সওয়ারদের শোভাযাত্রা।
বিশপ,যাজক, মিশনারি ও প্যাস্টোরাল কর্মীদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, যিশু তার অনুসারীদের কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে বলেননি, বরং ধর্মবিশ্বাসের মাধ্যমে “আহত মানবতার” দুর্ভোগ কমাতে বলেছেন।
তিনি বলেন, “এ কারণে, সরকার ও অসাম্প্রদায়িক সংস্থাগুলোর চার্চের ধর্মপ্রচারের বিষয়টি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চার্চের কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য নেই, বরং এটি ঈশ্বরের আশীর্বাদ, ক্ষমা ও সত্যের বার্তা নিয়ে টিকে রয়েছে।চার্চ সবার মঙ্গলকামনায় নিবেদিত।”
বেইজিং ধর্মের ক্ষেত্রে “চীনাকরণ” (সিনিসাইজেশন) নীতি অবলম্বন করছে এবং এর মাধ্যমে বিদেশী প্রভাব সমূলে উৎপাটন করে, কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্য নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ২০১৮ সালে বিশপ নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে ভ্যাটিকান ও চীনের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি হলেও, তা নিয়ে টানাপড়েন অব্যাহত রয়েছে।ভ্যাটিকান অভিযোগ করেছে, বেইজিং এই চুক্তি একাধিকবার লঙ্ঘন করেছে।
পোপ ফ্রান্সিস, সেইন্ট পিটার অ্যান্ড পল ক্যাথেড্রালে বক্তব্য দেন।ছোট এই গির্জাটি মঙ্গোলিয়ার প্রথাগত ‘গের’-এর আকারে নির্মাণ করা হয়েছে। গের হলো সেই গোল তাঁবু; যে ঘরগুলোতে যাযাবররা বসবাস করতেন।এতে ভার্জিন মেরির একটি মূর্তি রাখা আছে; যেটি ১০ বছর আগে আবর্জনার মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়।
পোপ মঙ্গোলিয়ার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার সময় ভবনের বাইরে প্রায় ২ ডজন চীনা ক্যাথোলিক, চীনের লাল রঙের ৫ তারকা বিশিষ্ট জাতীয় পতাকা দোলাচ্ছিলেন।
ক্যাথোলিকরা ক্ষুদ্র গির্জায় পোপকে দেখতে পেয়ে রোমাঞ্চিত হন। যখন পোপ তার প্যাস্টর ইতালীয় কার্ডিনাল জর্জি মারেঙ্গোর কথা উল্লেখ করেন, তখন সবাই গর্বিত হাসিতে উদ্ভাসিত হন। কারণ মারেঙ্গো মঙ্গোলিয়ায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মিশনারির ভূমিকায় কাজ করেছেন।
শনিবার সকালে ফ্রান্সিস নেতাদের প্রতি “যুদ্ধের কালো মেঘ” দূর করার আহ্বান জানান।