টোকিও “চীনে বসবাসরত জাপানী নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত” করার জন্য বেইজিং এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ফুকুশিমার বর্জ্য পানি সাগরে ফেলার বিতর্কিত উদ্যোগ বাস্তবায়নের পর থেকেই জাপানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টেলিফোনে হেনস্তা করার হিড়িক পড়ে। যার ফলে এই অনুরোধ জানানো হয়।
জাপান দাবি করছে, পরিশোধিত পানি সাগরে ফেলার বিষয়টি নিরাপদ এবং জাতিসংঘের আণবিক সংস্থাও এতে সায় দিয়েছে। তবে চীন এই উদ্যোগের কঠোর বিরোধিতা করেছে এবং এই উদ্যোগে সাগরের পানি দূষিত হচ্ছে দাবি করে ইতোমধ্যে জাপান থেকে সব ধরনের মাছ ও মাছজাত পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
বৃহস্পতিবার ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লি ঠাণ্ডা রাখার জন্য ব্যবহৃত পানি সাগরে ছাড়তে শুরু করে অপারেটর টেপকো। তারপর থেকেই জাপানী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চীন থেকে কল পেতে শুরু করে।
জাপানী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন, যার মধ্যে আছে টোকিওর কনসার্ট হল থেকে শুরু করে উত্তরাঞ্চলের ইওয়াতে, তারা জানিয়েছে তারা চীনা ভাষাভাষীদের কাছ থেকে এত বেশি কল পাচ্ছেন যে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এশিয়া ও ওশেনিয়ার দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ জাপানী কূটনীতিক হিরোইউকি নামাজু জানান, এই কলগুলো দুর্ভাগ্যজনক। তিনি টোকিওতে অবস্থিত চীনের দূতাবাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন চীনের মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাতে। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রক শনিবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতি মতে, নামাজু চীন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের বলেন, চীনেও জাপানী ব্যবসায়ীরা এ ধরনের সমস্যার মুখে পড়েছেন।
“আমরা চীন সরকারের কাছে দাবি জানাই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার, যেমন তাদের নাগরিকদের শান্ত থাকার এবং চীনে বসবাসরত জাপানী নাগরিক ও কূটনীতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব উদ্যোগ নেওয়া”, বলেন তিনি।
ফুকুশিমার এক ব্যবসায়ী কিয়োডো সংবাদ সংস্থাকে জানান, তার ৪টি রেস্টুরেন্ট ও প্যাস্ট্রির দোকানে শুক্রবার প্রায় ১ হাজার কল এসেছে, যার বেশিরভাগই চীন থেকে।
পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে তারা ফোনের কানেকশন খুলে রাখতে বাধ্য হন।
সাগরে নিক্ষিপ্ত পানি থেকে ট্রিটিয়াম ছাড়া বাকি সব ধরনের তেজস্ক্রিয় উপকরণ দূর করা হয়েছে।
জাপানের পরিবেশ মন্ত্রক রবিবার জানিয়েছে, ফুকুশিমার উপকূল থেকে পানি নিয়ে নতুন করে পরীক্ষা করে এতে কোনো বাড়তি ট্রিটিয়াম পাওয়া যায়নি।