এক দশক আগে গ্রীষ্মের এক রাতে, আল-শামি পরিবার রকেটের গর্জনের মতো শব্দ শুনে জেগে উঠেছিলো। তবে, এর পর আর কোন সাধারণ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি। এর বদলে পরিবারের সদস্যরা শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে শুরু করেন।
২৬ বছর বয়সী গিয়াদ আল-শামি স্মরণ করেন সেই ঘটনার কথা, কিভাবে সকলেই দামেস্কের শহরতলির পূর্ব ঘৌটায় তাদের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ছাদে ওঠার জন্য দৌড়াচ্ছিলো। আর ঐ সময়টা ছিলো, যখন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদকে, তার বিরোধী যোদ্ধারা ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছিলো।
আল-শামি’র মা, তিন বোন এবং দুই ভাই ওই রাতেই মারা যান। তারা সকলেই ২০১৩ সালের ২১ আগস্ট চলানো সারিন গ্যাস হামলার শিকার। এ হামলায় আরো শত শত মানুষ নিহত হন। আর, আহত হন হাজার হাজার মানুষ।
১০ বছর পার হয়ে এখন ১৩ বছর চলছে। আল-শামি এবং বেঁচে যাওয়া অন্য ব্যক্তিরা বলছেন, সিরিয়ার নৃশংস গৃহযুদ্ধের সময় চালানো সেই হামলা এবং অন্যান্য নৃশংসতার জন্য কোনো জবাবদিহিতা নেই।
গত এক বছর ধরে আসাদ সরকার রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অভিযোগ রয়েছে যে, সিরিয়ার বেসামরিক জনগণের ওপর তারা বারবার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
ব্যাপক বল প্রয়োগের মাধ্যমে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনের পর, ২০১১ সালে আরব লীগ সিরিয়ার সদস্যপদ স্থগিত করেছিলো। এখন আসাদকে আবার আরব লীগে স্বাগত জানানো হয়েছে। তার প্রধান মিত্র রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায়, প্রাথমিকভাবে বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর কাছে হারানো অঞ্চলের একটা বড় অংশ পুনরুদ্ধার করেছেন আসাদ।
সিরিয়া ক্যাম্পেইন অ্যাডভোকেসি গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক লায়লা কিকি বলেন, “আজ অপরাধীদের জবাবদিহিতার বদলে, আসাদকে আরব লীগে স্বাগত জানানো হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে জঘন্যতম অপরাধের দায়মুক্তির প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করা হচ্ছে।"
দক্ষিণ ঘোতায় ২০১৩ সালের হামলার জন্য আসাদকে ব্যাপকভাবে দায়ী করা হয়।অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই হামলায় যে রকেট ব্যবহার করা হয়েছিলো, সেগুলো সিরিয়ার অস্ত্রসম্ভারের অংশ।