নিজারের নতুন সামরিক শাসক ও পশ্চিম আফ্রিকার আঞ্চলিক ব্লকের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বাড়ছে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো নিজারের ব্যর্থ গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেয়ার পর এই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়।
ইকোওয়াস ব্লক বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, নিজারে সাংবিধানিক শাসন ফিরিয়ে আনার জন্য একটি “স্ট্যান্ডবাই বাহিনী” মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ বাজুমকে তার পদে পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বেঁধে দেয়া সময়সীমা শেষ হয়েছে রবিবার। এর পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইকোওয়াস ব্লক।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে দুই জন পশ্চিমা কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এপিকে জানান, নিজারের সামরিক জান্তা যুক্তরাষ্ট্রের এক শীর্ষ কূটনীতিককে জানিয়েছেন যে যদি প্রতিবেশী দেশগুলো তার শাসন পূনর্বহাল করার জন্য কোনো ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে তারা বাজুমকে হত্যা করবে।
ইকোওয়াসের কখন বা কোথায় তাদের বাহিনী মোতায়েন করবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। আর, বাজুমকে হত্যার যে হুমকি দেয়া হয়েছে, এই তথ্য ১৫ সদস্যের ব্লকের সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্তকে কীভাবে প্রভাবিত করবে তাও পরিষ্কার নয়। সংঘাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বাহিনীতে নাইজেরিয়ার নেতৃত্বে ৫ হাজার সেনা সদস্য থাকতে পারে। আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই বাহিনীকে প্রস্তুত করা হতে পারে।
ইকোওয়াসের বৈঠক শেষে প্রতিবেশী দেশ আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট আলাসানে ওউত্তারা জানান, নাইজেরিয়া ও বেনিনের পাশাপাশি তার দেশও এই সামরিক অভিযানে অংশ নেবে।
রাজধানী নিয়ামের বাসিন্দারা শুক্রবার জানান, ইকোওয়াস বাস্তবতা সম্পর্কে অবগত নয় এবং তাদের এখানে হস্তক্ষেপ করা উচিৎ হবে না।
আচিরৌ হারোউনা আলবাসি নামে এক বাসিন্দা বলেন, “এটা আমাদের বিষয়, তাদের নয়। এমন কী তারা এটাও জানেন না যে কেনো নিজারে অভ্যুত্থান হয়েছে।” তিনি বলেন, “বাজুম জনগণের ইচ্ছের প্রতি সম্মান জানাননি।”
শুক্রবার শত শত মানুষ নিয়ামে-তে ফরাসি সামরিক ঘাঁটির দিকে রুশ পতাকা দোলাতে দোলাতে এগিয়ে যায় এবং তারা চিৎকার করে বলতে থাকে, “ফ্রান্স নিপাত যাক।” তাদের অনেকেই তরুণ; এদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। তারা স্লোগান দিচ্ছিলো, “ ফরাসিদের চলে যাওয়া উচিৎ।”
বাজুমের জীবনের ওপর হুমকি আসায়, ইকোওয়াসের সামরিক পদক্ষেপের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসবে কী না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, হয়তো তারা বিরতি নেবেন বা সংশ্লিষ্টদের আলোচনা করতে উদ্বুদ্ধ করবেন। তবে পরিস্থিতি এখনো অনুমানের বাইরে রয়ে গেছে।