অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মাউই-তে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৬৭, আবার দাবানল


হাওয়াইয়ের লাহাইনায় দাবানলের ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে হাঁটছেন এক ব্যক্তি; ১১ আগস্ট ২০২৩।)
হাওয়াইয়ের লাহাইনায় দাবানলের ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে হাঁটছেন এক ব্যক্তি; ১১ আগস্ট ২০২৩।)

পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া গাড়ি, গলে যাওয়া ফুটপাথ , একের পর এক অবরুদ্ধ বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আগুনে পুড়ে যাওয়া টেলিফোনের খুঁটি এবং লিফট দেখে বোঝা যায় এখানে একসময় আবাসিক ভবনগুলো দাঁড়িয়ে ছিলো। কাঁচের বোতল ভরা একটি ট্রাক প্রচণ্ড তাপে এমন আকার নিয়েছে; মনে হয় যেন কোনো পরাবাস্তব আকৃতি।

অ্যান্টনি গার্সিয়া, লাহাইনার আইকনিক বট গাছের নীচে দাঁড়িয়ে ধ্বংসযজ্ঞের কথা বলছিলেন। এক সময় এই জনপ্রিয় বৃক্ষটি এই পৃথিবীতে ছিলো; পুড়ে ছাইয়ের স্তুপ হয়ে আছে। চারপাশটা মৃত প্রাণীতে ভরা। ধোঁয়া আর আগুনের শিখায় মারা গেছে বিড়াল, মুরগি এবং অন্যান্য পাখপাখালি। এ যেন পৃথিবীর বদলে যাওয়া রূপ।

গার্সিয়া এই দাবানলে তার সবকিছু হারিয়েছেন। তিনি বলেন, “ আমি যদি কিছু না করি, আমি পাগল হয়ে যাবো। আমি ঈশ্বরের ওপর আমার বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছি।”

এই সপ্তাহের দাবানলে গার্সিয়া এবং অন্য বাসিন্দারা সর্বশান্ত হন।শুক্রবার তারা তাদের বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যান। আর তখন দাবানলে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৬৭ জনে উন্নীত হয়। এই দাবানল এই সপ্তাহে মাউই-এর একটি অংশ ধ্বংস করেছে। আর এখনো এই দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসছে না।

শুক্রবার রাতে পশ্চিম মাউই-এর কানাপালিতে নতুন করে দাবানল দেখা দিলে আবার মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়। এই এলাকাটি আগে পুড়ে যাওয়ার এলাকার কাছাকাছি অবস্থিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একথা জানিয়েছে মাউই পুলিশ। তবে কত জনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে বিশদ কিছু জানানো হয়নি।

মারাত্মক দাবানল নিয়ন্ত্রণে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে এমন নীতি পর্যালোচনা করার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যান লোপেজ।

এই দাবানল কয়েক দশকের মধ্যে এই রাজ্যের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।

গভর্নর জোশ গ্রিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। মাউই-এর কাউন্টি মেয়র রিচার্ড বাইসেন জুনিয়র বলেছেন, মৃতদের অনুসন্ধানে শব শনাক্তকরণে সক্ষম কুকুর ব্যবহার করা হচ্ছে।

শুষ্ক গ্রীষ্ম কাল এবং হারিকেনের তীব্র বাতাসের কারণে মাউইতে কমপক্ষে তিনটি দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ঝোপ-ঝাড়ে ঢাকা দ্বীপের ওপর দিয়ে এগিয়ে যায়। সব চেয়ে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়ে মঙ্গলবার, লাহাইনায়। নীল সাগর ও সবুজ ঢালের মধ্যে ধূসর ধ্বংসস্তূপের সৃষ্টি করে এই দাবানল। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকরা এই ধ্বংসযজ্ঞ অবলোকন করেন। তারা দেখতে পান ঐতিহাসিক লাহাইনার প্রাণকেন্দ্র এবং মাউই-এর অর্থনৈতিক কেন্দ্রের প্রধান সড়কে অবস্থিত প্রায় প্রতিটি ভবনই এই ধ্বংসযজ্ঞের কবলে পড়েছে ।

XS
SM
MD
LG