যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের মাউই দ্বীপে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় অন্তত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানকার হাজার হাজার বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এই দাবানলে কয়েক শতকের পুরনো লাহাইনা শহরটির অংশবিশেষ ধ্বংস হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে যতগুলো ভয়াবহ দাবানল ঘটেছে, এটি সেগুলোর অন্যতম।
এই দ্বীপকে আকস্মিকভাবে আগুন গ্রাস করে। ব্যস্ত রাস্তায় চলাচলকারী গাড়িগুলোকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। লাহাইনা শহরের অনেক ঐতিহাসিক ভবন পুড়ে গেছে। সেসব ভবনের ধ্বংসস্তুপ থেকে ধোঁয়া উঠছে। ১৭ শতকে নির্মিত ভবনগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল এবং এই শহর ছিল পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য। বুধবার (৯ অগাস্ট) অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা এই দ্বীপের নানা জায়গায় আগুনকে নিয়ন্ত্রণ করতে লড়াই চালিয়েছেন। তবে, আগুনের কারণে অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ও শিশুরা সাগরে ঝাঁপ দিতে বাধ্য হয়।
বুধবার রাতে মাউই কাউন্টির দেওয়া এক বিবৃতি অনুসারে, দাবানলে কমপক্ষে ৩৬ জন মারা গেছে। এতে আরও বলা হয়েছে যে, মৃত্যুর বিষয়ে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন যে, ২৭১টি অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন।
লাহাইনার বাসিন্দা কামুয়েলা কাওয়াকোয়া ও আইউলিয়া ইয়াসো মঙ্গলবার বিকেলে ধোঁয়ায় ভরা আকাশের নিচে পালানোর এক ভয়ঙ্কর বর্ণনা দিয়েছেন। এই দম্পতি ও তাদের ৬ বছর বয়সী ছেলে পানির জন্য দ্রুত সুপারমার্কেটে গিয়ে আবার তাদের বাসস্থানে ফিরে এসেছিলেন। ততক্ষণে তাদের চারপাশের ঝোপগুলোতে আগুন লেগে যাওয়ায় শুধু পোশাক পরিবর্তন ও দৌড়ানোর সময়টুকু পেয়েছিলেন তারা।
পর্যটকদের আগুন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বুধবার প্রায় ১১ হাজার পর্যটক মাউই ছেড়ে চলে গেছেন। বৃহস্পতিবার কমপক্ষে আরও ১৫০০ জন রওনা হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন এই রাজ্যের পরিবহন কর্মকর্তা এড স্নিফেন। বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার লোককে আশ্রয় দেওয়ার জন্য কর্মকর্তারা হনলুলুতে হাওয়াই কনভেনশন সেন্টারকে প্রস্তুত করেছেন।
দক্ষিণে বহুদূরে চলে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ডোরা থেকে আসা প্রবল বাতাসের কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই গ্রীষ্মে বিশ্বজুড়ে চরম আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট ধারাবাহিক বিপর্যয়ের মধ্যে এটি একটি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে।