অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমাবর্ষণের ৭৮তম বার্ষিকী পালন


হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে পারমাণবিক বোমার আঘাতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন দর্শনার্থীরা; ৬ আগস্ট, ২০২৩।
হিরোশিমার পিস মেমোরিয়াল পার্কে পারমাণবিক বোমার আঘাতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন দর্শনার্থীরা; ৬ আগস্ট, ২০২৩।

রবিবার ৭৮ বছর আগে পারমাণবিক বোমা হামলার স্মৃতিকে স্মরণ করেছে হিরোশিমা। এ সময় কর্মকর্তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্রমবর্ধমান সমর্থনের প্রবণতার সমালোচনা করেন। তারা বলেন, এই প্রবণতার সৃষ্টি হয়েছে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে অস্বস্তি ও কোরিয়া উপদ্বীপে বিরাজিত উদ্বেগ থেকে।

দুই মাস আগে, বিশ্বের প্রধান ৭ শিল্পোন্নত দেশের সংগঠন জি-সেভেন-এর শীর্ষ সম্মেলনের আতিথেয়তা করে হিরোশিমা শহর। এ সময় নেতারা শহরটির পিস পার্ক ও বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত যাদুঘর পরিদর্শন করেন। আর দু’মাস পর এই পর্যবেক্ষণ সামনে আসলো।

সে সময় নেতারা এক যৌথ বিবৃতিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার ধারা অব্যাহত রাখার আহবান জানিয়েছিলেন। তবে একইসঙ্গে তারা “প্রতিরক্ষামূলক কারণে, আগ্রাসন প্রতিহত করতে ও সার্বিকভাবে যুদ্ধ ও জোরজবরদস্তি প্রতিরোধে” এসব অস্ত্র রাখার পক্ষে যুক্তি দেন।

স্মরণসভায় হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই তার শান্তিকামী বক্তব্যে বিশ্বনেতাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাখ্যান করেন।তিনি বলেন, “কিছু নীতিনির্ধারক পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের পক্ষে কথা বলছেন; বিশ্বজুড়ে নেতাদের এখন এ বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া উচিৎ যে পারমাণবিক অস্ত্র যুদ্ধ প্রতিহত করে, এই মতবাদ এক ধরনের নির্বুদ্ধিতা। নেতাদের শিগগির পূর্ণাঙ্গ পদক্ষেপ নিতে হবে; বিপজ্জনক বর্তমান থেকে আমাদের আদর্শ পৃথিবীর দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিতে হবে।”

হিরোশিমার গভর্নর হিদেহিকো ইউজাই সারা বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের মাধ্যমে যুদ্ধ প্রতিহত করার ক্রমবর্ধমান ধারার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন; এমনকি, এ বিষয়ে জাপানের অবস্থান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি এবং উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন হিরোশিমার গভর্নর।

ইউজাই বলেন, “যারা বিশ্বাস করেন, পারমাণবিক অস্ত্র ছাড়া শান্তি বজায় রাখা সম্ভব নয়, তারা শুধু পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার অগ্রগতিকে বিলম্বিত করছেন।”

১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র হিরোশিমায় একটি পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে। এর ফলে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হন ও শহরটি ধ্বংস হয়ে যায়। এর ৩ দিন পর, নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত অপর পারমাণবিক বোমার আঘাতে আরো ৭০ হাজার মানুষ নিহত হন। ১৫ আগস্ট জাপানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও এশিয়ায় জাপানের প্রায় ৫০ বছরের আগ্রাসনের সমাপ্তি ঘটে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা রবিবারের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা ও সংঘাতের কারণে পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন বিশ্ব গড়ার পথ এখন আগের চেয়ে অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।“তবে এই পরিস্থিতিই এই উদ্যোগে গতি ফিরিয়ে আনার বিষয়টিকে আরো গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে”; উল্লেখ করেনে কিশিদা।

XS
SM
MD
LG