শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে সমালোচনা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং তার পূর্বসূরি ডনাল্ড ট্রাম্পের সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সাবেক সরকারের নিরাপত্তা এবং “টিকে থাকার জন্য গুরুতর পরিণতি" বয়ে আনে।
রিপোর্টের ফলাফলে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ওপরও নেতিবাচক মন্তব্য উঠে আসে; তবে, তার নাম উল্লেখ করা হয়নি। তারা, ২০২১ সালের আগস্টে তালিবান কাবুলের দিকে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে, পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের সংকট-ব্যবস্থাপনা টাস্ক ফোর্স সম্প্রসারণে ব্যর্থতা এবং “এই সঙ্কটের সকল উপাদান তদারকি করার জন্য একজন সিনিয়র কূটনীতিকের অভাব" কে প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এই পর্যালোচনা এবং পেন্টাগনের একটি অনুরূপ সমীক্ষা, গত এপ্রিলে হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অবদান রাখে। তবে পররাষ্ট্র দপ্তরের পর্যালোচনার সমালোচনামূলক অংশ হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়ের আফগান প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।
তিনি শুক্রবার সংবাদদাতাদের বলেন, "তাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিলো; কারণ যুক্তরাষ্ট্র “সমাপ্তি পরিলক্ষিত হচ্ছে না এমন একটি যুদ্ধে শত শত কোটি ডলার খরচ করেছে। তাই, তিনি এই অপচয় বন্ধ করতে চেয়েছিলেন এবং যুদ্ধ শেষ করতে চেয়েছিলেন।"
ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিভেন চেউং একটি ইমেলে লিখেছেন; "আফগানিস্তান থেকে বিপর্যয়কর প্রত্যাহারের জন্য শুধুমাত্র একজনই দায়ী; জো বাইডেন।"
হোয়াইট হাউজের প্রতিবেদনে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশৃঙ্খল সেনা প্রত্যাহারের জন্য তালিবানের সাথে ২০২০ সালের চুক্তির পর, ট্রাম্পের পরিকল্পনার অভাব এবং সেনা হ্রাসের পদক্ষেপকে সুনির্দিষ্টভাবে দায়ী করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের পদক্ষেপ পরবর্তী (আফটার অ্যাকশন) ৮৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ২৪ পৃষ্ঠা প্রকাশ করেছে। বাকী অংশ গোপনীয় হিসেবে অপ্রকাশিত রাখা হয়। তালিবানের বিরুদ্ধে কাবুল সরকারকে ২০ বছর ধরে সমর্থন দেয়ার পর যুক্তরাষ্ট নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক বাহিনীকে প্রত্যাহার করা হয়।তাদের প্রত্যাহার অভিযান পরিচালনার বিষয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র দপ্তর।
২০২১ সালের ৩০ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সেনাদল প্রত্যাহার করার আগে প্রায় ৬,০০০ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক-সহ অন্তত ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষকে কাবুল থেকে বিমানে করে সরিয়ে নেয়া হয়। তখন, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর, কাবুলের উপর তালিবান তাদের দখল সুসংহত করে।
পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, "আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক মিশন শেষ করার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন উভয়ের সিদ্ধান্তই আফগান সরকারের টিকে থাকা এবং তাদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর পরিণতি বয়ে আনে।"
পররাষ্ট্র দপ্তরের পর্যালোচনা বলেছে, ডিপার্টমেন্টের পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হয়েছিলো কারণ এটা স্পষ্ট ছিলো না যে, কোন সিনিয়র কর্মকর্তা এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা গ্রহণ "বাধাগ্রস্ত হয়েছিলো।" কারণ, বাইডেন প্রশাসন এমন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছিলো না, যা কাবুল সরকারের ওপর আস্থা হারানোর ইঙ্গিত দেয়।