যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার পাকিস্তানকে তার ভূখণ্ড যাতে উগ্রবাদী হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার না করা হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজ এক যৌথ বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউজ বলেছে, "তারা আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ এবং সন্ত্রাসী প্রক্সি ব্যবহার করার তীব্র নিন্দা করেছে। এছাড়া, পাকিস্তানকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে, যাতে দেশটির নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো অঞ্চলকে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার করা না হয়।"
পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক কয়েক বছর ধরেই তিক্ত। ১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান হওয়ার পর থেকে, ভারত ও পাকিস্তান তিনটি যুদ্ধ করেছে, যার মধ্যে দুটি কাশ্মীরের মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ হিমালয় অঞ্চল নিয়ে, ওই অঞ্চলকে তারা উভয়েই নিজেদের বলে দাবি করে, কিন্তু আংশিকভাবে শাসন করে।
ভারত বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানকে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের সাহায্য করার অভিযোগ করে আসছে, যারা ১৯৮০’র দশকের শেষ থেকে কাশ্মীরের তার অংশে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে লড়াই করে চলেছে। তবে, পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং বলে যে তারা কাশ্মীরিদের শুধুমাত্র আত্মনিয়ন্ত্রণ চাওয়ার প্রতি কূটনৈতিক ও নৈতিক সমর্থন প্রদান করে।
২০১৯ সালে নয়াদিল্লি ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে দেওয়া বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে, এটিকে দুটি ফেডারেল নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে বিভক্ত করে। পাকিস্তান এই পদক্ষেপকে বেআইনি বলে অভিহিত করে, আবারও তাদের বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দেবার দাবী জানিয়ে আসছে।
ভারতের ওই সিদ্ধান্তের ফলে দুই দেশ তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ককে নামিয়ে আনে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি আল-কায়েদা, আইএসআইএস/দায়েশ, লস্কর ই-তৈয়্যিবা (এলইটি), জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেএম) এবং হিজবুল-মুজাহিদিন সহ জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত সমস্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।"
ইসলামি জঙ্গি লস্কর-ই-তৈয়বা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা, হাফিজ সাইদ কে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলার জন্য দায়ী করা হয়। ওই হামলায়, ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে শুরু করে তিন দিনে ১৬০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "তারা [বাইডেন এবং মোদি] ২৬/১১ মুম্বাই এবং পাঠানকোট হামলার অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন।"
২০১৬ সালে ভারতের পাঠানকোট বিমান ঘাঁটিতে চালানো হামলায়, সাতজন ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়।