দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায়, ৪৩ নেতাকর্মীকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। তাদের মধ্যে রয়েছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন। বাকীদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ কাউন্সিলর ও চারজন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী।
সোমবার (৫ জুন) দিবাগত রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সিলেট মহানগর শাখার কাছে বহিষ্কারের আদেশ পৌ*ছায়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন। তিনি জানান, সিলেট সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ৪৩ জনকে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
নাসিম হোসাইন বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেয়ায়, ৪১ নেতাকর্মীকে প্রথমে শোকজ করা হয়। তারা শোকজের কোনো জবাব দেননি। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে আরো দু’জনের নাম পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া ৪৩ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।”
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, “সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আপনি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিদ্বতা করছেন। দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করায়, আপনাকে দেয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক নয়। গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে আজীবন বহিষ্কারর করা হলো।”
সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে যারা বহিস্কৃত হয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন; সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ তৌফিকুল হাদি, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম, মহানগর মহিলা দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকশানা বেগম শাহনাজ, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গোলাম মোস্তফা কামাল, গউছ উদ্দিন পাখি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সালমান চৌধুরী শাম্মী।
সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে বহিস্কৃত হয়েছেন; জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী, মহানগর মহিলা দলের সহসভাপতি রুহেনা বেগম মুক্তা, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সিলেট ইউনিটের সদস্য অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন ও কামরুন নাহার তান্নি।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাচ্ছে না। সিলেটে যারা দলের সিদ্ধান্ত আমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর, চারবার নির্বাচন হয়েছে। ২০০৩ সালে প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হন বদর উদ্দিন কামরান। ২০০৮ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনে তিনি কারাগারে থেকে মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৩ সাল থেকে মেয়র পদে আছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। এবার তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনে প্রার্থী হননি। আগামী ২১ জুন পঞ্চমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।