চীন মঙ্গলবার তাদের তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে তিনজন নভোচারী পাঠিয়েছে।প্রথমবারের মতো একজন বেসামরিক বিজ্ঞানীকে মহাকাশে পাঠালো বেইজিং। এই দশকের শেষের দিকে চাঁদে একটি মানুষবাহী মিশন পাঠানোর পরিকল্পনা করছে চীন।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে, সামরিক বাহিনী পরিচালিত মহাকাশ কর্মসূচিতে কয়েকশো কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির সাংবাদিক ও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩১ মিনিটে উত্তর-পশ্চিম চীনের জিউকুয়ান উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে, লং মার্চ টু-এফ রকেটের মাধ্যমে উড্ডয়ন শুরু করেন শেনঝৌ-১৬ মিশনের মহাকাশচারীরা।
এই মিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কমান্ডার জিং হাইপেং। এটা তার চতুর্থ মহাকাশ যাত্রা। তার সঙ্গে রয়েছেন, প্রকৌশলী ঝু ইয়াংঝু এবং মহাকাশে প্রথম চীনা বেসামরিক নাগরিক বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গুই হাইচাও।
তিয়ানগং চীনের মহাকাশ কর্মসূচির মুকুট-রত্ন। এই কেন্দ্র, মঙ্গল ও চাঁদে রোবোটিক রোভার অবতরণের সাক্ষী। এই কেন্দ্র, চীনকে কক্ষপথে মানুষ বহন করা তৃতীয় দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। বেইজিং জানিয়েছে, তিয়ানগং স্পেস স্টেশনের “প্রয়োগ ও উন্নয়ন” পর্যায়ে প্রবেশের পর এটাই প্রথম এরকম মিশন।
কক্ষপথে পৌঁছানোর পর, শেনঝৌ -১৬, স্পেস স্টেশনের তিয়ানহে কোর মডিউলে যুক্ত হবে। পরে, ক্রু সদস্যরা আগের মানুষবাহী শেনঝৌ -১৫ ফ্লাইটের তিন সহকর্মীর সাথে দেখা করবেন। এই তিন জন, ছয় মাস ধরে স্পেস স্টেশনে রয়েছেন এবং কয়েক দিন পর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।
সিএমএসএ'র মুখপাত্র লিন জিকিয়াং সোমবার সংবাদদাতাদের বলেন ,মিশনটি " কক্ষপথে বড় আকারের... নভেল কোয়ান্টাম সংশ্লিষ্ট বিষয়, হাই-প্রেসিশন ফ্রিকোয়েন্সি সিস্টেম, সাধারণ আপেক্ষিকতা যাচাইকরণ এবং জীবনের উৎস নিয়ে গবেষণায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে।“
শেনঝৌ-১৬ এর আগমনের প্রস্তুতি হিসেবে এই মাসে স্পেস স্টেশনে পানীয় জল, পোশাক, খাদ্য এবং চালক যন্ত্র (প্রোপেল্যান্ট) পাঠানো হয়।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর শাসনামলে চীনের 'মহাকাশ স্বপ্ন' বাস্তবায়নের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।
চীন একটি চন্দ্র ঘাঁটি নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। সিএমএসএ মুখপাত্র লিন সোমবার আবার নিশ্চিত করেন, ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে একটি মানুষবাহী মিশন পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে বেইজিং-এর।তিনি বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে চীনের প্রথম মানুষবাহী উপগ্রহ অবতরণ এবং চাঁদের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো আমাদের লক্ষ্য।”