গত ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে, কোভিড-১৯ মহামারীর সময়, ধনীদের আয় ৬৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে তারা আরো ধনী হয়েছেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএস-এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত ১৭-১৮ মে রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালম্যানাকে এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ মধ্যম আয়ের মানুষের আয় বেড়েছে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ; নিম্ন মধ্যম আয়ের মানুষের আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ; দরিদ্রদের আয় বেড়েছে ১০ দশমিক ২ শতাংশ এবং অতি দরিদ্রদের আয় বেড়েছে ১৬ শতাংশ।
গবেষণা প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায়, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, “উচ্চ ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে আয় বৈষম্য সত্ত্বেও, সরকারি সেবার খরচ বাড়েনি।” সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য খাতের সরকারি সেবা পাচ্ছে সব গোষ্ঠী।”
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে ড. মশিউর বলেন, “অ্যাকাডেমিক পাঠ ও নিয়োগকর্তার চাহিদা মিলছে না বলে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। তাই শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।”
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারীর সময়, গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির সরকারি নীতির ফলে, গ্রামীণ বাংলাদেশে আয় বৈষম্য সংকুচিত হচ্ছে।” তিনি বলেন, “গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, উন্নত সড়ক যোগাযোগ এবং অন্যান্য সুবিধা পাচ্ছেন।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, “ব্যাংকগুলো প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে প্রত্যয়পত্র বা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলছে। ওভার ও আন্ডার-ইনভয়েসিং অথবা বাণিজ্যভিত্তিক অর্থ চোরাচালান রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব কিছু খতিয়ে দেখছে।”
তিনি আরো বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রেরণে উৎসাহ দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে, যাতে যেকোনো দেশের প্রবাসীরা তাদের মোবাইল ফোন থেকে বৈধ মাধ্যমে সহজেই রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন।” কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর জানান, গত অর্থবছরে বেসরকারি খাতের বৈদেশিক ঋণ ছিলো ১৭০০ কোটি ডলার, যা এখন দাঁড়িয়েছে ১৪০০ কোটি ডলারে এবং এসব ঋণ পরিশোধের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বেড়েছে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুস সাত্তার মণ্ডল, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব আলী, আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন।