আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবান প্রশাসনের প্রধান কূটনীতিক সোমবার জোর দিয়ে বলেছেন, তার সরকার মেয়েদের শিক্ষাকে "স্থায়ীভাবে" নিষিদ্ধ করেনি, যখন দেশটির নারীরা সারা দেশে বিভিন্ন সেক্টরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
তালিবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে এক সেমিনারে দেয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন। চার দিনের এক সরকারি সফরে প্রতিবেশী দেশটিতে যান তিনি। সেখানে তিনি চীন ও পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় সংলাপেও যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, "বর্তমানে আফগানিস্তানে প্রায় ১ কোটি শিক্ষার্থী প্রাথমিক-স্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয়-স্তরের শিক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ৯০ লাখ সব ধরনের শিক্ষার সুযোগ পায়, তাদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত মেয়েরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া, প্রায় ৩ লাখ শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ান, যার মধ্যে ৯২,০০০ মহিলা শিক্ষক।"
আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে নারীদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আন্তর্জাতিক দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে তালিবান।
সোমবার তার বক্তব্যে মুত্তাকি জোর দিয়ে বলেন, হাজার হাজার মহিলা ডাক্তার এবং নার্স স্বাস্থ্য খাতে কাজ করছেন। মেয়ে এবং নারীরা মাদ্রাসায় (ইসলামিক সেমিনারে) যোগদান করছে, এমনকি সেখানে শিক্ষকতাও করছে।
মুত্তাকি বলেন, "আমরা কখনই বলিনি যে আফগানিস্তানে নারী শিক্ষা অনৈসলামিক বা স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ। আদেশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নারী শিক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।"
তিনি গত বছর তালিবান প্রধান, হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা কর্তৃক জারি করা আদেশের উল্লেখ করেছেন। ওই আদেশে, অল্পবয়সী মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণির পর স্কুলে যেতে নিষেধ করা হয় এবং পরবর্তীতে নারী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে।
বিশদ বিবরণ না দিয়ে মুত্তাকি বলেন, "আমরা এই ইস্যুতে অনেকাংশে অগ্রগতি অর্জন করেছি, এবং আফগানিস্তানের সরকার এই ইস্যুটি সম্পর্কে অবশিষ্ট সমস্যাগুলি সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমাধান করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।"
জাতিসংঘের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা মুত্তাকি, শনিবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে যোগদানের জন্য ইসলামাবাদ সফরের ছাড়পত্র পান।