যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যের মিনিয়াপোলিসের একাধিক মসজিদে চালানো সাম্প্রতিক হামলায় সোমালি আমেরিকান ইমাম, মসজিদ প্রশাসক এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মিনিয়াপলিস পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৩ এপ্রিল মসজিদ ওমর ইসলামিক সেন্টার এবং পরদিন ২৪ এপ্রিল আল-রাহমা মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মসজিদ দুটি বেশ কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত।
আল-রাহমা মসজিদের তৃতীয় তলায় যখন কেউ আগুন ধরিয়ে দেয়, কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস মিনেসোটার নির্বাহী পরিচালক জয়লানি হুসেন সে সময় ওই মসজিদের ভিতরেই অবস্থান করছিলেন।
হুসেন সম্প্রতি ভিওএ-কে বলেছেন, “আমি তখন মসজিদের ভিতরে ছিলাম, ইমামের সাথে জামাতের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করছিলাম, হঠাৎ শুনতে পেলাম কেউ একজন চিৎকার করছে, 'আগুন লেগেছে, আগুন লেগেছে। আল্লাহকে ধন্যবাদ যে, কেউ আহত হয়নি।"
তিনি আরও জানান, মসজিদের ডে কেয়ারে থাকা ৪০ জনের বেশি শিশুকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
হুসেন আমেরিকান-মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ঘৃণামূলক হামলার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এই প্রথম এমন একটা হামলার ঘটনা তিনি নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করেছেন।
হুসেন বলেন, "আমরা এতদিন নানারকম হুমকিমূলক কল এবং বার্তা পেয়ে আসছিলাম, কিন্তু এই প্রথমবার আমি কার্যত এটি প্রত্যক্ষ করলাম।"
২৪শে এপ্রিল মসজিদ আল-রাহমাতে অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িত সন্দেহে, ২৯শে এপ্রিল, জ্যাকি রহম লিটল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি অ্যান্ডি লুগার গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ২৩শে এপ্রিল মসজিদ ওমর ইসলামিক সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডের পাশাপাশি, জানুয়ারী-তে যুক্তরাষ্ট্র হাউজের প্রতিনিধি ইলহান ওমরের মিনিয়াপলিস অফিস ভাংচুরের ঘটনায়ও সন্দেহভাজন হিসাবে লিটলকে জেরা করছে কর্তৃপক্ষ।
ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশন অফ নর্থ আমেরিকা (আইএএনএ) আমেরিকা জুড়ে ৪০টিরও বেশি মসজিদ পরিচালনা করে। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইমাম ইউসুফ আবদুল্লে বলেছেন, তিনি আশঙ্কা করছেন, এই ধরনের অগ্নিসংযোগের ধারাবাহিকতা আমেরিকার মুসলিম জনগোষ্ঠীর জীবনকে বিপন্ন করতে পারে।
মসজিদে হামলার পরপরই, মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং টুইটারে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর সমর্থন জানিয়েছেন।
এই প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি থেকে নেয়া হয়েছে।