যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে দ্রুত হারে হত্যাযজ্ঞের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হতে পারে। এ বছর, এখন পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একটি করে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলা হচ্ছে।যুক্তরাষ্ট্রে ১১১ দিনে ১৭টি হত্যাযজ্ঞে নিহত হয়েছেন ৮৮ জন। প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই হত্যাকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছেন। সর্বশেষ ২০০৯ সালে একই সময়ে এতগুলো মর্মান্তিক ঘটনার নজির দেখা গেছে।
একটি নিরুত্তাপ সোমবারে টেনেসির গ্রেড স্কুলের শিশুদের গুলি করে হত্যা করা হয়।ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলে কর্মক্ষেত্রে মনোমালিন্যের জের ধরে খামার-কর্মীরা বুলেটের আঘাতে জর্জরিত হয়েছেন।ক্যালিফোর্নিয়ায় লস এঞ্জেলেস-এর বাইরে, একটি বলরুমে নৃত্যরতদের চান্দ্র নববর্ষ উদযাপনের সময় গুলির আঘাতে ছিন্নভিন্ন করা হয়।
গত সপ্তাহেই আলাবামার ডেইডভিলে একটি পার্টিতে যোগ দেয়া ৪ ব্যক্তি নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরো ৩২ জন। এক কিশোরীর ১৬ বছরে পা দেয়া উপলক্ষে আয়োজিত সুইট সিক্সটিন পার্টিতে গুলির বন্যা বইলে, এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। মেইন অঙ্গরাজ্যের বোডউইন-এ সদ্য কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া এক ব্যক্তি তার পিতা-মাতা সহ ৪ জনকে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর তিনি একটি আন্তরাজ্য মহাসড়কে মোটরচালকদের ওপর গুলি চালান।
এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানার জন্য ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোয়েসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এপি। তবে, সাড়া দেয়নি তারা।
২০২৩ সালের গণহত্যার এই সংখ্যা; এ ধরনের পরিসংখ্যান সংগ্রহ শুরুর পর থেকে, কোনো একটি পূর্ণ বছরের সংখ্যার চেয়ে বেশি। এই তথ্যপঞ্জিতে অন্তর্ভুক্ত বছরগুলোর হিসাব মতে, যুক্তরাষ্ট্রে আধাবছরে ৩০ টি বা তার চেয়েও কম হত্যাযজ্ঞ ঘটেছে। অথচ এ বছরের ৩ ভাগের ১ ভাগ সময় পার না হতেই ১৭টি ঘটনা ঘটেছে, যা উল্লেখ করার মতো।
তা সত্ত্বেও, কিছু হাতেগোনা ব্যতিক্রম ছাড়া, রাজ্য বা ফেডারেল পর্যায়ে কোনো ধরনের নীতিমালা পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে না।
ফেডারেল পর্যায়ে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বছর আগ্নেয়াস্ত্র সহিংসতা সংক্রান্ত একটি মাইলফলক বিলে সাক্ষর করেন। এই বিল, তরুণ বন্দুক ক্রেতাদের অতীত-তথ্য (ব্যাকগ্রাউন্ড) যাচাই, বাড়িতে সহিংসতার অপরাধে অভিযুক্তদের থেকে আগ্নেয়াস্ত্র প্রত্যাহার করা এবং রাজ্যগুলোকে লাল পতাকা আইন ব্যবহারের প্রক্রিয়া সহজ করেছে। রেড ফ্ল্যাগ (লাল পতাকা) আইনের আওতায়, কোন ব্যক্তি সহিংস আচরণ করতে পারে বলে মনে হলে, পুলিশ তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র প্রত্যাহার করতে আদালতকে বলতে পারে।
হত্যাযজ্ঞগুলো পত্রিকার শিরোনাম হলেও, ৩৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষের দেশে এই সংখ্যা পরিসংখ্যান হিসেবে খুবই নগন্য। আর, হাতেগোনা কিছু মানুষ এমন ঘটনা ঘটান বলে মনে করা হয়। এ বছরও একই ভাবনা অব্যাহত থাকবে কী না, তা অনুমান করা কঠিন।
তার পরও, বিশেষজ্ঞ এবং অধিকার কর্মীরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে আগ্নেয়াস্ত্রের বিস্তারের নিন্দা করেছেন। উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ মহামারীর প্রথম বছর, রেকর্ড সংখ্যায় আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রি হয়েছে।