অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মিয়ানমারে বেসামরিক নাগরিকদের উপর বোমাবর্ষণ: গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ


গত ১১ এপ্রিল ভোরে সাগাইং অঞ্চলের কানবালু শহরের পাজিগি গ্রামের বাইরে একটি ছোট স্থানীয় এনইউজি প্রশাসনিক কার্যালয় উদ্বোধনের স্মরণে প্রায় ৩০০ জন লোক জড়ো হয়েছিল। ঠিক সেসময়ই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান ওই স্থানে বোমাবর্ষণ শুরু করে। (ফাইল ছবি)
গত ১১ এপ্রিল ভোরে সাগাইং অঞ্চলের কানবালু শহরের পাজিগি গ্রামের বাইরে একটি ছোট স্থানীয় এনইউজি প্রশাসনিক কার্যালয় উদ্বোধনের স্মরণে প্রায় ৩০০ জন লোক জড়ো হয়েছিল। ঠিক সেসময়ই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান ওই স্থানে বোমাবর্ষণ শুরু করে। (ফাইল ছবি)

১০ দিন আগে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলের একটি গ্রামে বোমা হামলায় ৩৮ জন শিশুসহ প্রায় ২০০ জন বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার পর, জনসাধারণের জন্য বিমান প্রতিরক্ষা সতর্কতা ব্যবস্থা স্থাপনে কাজ করছে নির্বাসিত মিয়ানমার সরকার। তাদের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এই সপ্তাহে ভিওএ-কে এই কথা জানিয়েছেন।

জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রী অং মিও মিন ভিওএ-কে বলেছেন, "বেসামরিক নাগরিকদের উপর মিয়ানমার জান্তার প্রাণঘাতী বিমান হামলা বন্ধ করার উপায় খুঁজে বের করা আমাদের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য।"

অং মিও মিন বলেন, "আমরা জনসাধারণের জন্য বিমান প্রতিরক্ষা সতর্কতা ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য কাজ করে যাবো।"

তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের এর গুরুত্ব জানাতে হবে। আমাদের অবশ্যই একটি 'এয়ার সিগন্যাল সিস্টেম' দরকার, যা মানুষকে সতর্ক করতে পারে।"

প্রত্যক্ষদর্শীরা ভিওএ-কে জানিয়েছে, গত ১১ এপ্রিল ভোরে সাগাইং অঞ্চলের কানবালু শহরের পাজিগি গ্রামের বাইরে একটি ছোট স্থানীয় এনইউজি প্রশাসনিক কার্যালয় উদ্বোধনের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০ জন লোক জড়ো হয়েছিল। ঠিক সেসময়ই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান ওই স্থানে বোমাবর্ষণ করে।

ওই গ্রামে দুই শতাধিক বাড়ি ছিল। গ্রামবাসীরা, প্রধানত দরিদ্র কৃষক, এছাড়াও কাছাকাছি নদী খুঁড়ে স্বর্ণ খুঁজে বের করে তা বিক্রি করেও অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে।

হামলার তিন দিন পর স্থানীয় উদ্ধারকারী গোষ্ঠীর একজন বালা গি ভিওএ-কে বলেছেন, "১১ এপ্রিল পাজিগি গ্রামে সামরিক জান্তা বোমা হামলার পর ২৪ জন নারী ও ৩৮ জন শিশুসহ অন্তত ১৭০ জন নিহত হয়।" তবে, ভিওএ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।

বালা গিবলেন, এছাড়াও, আরও ৩০ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর, এঁদের মধ্যে একজন গর্ভবতী মহিলা এবং ৮ বছর বয়সী একটি শিশুও রয়েছে। যারা মারা গেছে তাদের মধ্যে ১৭১ জনের মৃতদেহ দাহ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কানবালু শহরে এটিই ছিল প্রথম বিমান হামলা। তিনি বলেন, যেহেতু এলাকায় আগে কখনো কোনো হামলা হয়নি, তাই পাজিগি গ্রামবাসীরা বোমা হামলার ঝুঁকিতে আছে বলে মনে করেননি।

জান্তার মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তবে মারাত্মক পরিণতির জন্য বিরোধী বাহিনীকেই তিনি দায়ী

জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা সরকারগুলি, সেইসাথে সাতটি শীর্ষস্থানীয় শিল্পোন্নত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা, বেসামরিক নাগরিকদের উপর এই সর্বসাম্প্রতিক হামলার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিমান হামলা চালানোর জন্য তাঁরা মিয়ানমারের শাসক জান্তার নিন্দা করেছেন এবং দায়ীদের জবাবদিহিতার দাবি জানিয়েছেন।

XS
SM
MD
LG