অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত ৩৩ জন


কাদুনা প্রদেশ,নাইজেরিয়া
কাদুনা প্রদেশ,নাইজেরিয়া

নাইজেরিয়ার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পশ্চিম কাদুনা প্রদেশে শনিবার রাতে চালানো বন্দুকধারীদের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এ সময় হামলাকরীরা অন্তত ৪০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাঙ্গোন কাতাফ জেলায় রাঞ্জি গ্রামের বাসিন্দারা যখন ঘুমোচ্ছিলেন তখন সশস্ত্র একদল লোক হামলা চালায় এবং গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। নিরাপত্তা বাহিনীর হস্তক্ষেপের আগে তারা গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেয়।

জেলা-প্রধান ফ্রান্সিস সানি বলেন, নিহতদের সমাধিস্থ করা হয়েছে এবং জীবিতদের চিকিৎসা চলছে।

এখনো কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে, এলাকাবাসী জানিয়েছে, এ ঘটনার জন্য দায়ী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো স্থানীয়ভাবে ডাকাত দল হিসেবে পরিচিত। তিন দিন আগে একই ধরণের হামলার জন্য ডাকাতদেরই দায়ী করা হয়। সেই হামলায় পাশের এক গ্রামে আট জনকে হত্যা করা হয়।

কাদুনা প্রদেশের গভর্নর নাসির আল-রুফাই এই হামলাকে অ-গ্রহণযোগ্য ও অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছেন।

প্রদেশ পুলিশের মুখপাত্র মহম্মদ জালিগ ভিওএ-কে সোমবার বলেন, কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে কিন্তু, ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, নিরাপত্তা বিশ্লেষক চিডি ওমেজে বলেন, বারবার হামলার ঘটনা দেখিয়ে দিচ্ছে যে কর্তৃপক্ষ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।

তিনি আরো বলেন, “ডাকাতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশ প্রকৃত পক্ষে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারেনি। পুলিশের ক্ষমতার অভাব রয়েছে। বস্তুত, এই স্তরের অপরাধকে রুখতে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব রয়েছে তাদের। এটা দুঃখের বিষয়। এটা স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে যে, ডাকাতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা জয়ী হইনি।''

কাদুনা প্রদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।

ডাকাতি, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ ও গোষ্ঠী-সংঘাত হলো এমন কয়েকটি নিরাপত্তা-সমস্যা, যেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে নাইজেরীয় কর্তৃপক্ষ বহু বছর ধরে লড়াই করছে।

কাদুনায় কয়েক দশক ধরে চলা গোষ্ঠীদাঙ্গায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। এমন পরিস্থিতির জন্য বাসিন্দারা প্রায়শই প্রদেশ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাকৃত অবহেলাকে দায়ী করেন।

গত মাসে, কাদুনায় অন্য একটি ঘটনায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়। এর পর হামলা বন্ধ করতে অধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নাইজেরীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায়।

নাইজেরিয়া একই সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইসলামি জঙ্গি বিদ্রোহের বিরুদ্ধেও লড়াই করছে। গত ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে এমন সহিংস পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

নতুন নেতা নির্বাচন করতে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে নাইজেরিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাদুনার বিদায়ী গভর্নর আল-রুফাই সোমবার উত্তরসূরির সঙ্গে আলোচনায় বসেন।

অনেকের আশা, নিরাপত্তাহীনতার সমাধান করাই হবে নতুন প্রশাসনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

XS
SM
MD
LG