উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ সোমবার নিশ্চিত করেছে যে, তারা ইসলাম ধর্মের অবমাননার অভিযোগে একজন চীনা প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করেছে। এই প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে রাতভর চলা বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভের অবসান হয়। বিক্ষোভকারীরা এই বিদেশীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছিলো।
আটক ব্যক্তির নাম মি. তিয়ান বলে শনাক্ত করেছে পুলিশ। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার উত্তরে, চীনা প্রতিষ্ঠান গেঝুবা গ্রুপ কোম্পানি দাসু জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করছে। মি. তিয়ান এই প্রতিষ্ঠানের ভারী যানবাহন বিভাগের প্রধান।
শনিবার বিকেলে গাড়িচালকরা কাজের স্থানে একসঙ্গে নামাজ পড়ার সময় চীনা সুপারভাইজার তাদের কাজ করার জন্য আহবান জানালে সমস্যার সূত্রপাত হয়।অভিযোগ, চীনা সুপারভাইজার তাদের নামাজ ছেড়ে কাজ করতে বলেছেন।
পুলিশ বলেছে, কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, স্থানীয় কর্মীদেরকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। এর পর, রবিবার সন্ধ্যায় কোহিস্তান জেলাজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।হাজার হাজার বিক্ষোভকারী পাকিস্তানের সাথে চীনের সংযোগকারী প্রধান মহাসড়ক অবরোধ করে।কোহিস্তানেই নির্মাণ করা হচ্ছে দাসু জলবিদ্যুৎকেন্দ্র।
ধর্ম অবমাননা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্তদের প্রায়শই আক্রমণ করা হয় এবং কখনো কখনো তারা গণপিটুনির শিকার হন। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, ধর্ম অবমাননার অভিযোগই, উত্তেজিত জনতার হামলা এবং অভিযুক্তকে হত্যার জন্য যথেষ্ট।
শ্রীলঙ্কার একজন ফ্যাক্টরি ম্যানেজারকে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবের মধ্যাঞ্চলে সহকর্মীরা পিটিয়ে হত্যা করেছিলো। তার বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিলো। পরে, একটি আদালত ঐ বিদেশীকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন তার ঘনিষ্ট মিত্র পাকিন্তানে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। বেইজিং তার গ্লোবাল বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায়, পাকিস্তানে সড়ক, যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, বন্দর এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে।