মায়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের দুই বছর পরেও অল্প কিছু তরুণ ঐ অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করে আসছে। তবে বিক্ষোভকারীদের ওপর সামরিক দমন অভিযান, কঠোর নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে আকস্মিকভাবেই এখন তুলনামূলকভাবে অল্প সংখ্যক মানুষকে বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা যায়। বিক্ষোভগুলো প্রধানত শহরাঞ্চলে হয়ে থাকে।
ইয়াঙ্গুন এবং মান্দালয়ে মূলত বিক্ষোভগুলো হয়ে থাকে। খুব কমসময়ের জন্য তরুণরা একটি ছোট দলে জড়ো হয়ে স্লোগান দেয় এবং স্লোগান লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়ে সেখান থেকে সরে পড়ে।
অল বার্মা ফেডারেশন অব স্টুডেন্ট ইউনিয়নের (এবিএফএসইউ) অধীনে বেসিক এডুকেশন স্টুডেন্টস ইউনিয়নের (এবিএফএসইউ) সভাপতি, নিরাপত্তাজনিত কারণে গণমাধ্যমকে সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় "মলি" নামটি ব্যবহার করেন। তিনি বলেছেন যে মিয়ানমারের জনগণকে বর্তমান ক্ষমতাসীন জান্তার বিরুদ্ধে আরও সচেতন হতে হবে।
তিনি ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন,“হঠাৎ করে লোকজন জড়ো হলে শহুরে এলাকার মানুষের মাঝে উদ্বেগ দেখা দেয়। যদিও দীর্ঘকাল ধরে বিপ্লব চলছে তদুপুরি মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাচ্ছে। তাদের রাজনৈতিক সচেতনতার পাশাপাশি সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য জেগে উঠা দরকার ।”
অভ্যুত্থানের পর থেকে রাতের বেলা দমন অভিযান, অবৈধ ভাবে গ্রেপ্তার করা এবং রাস্তায় ধাওয়া বা মারধর করা সত্ত্বেও তরুণরাই শাসকগোষ্ঠীর পতনের চেষ্টায় সবচেয়ে বেশি সোচ্চার।
সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সবচাইতে বড়দল হচ্ছে ছাত্র ইউনিয়ন ফেডারেশন এবং সাধারণ ধর্মঘট কমিটি। তারা ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেছে যে ফ্ল্যাশ মব অর্থাৎ যারা হঠাৎ করে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে তাদের বেশিরভাগই ১৮ বছরের কম বয়সী হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রী। যখন অন্যান্য শিক্ষার্থীরা সামরিক সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলে ফিরে যায়, তখন ঐ দুটি সংগঠনের কিছু সদস্য সশস্ত্র পথ বেছে নেয় এবং তারা সক্রিয়ভাবে গেরিলা আক্রমণে অংশ নিয়েছে।
মলি এবং তার ভাই নাই মিন থু ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের ঠিক পরে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন। ২৫শে ফেব্রুয়ারি নাই মিন যে বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন সেখানে সামরিক বাহিনী অভিযান চালালে তিনি প্রাণ হারান।
মলি বলেছিলেন, “আমার ভাই মারা যাওয়ার পরে আমি আমার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিপ্লবে আরও কঠোর লড়াই করে চাচ্ছি ।”