বিতর্কিত গুয়ানতানামো বে সামরিক কারাগারে প্রায় দুই দশক ধরে কোনো অভিযোগ ছাড়াই দুই ভাইকে আটকে রাখার পর, যুক্তরাষ্ট্র তাদেরকে তাদের জন্মভূমি পাকিস্তানে ফিরিয়ে দিয়েছে।
আবদুল রব্বানি (৫৫), এবং মোহাম্মদ রব্বানি (৫৫) কে, ২০২২ সালে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তাদের নিজ শহর করাচি থেকে গ্রেপ্তার করে।তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলো, তারা আল-কায়েদার সেফ হাউজ পরিচালনা করেন।গ্রেপ্তারের পর দ্রুত তাদের যুক্তরাষ্ট্রের হেফাজতে দিয়ে দেওয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ বৃহস্পতিবার দুই ভাইয়ের প্রত্যাবাসনের ঘোষণা দেয়। এই দুই ভাইকে কখনোই কোনো অপরাধ সংঘটনের জন্য অভিযুক্ত করা হয়নি। প্রতিরক্ষা বিভাগ বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য অব্যাহত গুরুত্বপূর্ণ হুমকি প্রতিরোধে তাদের আটক রাখার আর কোনো প্রয়োজন নেই।”
প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন গত মাসে কংগ্রেসকে এই দুই ব্যক্তিকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তার অভিপ্রায়ের কথা অবহিত করেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের সাথে পরামর্শ করে তাদের স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার কোনো বিষয় নেই।
রাব্বানী ভ্রতৃদ্বয় হলেন সর্বসাম্প্রতিক বন্দি, যারা বিতর্কিত গুয়ানতানামো বে আটক কেন্দ্র বন্ধ করার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গুয়ানতানামো বে ত্যাগ করলেন।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল-কায়েদার হামলায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিহত হওয়ার পর, গ্রেপ্তার হওয়া সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের আটকে রাখা এবং জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রশাসন কিউবার একটি নৌ ঘাঁটিতে এই আটক কেন্দ্র স্থাপন করেছিলো।
সবচেয়ে সক্রীয় অবস্থায় গুয়ানতানামো আটক কেন্দ্রে আমেরিকার নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে প্রায় ৬০০ জনকে আটক রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই সামরিক কারাগারের সমালোচনা করে এটি বন্ধ করার দাবি করছিলো। তাদের বলছিলো যে কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই সেখানে বন্দিদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন করা হচ্ছে এবং দীর্ঘদিন ধরে তাদের আটক রাখা হচ্ছে।