বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (২০ ফেব্রয়ারি) জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস গণভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “মিয়ানমারের ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক; রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটি বোঝা। তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়াটা অনিশ্চিত, তাই ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য আমি জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।”
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে মিয়ানমারের নাগরিকদের উন্নত জীবনযাপনের জন্য দ্বীপটি সুসংগঠিত ও উন্নত করা হয়েছে।সেখানে একটি সাইক্লোন শেল্টার, সীমিত আকারে কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “কক্সবাজারের উখিয়ার ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ইতোমধ্যে স্থানীয় জনগণকে ছাড়িয়ে গেছে।”
এম নজরুল ইসলাম আরো জানান যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “তারা (রোহিঙ্গারা) বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণের জীবন ও জীবিকার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছে। রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ মানব ও মাদক পাচার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও জঙ্গি তৎপরতার মতো বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। এ অবস্থায় যেহেতু তাদের দেশে ফেরার সুযোগ অনিশ্চিত, তাই তারা ভাসানচর দ্বীপে স্থানান্তরিত হলে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, সেখানে তারা বসবাসের জন্য উন্নত পরিবেশ পাবে।”
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে চাপ কমাতে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে সরিয়ে নিয়েছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা কর্তৃক সংঘটিত হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গারা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।