অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

মাকে হত্যার দায়ে ছেলেসহ ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড


নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর ইউনিয়নে মাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ছেলেসহ ৭ অভিযুক্তকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া অভিযুক্তরা হলো-নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির (৩২), একই গ্রামের মিলন মাঝির ছেলে নিরব (২৬), নূর আলমের ছেলে কসাই নূর ইসলাম (৩২), দুলাল মাঝির ছেলে কালাম ওরফে মামুন (২৮), মমিন উল্যার ছেলে মো. ইসমাইল (৩৫), হারুনের ছেলে মিলাদ হোসেন সুমন (২৮) এবং মারফত উল্যার ছেলে হামিদ (৩৫)। হুমায়ুন কবিরসহ সবারই বাড়ি সুবর্ণচর ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামে।

সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “এ হত্যার ঘটনায় প্রথমে নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় একটি মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে পুলিশি তদন্তে হত্যার সঙ্গে সন্তানের সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। একইসঙ্গে সে তাঁর ৬ সহযোগী মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রমাণ পায় পুলিশ”।

তিনি আরও বলেন, “রায় ঘোষণার সময় আদালতে ৭ অভিযুক্তই উপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় ২৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে পাঁচজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। একইসঙ্গে আটক নিহতের ছেলের বন্ধু নিরব ও নূর ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি, বালিশ, কোদাল ও নিহতের ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় উদ্ধার করা হয়”।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর (বুধবার) বিকেলে উপজেলার চর জব্বর ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের একটি বিল থেকে নিহত নূরজাহানের (৫৮) পাঁচটি খন্ডিত অংশের একটি অংশ উদ্ধার করে। পরে, পুলিশ নিহতের শরীরের আরও চারটি খন্ডিত অংশ উদ্ধার করে।

এর আগে, জমি বিরোধ নিয়ে বাকবিতণ্ডার পর ৬ অক্টোবর রাতে খাওয়ার পর নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন নূরজাহান। রাত ৯টা থেকে ১২টার মধ্যে কোনো এক সময় হুমায়ুন কবির তার ৬ সহযোগীকে নিয়ে ঘুমন্ত নূরজাহানকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, এরপর তারা নূরজাহানের লাশ পাশ্ববর্তী একটি ধানখেতে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা আলাদাসহ পাঁচ টুকরা করে খন্ডিত অংশ ধানখেত ও বিলের মধ্যে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় মামলা করেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হুমায়ুন কবিরকে আটক করে। পরে, জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী খুন হয়েছে প্রমাণ হয় এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তাঁর ৬ সহযোগীকে আটক করে পুলিশ।

XS
SM
MD
LG