নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার উপর তালিবানের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার খবর পান একুশ বছর বয়সী জামজামা গাজাল যখন তিনি তার বোনের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছিলেন।
কাবুলের শিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী গজল বলেন, "এটি একটি বেদনাদায়ক দৃশ্য ছিল। উদযাপনের পরিবর্তে, কান্না এবং শোক ছিল চিরিদিকে। সব মেয়েরা কাঁদছিল, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছিল।"
গজল একজন চিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন কারণ তার দেশে নারী ডাক্তারের অনেক বেশি প্রয়োজন।
“আমার ছোটবেলার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার। আমাদের অনেক বাধা ছিল। আর্থিক সমস্যা ছিল। সমাজ ও সংস্কৃতিও আমাদের পক্ষে ছিল না। কিন্তু আমি স্কুল শেষ করে মেডিকেলে ভর্তি হতে পেরেছিলাম।”
গত সপ্তাহে দেশটির শাসক, তালিবান সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে "পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত" নারীদের প্রবেশ স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়ার পর গাজাল “এখন অসহায় বোধ করছেন”।
উচ্চশিক্ষা বিষয়ক তালিবান মন্ত্রী নিষেধাজ্ঞার পক্ষ নিয়ে বলেন নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি লিঙ্গ ভেদে- ক্লাস এবং পোশাকের ধরণ মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে।
তালিবান পরিচালিত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে নেদা মোহাম্মদ নাদিম বলেন, “আমরা মেয়েদের হিজাব পরার নির্দেশ দিয়েছি কিন্তু তারা তা মানতে ব্যর্থ হয়েছে। তার পরিবর্তে, তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে পরে যাওয়ার মতো পোশাক পরছিল।”
আফগানিস্তানে গত দুই দশকে যতটুকু নারী অধিকার অর্জন হয়েছে তালিবানের তা খর্ব করার সর্বসাম্প্রতিক প্রচেষ্টা হচ্ছে মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত।
২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতা নেওয়ার পর, তালিবান মেয়েদের মাধ্যমিক শিক্ষা নিষিদ্ধ করে এবং পুরুষ অভিবাবক ছাড়া নারীদের দূরপাল্লার ভ্রমণে যাওয়া, বাইরে কাজ করা এবং পাবলিক পার্কে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
তালিবান অবিলম্বে "পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেয়া পর্যন্ত" নারী কর্মীদের কাজ বন্ধ করতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিওগুলিকে শনিবার নির্দেশ দিয়েছে।