অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

এবার আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা থেকেও বঞ্চিত হলো মেয়েরা


আফগানিস্তানের কাবুলে একটি পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে শাজিয়া নামে এক আফগান নারী।
(ফাইল ছবি)
আফগানিস্তানের কাবুলে একটি পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে শাজিয়া নামে এক আফগান নারী। (ফাইল ছবি)

আফগানিস্তানের তালিবান নেতারা মঙ্গলবার সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অবিলম্বে নারী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রকের একজন মুখপাত্র হাফিজ জিয়া হাশামি বলেছেন, আদেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন এটি তালিবান মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত।

১৬ মাস আগে ক্ষমতা দখলের পর থেকে তালিবান সরকার আফগান নারীদের জনজীবন এবং শিক্ষায় প্রবেশের উপর যে সব বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তার মধ্যে এই পদক্ষেপটি সর্বসাম্প্রতিক।

আফগান নীতি বিশ্লেষক এবং গবেষক মহসিন আমিন টুইট করেছেন, "হাই স্কুল এবং এখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঞ্চিত লক্ষ লক্ষ মেয়ের জন্য এটি সত্যিই বেদনাদায়ক এবং হৃদয়বিদারক।"

যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞা জারির কড়া নিন্দা করেছে, এটিকে "একদম অসমর্থনযোগ্য অবস্থান" বলে অভিহিত করেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচও দ্রুত এই নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ টুইট করেছে, "এটি একটি লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত যা আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েদের শিক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করবে।"

আফগান নারীদের প্রতি আচরণ এবং ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে তালিবান নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।

ক্ষমতা দখলের পর তালিবান নেতারা বারবার আফগান ও বিশ্ববাসীকে আশ্বস্ত করেছেন, তারা দরিদ্র, সংঘাত-বিধ্বস্ত দক্ষিণ এশীয় জাতিকে শাসন করার জন্য আগের শাসনামলের নীতিগুলি আর ফিরিয়ে আনবেন না।

তবে দলটি তার সেই অঙ্গীকার থেকে সরে এসেছে এবং ক্রমবর্ধমানভাবে নারীদের জনজীবন থেকে বাদ দিয়েছে।নারীদের পার্ক, সুইমিং পুল এবং জিমসহ জনসাধারণের জন্য নির্ধারিত স্থানে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তাদের জনসমক্ষে মুখ ঢেকে রাখতে হয়। নারীরা কেবল হাসপাতালে যেতে পারে এবং শুধুমাত্র একজন পুরুষ আত্মীয়ের সাথে থাকলেই দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করতে পারে।

তালিবান সম্প্রতি কথিত অপরাধীদের প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত এবং ইসলামিক আইন বা শরিয়ার কঠোর ব্যাখ্যার সাথে সঙ্গতি রেখে দোষী সাব্যস্ত খুনিদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান পুনর্বহাল করেছে।

কট্টরপন্থী দলটি পূর্বে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে শাসন করেছিল। সেই সময় তালিবান কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে দর্শকদের ভিড়ের সামনে ক্রীড়া স্টেডিয়ামে বেত্রাঘাত এবং মৃত্যুদণ্ডসহ জনসমক্ষে শাস্তি প্রদান করত।

XS
SM
MD
LG