ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশেপাশের এলাকা শনিবার এবং আবারও রবিবার সকালে শক্তিশালী বিস্ফোরণে কেঁপে উঠে। জাতিসংঘের পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার লড়াইকে অঞ্চলটির জন্য “অত্যন্ত উদ্বেগজনক” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
বিস্ফোরণগুলো আকস্মিকভাবেই ঐ স্থাপনাটিতে তুলনামূলক শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতির অবসান ঘটালো। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি বলেন, “এর পেছনে যেই থাকুক না কেন, এটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। যেমনটি আমি এর আগেও বহুবার বলেছি, আপনারা আগুন নিয়ে খেলছেন।”
পারমাণবিক স্থাপনাটির আশেপাশে একটি পারমাণবিক নিরাপত্তা অঞ্চল বাস্তবায়নে জরুরিভাবে সম্মত হতে রাশিয়া ও ইউক্রেন, উভয়ের প্রতিই আহ্বান জানান গ্রসি। যদিও, এর আগে তার জানানো আহ্বানগুলোতেও ঐ অঞ্চলে লড়াইয়ে নতুন করে কোন নিয়ন্ত্রণ আরোপিত হয়নি।
আইএইএ বলে যে, ঝাপোরিঝিয়ায় আক্রমণে বেশ কয়েকটি ভবন, ব্যবস্থা ও যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে, তার কোনটিতেই পারমাণবিক নিরাপত্তা হুমকিতে পড়েনি। হতাহতের কোন খবরও পাওয়া যায়নি।
ইউক্রেন যখন প্রবল শীতকালীন আবহাওয়ার কবলে রয়েছে, ঠিক সেই সময়ে রাশিয়া ইউক্রেনের বৈদ্যুতিক গ্রিড ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোতে আকাশ থেকে হামলা চালাচ্ছে। এর ফলে লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মধ্যে পড়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুধুমাত্র ঝাপোরিঝিয়া অঞ্চলেই রুশ বাহিনী ডজনকয়েক বসতিতে বেসামরিক অবকাঠামোতে গোলাবর্ষণ করেছে, যার ফলে ৩০টি বসতবাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
নিকোপোল-এ গোলাবর্ষণে একজন ব্যক্তি আহত হয়েছেন এবং ২০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়। নিকোপোল ঝাপোরিঝিয়ার পাশের নদীর অপর প্রান্তে অবস্থিত একটি শহর।
এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের খারকিভ অঞ্চলের তিনটি ডিস্ট্রিক্টেও রুশ হামলা চালানো হয়। এগুলো হল কুপিয়ানস্ক, চুগুইভ ও ইজয়ুম। এসব এলাকায় গতদিন আর্টিলারির মাধ্যমে গোলাবর্ষণ করা হয়। এদিকে, পূর্বাঞ্চলের লুহানস্ক ও ডনেটস্ক অঞ্চলে রুশ গোলাবর্ষণে, ডনেটস্কে একজন নিহত হন এবং বৈদ্যুতিক সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকির দফতর থেকে জানানো হয়।