শনিবার জোড়া গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে সোমালিয়ার রাজধানী শহর মোগাদিশু কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণে বহু মানুষ নিহত এবং অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা ভিওএ-কে বলেছেন, একটি বিস্ফোরণ সোমালিয়ার শিক্ষা মন্ত্রক ভবনের খুব কাছেই ঘটানো হয়।
হামলায় নিহতদের মধ্যে স্থানীয় সাংবাদিক মোহাম্মদ ইসা কোনানও রয়েছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, হামলায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে ঠিক কতজন নিহত কিংবা আহত হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
তার সহকর্মীদের মতে, ভিওএ সোমালি সার্ভিস-এর একজন সংবাদদাতাও আব্দুল কাদির মোহাম্মদ আবদুল্লেও হামলায় আহত হয়েছেন।
আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট ইসলামি গোষ্ঠী আল-শাবাব বোমা হামলার দায় স্বীকার করে বলেছে, তারা মোগাদিশুতে সোমালিয়া সরকারের একটি মন্ত্রকে হামলা করেছে।
সোমালি পুলিশের মুখপাত্র সাদিক আদান আলি ডুডিশে হামলার পর মোগাদিশুতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "আক্রমণে বহু মানুষ নিহত হয়েছে" এবং হামলাকারীরা নারী, শিশু এবং বৃদ্ধসহ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে করেছে।
এদিকে, সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলায় পাঁচ দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন শনিবার মোগাদিশুতে শেষ হয়েছে। সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে সোমালিয়ার প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহামুদ, প্রধানমন্ত্রী হামজা আবদি বারে এবং আঞ্চলিক নেতা ও ধর্মীয় আলেমরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে, সোমালিয়ার প্রধানমন্ত্রী হামজা আবদি বারে বলেছেন, আল-শাবাব ইসলাম ধর্মকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে এবং তিনি আল-শাবাবের মারাত্মক মতাদর্শকে কাটিয়ে তুলতে , ধর্মীয় আলেমদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, আল-শাবাব প্রতিনিয়ত মানুষের জীবন ও মর্যাদা বিপন্ন করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সোমালিদের অবশ্যই জানা উচিত যে, খরার কারণে পরিস্থিতির নাটকীয়ভাবে অবনতি হয়েছে। উপরন্তু, আল-শাবাব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায়, খরা পীড়িত মানুষকে সাহায্য করা সম্ভব হচ্ছে না।
সম্মেলনের পর, সোমালি ধর্মীয় আলেমরা একটি বিবৃতি জারি করেন। ওই বিবৃতিতে তাঁরা আল-শাবাব এবং তাদের মতাদর্শের নিন্দা করেছেন। আল-শাবাবকে অর্থ প্রদান করা ইসলামে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছেন আলেমরা।
সোমালিয়া বছরের পর বছর ধরে নিরাপত্তার প্রতি হুমকির সাথে লড়াই করছে, আল-শাবাব ইসলামপন্থীরা হর্ন অফ আফ্রিকা বা আফ্রিকা শৃঙ্গের দেশটির অন্যতম প্রধান হুমকি।
কমপক্ষে ২০০৭ সাল থেকে, আল-শাবাব সোমালি সরকার এবং আন্তর্জাতিক বাহিনীর বিরুদ্ধে মারাত্মক প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, এসব হামলায় মারা গেছে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ।