অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

৯ জন আইএসআইএস-কে ‘র যোদ্ধাকে হত্যার দাবি তালিবানের


আফগানিস্তানের জালালাবাদ, এর উপকণ্ঠে আইএস জঙ্গিদের একটি সন্দেহভাজন আস্তানায় তালিবান অভিযানের সময় তালিবান এবং ইসলামিক স্টেট গ্রুপ যোদ্ধাদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, তালিবান যোদ্ধারা একটি বাড়ি পরিদর্শন করছে। ৩০ নভেম্বর, ২০২১। (ফাইল ছবি)
আফগানিস্তানের জালালাবাদ, এর উপকণ্ঠে আইএস জঙ্গিদের একটি সন্দেহভাজন আস্তানায় তালিবান অভিযানের সময় তালিবান এবং ইসলামিক স্টেট গ্রুপ যোদ্ধাদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, তালিবান যোদ্ধারা একটি বাড়ি পরিদর্শন করছে। ৩০ নভেম্বর, ২০২১। (ফাইল ছবি)

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালিবান শনিবার বলেছে, তাদের বিশেষ বাহিনী রাজধানী কাবুল এবং আফগানিস্তানের অন্যত্র রাতভর অভিযানে নয় জন ইসলামিক স্টেট কর্মীকে হত্যা করেছে এবং অন্য দু'জনকে আটক করেছে।

তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা বাহিনী শুক্রবার গভীর রাতে কাবুলের "দায়েশের একটি গুরুত্বপূর্ণ আস্তানায়" অভিযান চালায়। তিনি স্ব-ঘোষিত ইসলামিক স্টেটের আফগান সহযোগী সংগঠনের জন্য একটি স্থানীয় নাম ব্যবহার করেন, যা ইসলামিক স্টেট খোরাসান বা আইএসআইএস-কে নামে পরিচিত।

বিস্তারিত উল্লেখ না করে মুজাহিদ বলেন, পরবর্তী বন্দুকযুদ্ধে জঙ্গি একজন তালিবান এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ছয় জন সদস্য নিহত হয়। কাবুলের অন্য একটি অংশে একটি পৃথক অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী দু’জন প্রধান আইএসআইএস-কে সদস্যকে আটক করার পরপরই এই অভিযান চালানো হয়। তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।

পৃথকভাবে, তালিবান-নেতৃত্বাধীন আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, " সঠিক গোপন খবরের ভিত্তিতে " সরকারী বাহিনী গভীর রাতে তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব তাখার প্রদেশে আইএসআইএস-কে-এর একটি আস্তানায় হামলা চালায়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দাশত কালা জেলায় ওই অভিযানে একজন "গুরুত্বপূর্ণ" কমান্ডারসহ তিন জন দায়েশ সদস্য নিহত হয়েছে।

মুজাহিদ দাবি করেছেন যে, কাবুলে নিহত ছয় জন দায়েশের সবাই শহরের সাম্প্রতিক আত্মঘাতী বোমা হামলার সাথে জড়িত ছিল। একটি শিক্ষাকেন্দ্রে এবং অন্যটি একটি মসজিদে ওই হামলা চালানো হয়েছিল।

মুজাহিদ বলেন, "তারা কাবুলের ওয়াজির আকবর খান মসজিদ, কাজ টিউশন সেন্টার এবং অন্যান্য বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার পরিকল্পনা করেছিল।"

কড়া সুরক্ষিত ওয়াজির আকবর খান পাড়ার প্রধান মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের মাত্র কয়েকদিন পর, গত ৩০ সেপ্টেম্বর জনাকীর্ণ টিউশন সেন্টারের নারী বিভাগে বিস্ফোরণে ৫৩ জন নিহত এবং ১১০ জন আহত হয়। নিহতদের বেশিরভাগই মেয়ে এবং তরুণী । ওয়াজির আকবর খান পাড়া এমন একটি স্থান, যেখানে প্রধান সরকারি অফিস এবং বিদেশী কূটনৈতিক মিশন রয়েছে।

এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী দু’টি হামলার কোনটারই দায় স্বীকার করেনি।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আইএসআইএস-কে-কে সংকটে জর্জরিত দক্ষিণ এশীয় রাষ্ট্রটিতে ক্রমবর্ধমান হুমকি হিসেবে দেখছেন।

আফগানিস্তানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত টমাস ওয়েস্ট ভিওএ-কে বলেছেন, এই মাসের শুরুতে কাতারের রাজধানী দোহাতে তালিবানের সাথে তার বৈঠকে দুই পক্ষই দায়েশের উঠতি হুমকি নিয়ে আলোচনা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বলেন, "তালিবান স্পষ্ট করে বলেছে যে, এটি তাদের লড়াই এবং প্রচেষ্টা, এবং সন্ত্রাসীরা যাতে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা তার মিত্রদের হুমকি না দেয়, তা নিশ্চিত করার জন্য তারা দোহা চুক্তিতে বর্ণিত তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে।"

তিনি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারীতে তৎকালীন বিদ্রোহী তালিবানের সাথে ওয়াশিংটন স্বাক্ষরিত চুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করেন। যে চুক্তি তালিবানের সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের আশ্বাসের বিনিময়ে আমেরিকান নেতৃত্বাধীন সমস্ত আন্তর্জাতিক বাহিনীকে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহারের পথ প্রশস্ত করেছিল।

প্রতিবেশী তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গত বছর আফগানিস্তানের মাটি থেকে শুরু করা সন্ত্রাসীদের, বিশেষ করে আইএসআইএস-কে-এর আক্রমণকে ওয়েস্ট "অত্যন্ত উদ্বেগজনক" হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

XS
SM
MD
LG