লিজ ট্রাস বৃহস্পতিবার জানান যে, তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করছেন। এর মাত্র ছয় সপ্তাহ আগেই তিনি এই দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। এক অর্থনৈতিক কর্মসূচির কারণে তার সরকারের এমন পতন ঘটে। ঐ কর্মসূচিটি গতমাসে অর্থবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করে এবং তার কনজারভেটিভ দলে ভাঙন ধরায়।
নাম্বার টেন ডাউনিং স্ট্রিটের নিজ দফতরের বাইরে বক্তব্য দেওয়ার সময়ে, ট্রাস স্বীকার করেন যে, কনজারভেটিভ দলের নেতা হওয়ার প্রার্থী থাকাকালীন তার করা অঙ্গীকারগুলো, তিনি রক্ষা করতে পারেননি, যার কারণে তিনি তার দলের আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
ট্রাসকে স্থলাভিষিক্ত করতে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই নতুন নেতৃত্বের নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। ব্রিটেনের ইতিহাসে ট্রাস সবচেয়ে স্বল্প মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল জর্জ ক্যানিং এর, যিনি ১৮২৭ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত ১১৯ দিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
এর আগে, কনজারভেটিভ দলের কর্মকর্তারা ডাউনিং স্ট্রিটে সমবেত হন, যখন কিনা তার নিজের দলেরই ক্রমবর্ধমান সংখ্যক আইনপ্রণেতারা তাঁর প্রতি পদত্যাগ করার আহ্বান করেন।
ট্রাস ৬ সেপ্টেম্বর দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার অর্থমন্ত্রী, কোয়াসি কোয়ারটেং-কে বরখাস্ত করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কোয়ারটেং ট্রাসের ঘনিষ্ঠতম রাজনৈতিক মিত্র ছিলেন। একইসাথে অর্থায়ন ছাড়াই বিপুল পরিমাণে করহ্রাস করার পরিকল্পনার ফলে, পাউন্ড ও ব্রিটিশ বন্ডগুলো মুখ থুবড়ে পড়লে, ট্রাস তার সকল অর্থনৈতিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করতেও বাধ্য হন। ট্রাস ও তার কনজারভেটিভ দলের জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রেও ধস নামে।
তার সরকারের সবচেয়ে ঊর্ধ্বতন চার মন্ত্রীর মধ্যে দ্বিতীয় আরেক মন্ত্রীকেও বুধবার খোয়ান ট্রাস। সংসদে আত্মরক্ষার চেষ্টায় হাসির পাত্রে পরিণত হন তিনি। তার সরকারের নীতি নিয়ে তার নিজের দলের আইনপ্রণেতারাই সংসদে প্রকাশ্যে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর ফলে ওয়েস্টমিনস্টারের পরিবেশ আরও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে।
বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে ও ব্রিটেনের আর্থিক সুনাম পুনর্নির্মাণের চেষ্টায়, নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট এখন শত শত কোটি পাউন্ড ব্যয় হ্রাসের পথ খুঁজছেন। দেশটির অর্থনীতি মন্দার দিকে এগোচ্ছে এবং মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।