তিউনিসিয়ার দু’টি প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী গোষ্ঠী শনিবার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইয়েদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। জ্বালানি ও খাদ্যের ঘাটতির কারণে জনগণের ক্ষোভ বৃদ্ধি মুখে কাইস সাইয়েদ তার রাজনৈতিক ক্ষমতা সুসংহত করতে চাইছেন। সাইয়েদের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ করেছে বিরোধীরা।
ইসলামপন্থী এন্নাহদা পার্টি এবং ফ্রি কনস্টিটিউশনাল পার্টির হাজার হাজার সমর্থক রাজধানী তিউনিসে, একই সময়ে পৃথক সমাবেশ করেছে। সমাবেশে সাইয়েদকে তার অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং গণতন্ত্র বিরোধী অভ্যুত্থানের জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
প্রতিবাদকারী হেন্দা বেন আলি বলেন, "তিউনিসিয়ায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে। সাইয়েদ একজন ব্যর্থ স্বৈরশাসক। সে আমাদেরকে অনেক বছর পিছিয়ে দিয়েছে। খেলা শেষ। এখন বের হয়ে যাও"।
সাইয়েদ গত বছর পার্লামেন্ট বন্ধ করে দেওয়ার পর, ডিক্রির মাধ্যমে দেশ শাসনের উদ্যোগ নেন।আর, জুলাইয়ের গণভোটে পাস করা একটি নতুন সংবিধানের মাধ্যমে তার ক্ষমতা সম্প্রসারণেরও উদ্যোগ নেন তিনি। সাইয়েদ বলেছেন যে তিউনিসিয়াকে বছরের পর বছর ধরে চলা সংকট থেকে বাঁচানোর জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল।
১৯৫৬ সালে তিউনিসিয়ার স্বাধীনতার পর, ফরাসি সৈন্যদের প্রস্থানের দিনটির স্মরণে শনিবার দেওয়া বক্তব্যে তিনি "স্বাধীনতাকে যারা ক্ষুন্ন করতে চান”, তাদের সকলের প্রস্থানের দাবি করেন। এটা ছিল তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রতি একটি বাহ্যত পরোক্ষ ইঙ্গিত।
সাইয়েদ বিরোধীরা বলছেন যে তার কর্মকাণ্ড ২০১১ সালের বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জন করা গণতন্ত্রকে ব্যাহত করেছে। ঐ বিপ্লবে স্বৈরাচারী নেতা জইন এল আবিদিন বেন আলীকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল এবং এর মধ্য দিয়ে আরব বসন্তের সূত্রপাত হয়েছিল।
এন্নাহদা এবং ফ্রি কনস্টিটিউশনাল পার্টি দীর্ঘদিন ধরে পরস্পরের তিক্ত শত্রু। কিন্তু উভয়ই এখন সাইয়েদের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রামের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।
তবে তিউনিসীয়রা এখন সংকট থেকে বাঁচার জন্য লড়াই করছে। কেননা, রাষ্ট্রীয় আর্থিক সংকটের কারণে ভর্তুকিতে পাওয়া পেট্রোল, চিনি ও দুধের মত পন্যের অভাব দেখা দিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে চলা অর্থনৈতিক মন্দায় বেকারত্ব তীব্রতর হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট পন্য ঘাটতির জন্য মজুতদার এবং ফটকাবাজদের দায়ী করেছেন। দৃশ্যত তিনি অনেক তিউনিসীয়র সমর্থন ধরে রেখেছেন।কিন্তু ক্রমবর্ধমান দারিদ্র হতাশা সৃষ্টি করছে এবং ইউরোপে অবৈধ অভিবাসীদের প্রবাহকে বাড়িয়ে তুলছে।