এই সপ্তাহের শুরুর দিকে লেবানন থেকে যাত্রা করার পর সিরিয়ার উপকূলে অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটি নৌকা ডুবে কমপক্ষে ৭১ জন প্রাণ হারিয়েছেন। লেবাননের পরিবহন মন্ত্রী বলেন, শুক্রবারও অনুসন্ধান অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
লেবাননে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক হতাশার কারণে অনেকে ইউরোপে পৌঁছানোর আশায় প্রায়শই অনিরাপদ এবং জনাকীর্ণ নৌকায় যান তবে লেবানন থেকে এখন পর্যন্ত এই ধরণের নৌ-যাত্রায় এটাই সবচাইতে মারাত্মক দূর্ঘটনা।
সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বিকেলে টার্টাস উপকূলে মরদেহের সন্ধান পেতে শুরু করে। সিরিয়ার পরিবহন মন্ত্রক বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মঙ্গলবার লেবাননের উত্তরাঞ্চলীয় মিনিয়েহ অঞ্চল থেকে নৌকাটি ১২০ থেকে ১৫০ জন যাত্রী নিয়ে ইউরোপের উদ্দেশে রওনা হয়।
সিরিয়ার সাথে সীমান্ত পারাপারের স্থানে যেখানে মৃতদেহগুলি পরে নিয়ে আসার কথা ছিল সেখানে মানুষ-জন জড়ো হয় এই আশংকায় যে নিহতদের মধ্যে তাদেরও আত্মীয়-স্বজন হয়ত থেকে থাকতে পারে।
লেবাননের পরিবহন মন্ত্রী আলী হামিয়ে বলেন, বেঁচে যাওয়া ২০ জনকে সিরিয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সিরিয়ার প্রায় ১০ লাখ নাগরিক শরণার্থী হিসেবে লেবাননে বসবাস করছেন।
উত্তরাঞ্চলের একটি শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, তাদের ক্যাম্পের কয়েক ডজন যাত্রী ঐ নৌকোটিতে ছিল।
সিরিয়ার বন্দর মহাপরিচালক সামির কুব্রুসলি বলেন, শুক্রবারও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গত তিন বছরে লেবাননের আর্থ-ব্যবস্থা ধসে পড়ার ফলে এই ধরনের নৌযাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছে। লেবাননের অর্থনৈতিক অবস্থা বিশ্বব্যাপী রেকর্ড করা সবচেয়ে খারাপের মধ্যে একটি। প্রায় ৬৫ লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে দারিদ্র্যের হার দাঁড়িয়েছে আকাশ ছোঁয়া।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে সমুদ্রপথে লেবানন ছেড়ে যাওয়া বা লেবানন ছাড়ার চেষ্টা করা মানুষের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে ।
গত বছর একই সময়ের তুলনায় ২০২২ সালে তা আবার ৭০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
গত এপ্রিলে লেবাননের ত্রিপোলির কাছ থেকে ছেড়ে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটি নৌকা লেবাননের নৌবাহিনী আটক করার চেষ্টা করলে তা উপকূলে ডুবে যায়।
নৌ-যানটিতে প্রায় ৮০ জন লেবাননী, সিরিয়ো ও ফিলিস্তিনি অভিবাসী ছিলেন যাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়। সাতজন প্রাণ হারায় এবং প্রায় ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।