অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ক্যাপাসিটি চার্জ, এটা যে কোনরকম বিনিয়োগে আপনাকে দিতে হবেঃ তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী


তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী। (ফাইল ছবি)
তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী। (ফাইল ছবি)

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ঘুরে গেলেন। তার এ সফরকালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি জে ডাব্লিউ ফার্নান্দেজের সাথে বৈঠক করেন। ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে দীর্ঘ ও খোলামেলা এক সাক্ষাৎকারে তিনি আন্ডার সেক্রেটারির সাথে তার বৈঠকের বিষয়বস্তু, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক, দু'দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, পরিবেশ-বান্ধব ক্লিন এনার্জি, বিদ্যমান জ্বালানি সংকট, এর কারণ ও এ থেকে উত্তরণে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ, মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদানি, বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এছাড়া, "সরকারের ভুল জ্বালানি নীতির কারণেই বর্তমান সংকট", কিছু জ্বালানি বিষয়ক বিশেষজ্ঞের এমন সমালোচনারও জবাব দেন তিনি এই সাক্ষাৎকারে।

ভয়েস অফ আমেরিকার পক্ষ থেকে এ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শতরূপা বড়ুয়া।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আপনি এবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে Economic Growth, Energy, & the Environment বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি হোসে ফার্নান্দেজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। আমরা জেনেছি, এই সাক্ষাতে আপনি বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে আরও বিনিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত বলবেন।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: আসলে আন্ডার সেক্রেটারির সাথে আমার যখন কথা হয়, আমি প্রথমে যে জিনিসটা উত্থাপন করি, সেটা হলো যে ইউক্রেন যুদ্ধ সারা পৃথিবীকে এনগালফ করে ফেলেছে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য It had been a great shock for us to absorb. ফসিল ফুয়েলের যে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, এটা আমাদের পক্ষে সহনীয় না। যে কারণে আমাদের বিদ্যুৎ কমাতে হচ্ছে, সারা দেশে বিদ্যুতায়ন করেও বিদ্যুৎ দিতে পারছি না। সেখানে আবার রয়েছে আমাদের শিল্প এবং কৃষি... সুতরাং এটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে। এবং এই চ্যালেঞ্জটা এসেছেই ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। তাই আমি তাকে অনুরোধ করলাম যে, "আপনারা যুদ্ধটা বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন। The whole world cannot pay price for that and we are such a distant country from this conflict." উনি বললেন যে, "ঠিক আছে আমরা তো চেষ্টা করছি, এটা তো রাশিয়ার হাতে।" যাক, আমি এই পয়েন্টটা করলাম। তখন উনি বললেন, "দেখেন কিন্তু আমাদের তো জ্বালানি, খাদ্যশস্য এবং ফার্টিলাইজারের উপরে কোনো স্যাঙ্কশন নাই। সুতরাং এটা তো আমাদের দায়দায়িত্ব না।" আমি তখন বললাম যে, "তাহলে আমরা যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করি, এটা তো আপনার কথায় অ্যাক্সেপ্টেবল।" উনি খুব উত্তর দিলেন না। যা আমরা বাংলায় বলি, যে আপনি বুঝে নেন। তারপর অন্যান্য যখন ইস্যু আসলো, তখন আমি বললাম যে, "ডিএফসি ফাইন্যান্সিং বলে একটা আছে। ডিএফসি ফাইন্যান্সিং নিয়ে আপনারা যদি আসেন, তাহলে দেশে আমাদের infrastructure-এ বিনিয়োগ করতে পারবেন।" এর আগে আমার সাথে আন্ডার সেক্রেটারি ল্যু'র সাথে কথা হয়েছে। উনি বললেন যে, "ইন্ডিয়ায় কাজ করছে, তো আমরা একটা ডেলিগেশন পাঠাব।" আমি বললাম, "পাঠান, বাংলাদেশে ডেলিগেশন দেখে আসুক।" এই প্রস্তাব আলোচনায় উনি বললেন, "দেখেন আপনারা জিএসপি'র জন্য যতক্ষণ এনটাইটেল না হবেন, ততক্ষণ ডিএফসি ফাইন্যান্সিং দেয়া হয় না।" তখন আমাদের অ্যাম্বাসেডর সাহেব বললেন, "দেখেন, এটা তো তাহলে ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হওয়া উচিত।" উনি তখন বললেন যে, "আচ্ছা আমি একটু ভেরিফাই করে নেই।" সমকালীন চ্যালেঞ্জের সাথে ভবিষ্যৎটাও তো দেখতে হয়। সেজন্য বললাম যে, "আপনারা আসেন, কোথায় বিনিয়োগ হয়, রিনিউয়েবল এনার্জি হতে পারে, অন্যান্য স্মল মডিউলার রিঅ্যাক্টর হচ্ছে, হাইড্রোজেন যে নতুন সোর্স সেটায় হতে পারে। আমাদের দেশে আমরা হাইড্রোজেনের একটা পাইলট প্রোজেক্ট করেছি, সেটার কথা বললাম, চট্টগ্রামে।"

এখানে আমি একটা জিনিস পরিষ্কার করতে চাই যে, The focus should not be on renewable, the focus should be on clean energy. যেমন, Nuclear is a clean energy. নিউক্লিয়ারের এমিশন সোলারের চেয়ে কম। তারপরে আমরা যদি হাইড্রোজেন করি সেটাও এমিশন কম হবে। কার্বন ক্যাপচারের স্টোরেজ যদি করি তাহলে যে কার্বন এমিশন হচ্ছে সেখানেও কম হবে। সুতরাং এটা সব মিলিয়ে একটা স্ট্যাট্রেজি হওয়া উচিত যেটা আমরা করেছি।

"এখানে আমি একটা জিনিস পরিষ্কার করতে চাই যে, The focus should not be on renewable, the focus should be on clean energy."

এছাড়া আমি যেটা উনাকে বললাম, "দেখেন, আমেরিকার কিছু কোম্পানী, ন্যুস্কেল (NuScale) বলে একটা কোম্পানী মডিউলার রিঅ্যাক্টরের অনুমোদন পেয়েছে। এগুলা যদি আসে, টেকনোলজি এভেইলেবল হয়, আর আপনারা যদি ডিএফসি ফাইন্যান্সিং করেন তাহলে তো এটা মণিকাঞ্চন যোগ হলো।" তো উনি এটাতে আগ্রহ প্রকাশ করলেন। সেইসাথে বললেন যে আমাদের ট্রেডের ব্যাপারে যে রিলেশনশিপটা ওইটাকে আরো গভীর করার কথা। এবং লেবার রিলেশনশীপ, লেবার স্ট্যান্ডার্ড, ইউনিয়ন ইত্যাদি নিয়ে তাদের একটা দৃষ্টিভঙ্গি আছে সেটা নিয়ে একটা বোধহয় ওয়ার্কিং গ্রুপ হয়েছে। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা বা এই দেশের ছেলেমেয়েরা যদি ইউনিভার্সিটিতে কানেকটেড হয়, একদিকে শিক্ষার উন্নতি হতে পারে আর একটা হলো যে দুই দেশের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইমপ্রুভ করতে পারে। এজন্য উনি খুব আগ্রহী ছিলেন। বাংলাদেশের উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করলেন। যেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্জন করেছেন। এটার কোন প্যারালাল নাই। অনেক 'বিজ্ঞ বিশেষজ্ঞরা' বলছেন, "এই দেখেন এখনই তো ফাটল ধরতে যাচ্ছে।" দুইটা কথা। একটা হলো আমাদের এই গ্রোথটা কনসিসটেন্স হয়েছে, কোনো আকাশ থেকে পড়া না। দুই নম্বর, এটা খুব স্ট্র্যাটেজিকালি করা হয়েছে। আমাদের ইকনমিক গ্রোথের সাথে ইনকাম ইকুয়ালিটি। ইনকামের কী ব্যবহার? শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য। আমাদের এই ইকোনমিক গ্রোথের সাথে এ সবগুলোর উন্নতি হয়েছে। জীবনযাত্রার মান। সুতরাং এটা যারা বলেন, আমি "বিশেষভাবে বিশেষজ্ঞ" না বলে বলব "বিশেষভাবে অজ্ঞ।" কারণ হলো লাইফের যদি সব ইন্ডিকেটরগুলোর উন্নতি হয় সেটাই তো মেইন। কারণ টাকা পয়সা, কোন খাতে কী খরচ হলো, একটা হিসাব নিকাশ করা, কত পার্সেন্ট, কী নিলো...এগুলো তাত্ত্বিক জিনিস। বাস্তবে আমাদের জীবনযাত্রার সবকিছুর মান উন্নয়ন হয়েছে। সেজন্য এটা একটা সামগ্রিক উন্নতি করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এখন অনেকে ক্র্যাক ধরছেন, এগুলো বলেন-টলেন এগুলো থেকে হয়তো, "দে টেক প্লেজার।" বাংলাদেশের যদি একটু ক্ষতি হয়, দেশটা যদি না দাঁড়াতে পারে তাহলে তাদের প্রেডিকশন ইউল কাম ট্রু, হুইচ আই ইনশাআল্লাহ, আই বেট দ্যাট শুড নট।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ বাংলাদেশে জ্বালানি খাতে বর্তমানে যে সংকট চলছে সেজন্য অনেক বিশেষজ্ঞ বর্তমান সরকারের পলিসিকে দায়ী করেছেন। বিশেষ করে তারা দায়ী করছেন গত পনেরো বছরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে জোর না দেয়া, নতুন কূপ খনন না করা, উত্তোলন ক্ষমতা না বাড়ানো ইত্যাদি। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: প্রথমে একটা পরিসংখ্যান বলে নেই। ২০০৯ সালে গ্যাসের উৎপাদন ছিলো ১৭০০ এমএমসিএফডির একটু বেশি। এখন কিন্তু গতবছর পর্যন্ত এটা ৩০০০ এমএমসিএফডি হয়েছে। এটা ঠিক না যে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি পায়নি। গ্যাস উৎপাদন প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু আমাদের জ্বালানি নীতি হলো অর্থনৈতিক নীতির একটা অঙ্গ। এটা ইনডিপেন্ডেন্ট না। আমরা যদি অর্থনৈতিক উন্নতি করতে চাই তাহলে আমাকে প্যারালাল কিছু পলিসি নিতে হবে। যেমন, আমি কতগুলি বাস্তবতার উদাহরণ দেই। আপনি শুনবেন অনেক ভূত্বত্তবিদরা বলবেন, যে Bangladesh is 3:1. আমি খুব ‍দুঃখের সাথে বলছি যে, তারা এগুলোতে যদি একটু গভীরে না যান, তাহলে দেশ সম্বন্ধে একটা ভ্রান্ত ধারণা দেয়া হয়। আপনি দেখেন, গত বিশ বছর বা ত্রিশ বছরে বাংলাদেশে ২১টি গ্যাসফিল্ড আবিষ্কার হয়েছে। এই ২১টি গ্যাসফিল্ডের মধ্যে দুটি বড় গ্যাসফিল্ড হলো, বিবিয়ানা আর জালালাবাদ গ্যাসফিল্ড। বাকি ১৯টি গ্যাসফিল্ড থেকে সাকুল্যে মিলে ৫ টিসিএফ গ্যাস। মানে এক একটায় ২৫০ বিসিএফ-এর মতো গ্যাস হয়। অন্যান্য দেশে এটা কমার্শিয়ালি ভায়াবল না। আপনি, গ্যাস পাওয়া এক জিনিস আর গ্যাসের কমার্শিয়াল ভায়াবিলিটি এনাদার থিং। আমরা তো গ্যাস পেয়েছি। যেটা বললাম আপনাকে, ১৯টি গ্যাসক্ষেত্র, বিবিয়ানা এবং জালালাবাদ ছাড়া, সেগুলো তো ছোট্ট, ছোট্ট। সুতরাং নাম্বার দিয়ে এটাকে বিবেচনা করা যাবে না যে, অতটা হবে, অতটা হবে। বিশেষজ্ঞদের দেখতে হবে উৎপাদন এক একটা ফিল্ড কত করছে। আমি অনেক সময় বক্তৃতায় বলি, দেখেন, "কাতারের একটা গ্যাসফিল্ড, হলো ৯০০ টিসিএফ। ওর পাশে ইরানের সেম গ্যাসফিল্ডের পার্কে ১০০০ টিসিএফ। আর আমার ২১টা ফিল্ডে হলো ৫ টিসিএফ। এটা তো নগন্য আমাদের প্রয়োজনের তুলনায়।" সেজন্য আমরা এটা সমান্তরালভাবে করেছি। যে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতি, মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নতি আমরা করে যাবো এবং সেই সাথে আমাদের জ্বালানি যেভাবে প্রাপ্যতা হয় আমাদের দেশে, সে চেষ্টা করবো। আমরা গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন ধরণের ৪৮টা কূপ করেছি। কোনটা এ্যাডভেঞ্চার, কোনটায় এক্সপ্লোরেশন, কোনটা ওয়ার্কওভার, বিভিন্নভাবে গ্যাস পাওয়া যায়। এক্সপ্লোরেশন করেও গ্যাস পাওয়া যায়, আবার যে ফিল্ড আছে সেটার মধ্যেও বেশি করে গ্যাস পাওয়া যায়। তো পুরো স্ট্র্যাটেজি নিয়েই গত পাঁচ বছরে ৪৮টি কূপ ডিল করা হয়েছে। আপনাকে যে বললাম, সেইজন্য কিছু উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু দেশ তো বসে থাকবে না ভূতাত্বিক এক্সপেরিমেন্টের জন্য যে, আচ্ছা ভাই অপেক্ষা করি, আর একটু বড় পাওয়া যাবে। সেইজন্য আমরা দেখলাম যে আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখা যাচ্ছে, অন শোর খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না।

"১৯টি গ্যাসফিল্ড থেকে সাকুল্যে মিলে ৫ টিসিএফ গ্যাস। মানে এক একটায় ২৫০ বিসিএফ-এর মতো গ্যাস হয়। অন্যান্য দেশে এটা কমার্শিয়ালি ভায়াবল না। আপনি, গ্যাস পাওয়া এক জিনিস আর গ্যাসের কমার্শিয়াল ভায়াবিলিটি এনাদার থিং।"

ওদিকে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপেক্সকে দুইটা রিগ কিনে দিয়েছে নুতন যাতে তারা করতে পারে এবং তারা করেছে।

এখন আপনি বলবেন যে, ঠিক আছে, আপনারা ডিপসি'তে কেন করলেন না, গভীর সমুদ্রে। গভীর সমুদ্রে তো আমরা নিজেরা করবো না, এটা প্রোডাক্ট শেয়ারিং কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে, বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীকে দেয়া হয়। প্রথম আমরা দশ-বারো বছর আগে দিয়েছিলাম কনকো ফিলিপস্‌কে (ConocoPhillips) দুইটা ব্লক। তারা সিসমিক স্টাডি করে একটা লিড পেলো, কিন্তু বলল যে, "তোমরা যে টার্মসটা দিয়েছো, সেই টার্মস অনুয়ায়ী আমরা করতে পারি না।" বলল যে, "এখানে অনেক বেশি খরচ এবং ঝুঁকি অনেক বেশি। কারণ কত বড় ফিল্ড আমরা জানি না। সেটা হলে সেই গ্যাস কিভাবে আনবো, এটা কি পাইপ দিয়ে আনবো এক হাজার কিলোমিটার দূর থেকে বা পাঁচশ কিলোমিটার দূর থেকে... নাকি লিকুইফিকশন প্লান্ট করে... এখানে অনেক ব্যবসায়িক ঝুঁকি আছে।" আমরা তখন দোমনা হলাম। আমরা যদি, একটা চুক্তি করে তার শর্ত বদলাই, তাহলে আবার এদিকে শেভরন (Chevron) যারা কাজ করছে, তারাও বলবে "আমাদেরটাও বদলাতে হবে।" এটা একটা গ্রহণযোগ্য পদক্ষেপ ছিলো না। আমরা পরে বললাম যে, "তোমরা পরে আসো। নতুন টার্মস আমরা করবো, তাও আসো।" এবং ঐ দুইটা ব্লকের যেহেতু কিছু ইনফরমেশন আছে, আমি ব্যক্তিগতভাবে বড় বড় অয়েল কোম্পানীকে বলেছি যে, "তোমরা এখানে আসো। তোমাদের টার্মস কী, আমাদের বল। তার থেকে যদি আমরা লাভবান হই, আমরা যাবো।" I'm guessing their terms. উল্টিয়ে বললাম, "তুমি বল কী টার্ম? I will look at this. এবং বাংলাদেশে যদি বেনিফিটেড হয় তো যাবো।" এটার কোনো সাড়া পাইনি। কারণ যেটা হয়েছে যে, আমার ধারণা, প্রথম দিকে তেলের দাম খুব কম ছিলো। আর আমার যেসব পেমেন্ট সব তেলের সাথে এ্যান্কর্ড। তখন তারা উৎসাহী ছিলো না। এবং আমি জানি যে প্রায় দুই/তিনশ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ তারা ক্যানসেল করেছে। তারপরে তেলের দাম বাড়া শুরু হলো। তখন সারা পৃথিবীতে ফসিল ফুয়েলের বিরুদ্ধে একটা আন্দোলন শুরু হলো। আপনি কপ-২৬ দেখবেন। ফসিল ফুয়েল যারা উৎপাদন করে তারা সন্দিহান হয়ে গেছে যে, এটা নিয়ে লং রেঞ্জে কতখানি স্টে করা যায়। বাংলাদেশে যদি এখন কেউ করতো, তাকে বিশ/ত্রিশ বছর সামনে রেখে করতে হতো। এবং বিশ/ত্রিশ বছর পরে ফসিল ফুয়েল কী হবে, এনিবডি'স গেস। সুতরাং আমার ধারণা তারা এক্সিস্টিং ফিল্ড নিয়েই ব্যস্ত। বড় বড়, কাতারে আছে, ইরানে হবে, আফ্রিকায় কিছু ফিল্ড আবিষ্কার হয়েছে, এটা আমার নিজের কঞ্জেকচার, হয়তো ভুলও হতে পারে।

এর মধ্যে কিছু কিছু ব্যবস্থা আমরা আগে থেকেই নিয়েছি। একটা যুদ্ধাবস্থা হলে কী করতে হবে। আমাদের সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে, আমাদের সবাইকে কিছু কষ্ট করতে হবে। আমাদের সবাইকে সহনশীল হতে হবে। রাতে আমরা কিছু লোডশেডিং আমরা দিতে বলি। বিকজ আমরা প্রথমত কৃষিকে দিতে চাই। শিল্পকে দিতে চাই তার প্রয়োজন অনুযায়ী। তাহলে বাকি রইলো অন্যরা। বাকিটা শেয়ার করেতে হবে। একঘন্টা, দুইঘন্টা যদি কারেন্ট না থাকে সেটুকু সহ্য করতে হবে। এখন আপনি বলবেন যে, আগেও তো এক ঘন্টা, দুই ঘন্টা, পাঁচ ঘন্টা, দশ ঘন্টা হতো। ২০০৯ সালে সাত-আট ঘন্টা হতো। তফাৎ আছে। তফাৎটা হলো এখন কিন্তু আমরা ২০০৯ সালের তুলনায় ৪ গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। এই যে বললাম, লোডশেডিংয়ের পরেও তখন ৩-৪ হাজার মেগাওয়াট ছিলো, এখন ১২ হাজার মেগাওয়াটের মতো উৎপাদন হচ্ছে। সুতরাং, এটা ঠিক না যে একই জায়গায় অবস্থান। আমরা সামনে গিয়েছি। এখন একটা বিপদ সামনে এসেছে। আমরা হয়তো পনের হাজার, সাড়ে পনের হাজার করলে ঠিক থাকতাম, কিন্তু এক-দেড় হাজার আমাকে কমিয়ে দিতে হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এলএনজির প্রাইসের আকাশচুম্বী দাম হওয়ায়।

এখন বিশ্বব্যাপী একটা সমস্যা। এটা আমাদের বাংলাদেশের সমস্যা না। It’s a global challenge. সেটা নিয়ে সরকারের উপর দায়ভার দেয়া, বলা যে করিনি। আমি তো আপনাকে পরিসংখ্যান দিলাম।

"আমরা প্রথমত কৃষিকে দিতে চাই। শিল্পকে দিতে চাই তার প্রয়োজন অনুযায়ী। তাহলে বাকি রইলো অন্যরা। বাকিটা শেয়ার করেতে হবে। একঘন্টা, দুইঘন্টা যদি কারেন্ট না থাকে সেটুকু সহ্য করতে হবে।"

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ আপনি সম্প্রতি একটি সেমিনারে বলেছেন আমদানি করা এলএনজি'ই এখন ভরসা ... কিন্তু অনেকে বলছেন আমদানিকৃত এলএনজি'র ওপর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতাই বর্তমান সংকটের অন্যতম কারণ। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: আমরা দেখলাম যে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতিকে সামনের দিকে নিতে হলে উই নিড টু ব্রিংগ এলএনজি। এবং আমরা এলএনজি প্রথম যেটা করেছি, সেটা কিন্তু পৃথিবীর ৫/৭টা এলএনজির মধ্যে আমাদেরটা একটা। এর উপকার যে হয়েছে, সেটা বহুলাংশে। এই গ্যাস থাকার কারণে আমাদের শিল্প, বাণিজ্য, সবকিছুর উন্নতি হয়েছে। সো ইট কম্পেসেটেড কোট আনকোট প্রাইস অফ এলএনজি। আমরা যেটা দেখি, আমরা বলি, অপারচুনিটি কস্ট, আমি একটা জিনিস কিনে কতখানি লাভ করছি। আমি যদি ১০ টাকা কিনে ১৫ টাকা পাই, সেটা আমার জন্য বেশি বৈ কম না। সেজন্য আমরা দেখেছি, আমরা লাভবান হয়েছি। এরপর আরেকটা আমরা এলএনজি টার্মিনাল করেছি। এবং বলবেন যে আমরা এখন এলএনজির উপর নির্ভরশীল হয়ে বিপদে পড়েছি। এলএনজি যদি না আনতাম তাহলে তো বিপদে আরো আগে পড়তাম। কারণ কোনো গ্যাসই থাকতো না দেশে। এলএনজি আনার কারণে দশ বছর পর্যন্ত আমাদের গ্যাসের সরবরাহ রয়েছে।

"এলএনজি যদি না আনতাম তাহলে তো বিপদে আরো আগে পড়তাম। কারণ কোনো গ্যাসই থাকতো না দেশে। এলএনজি আনার কারণে দশ বছর পর্যন্ত আমাদের গ্যাসের সরবরাহ রয়েছে।"

ওদিকে পস্কো-দায়ু (Posco-Daewoo) দুটো ফিল্ড নিয়েছিলো. মিয়ানমারে কাজ করছিলো। আমরা বললাম যে, "তুমি এক কাজ করো। তুমি আমাদের এখান থেকেও... কারণ মিয়ানমারের পাশাপাশি তো, কম খরচে অনুসন্ধান করা যায়।" আর এটা ভাগ করার একটা ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড আছে। আমি বলি 'ইউনিটাইজেশন'। তখন তারা এসে আমাদের সাথে চুক্তি করলো। চুক্তি করে ওদের কিছু টার্মস রিল্যাক্সেশন করলো। সবাই বলছিলো বার্মায় পাওয়া গেলে এখানে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বছর দু-এক পরে এসে বলে, "আমরা আর করবো না।" এখন করবো না কী কারণে সেটা তারা জানে। রেলিংকুইশ করে দিলো। কিন্তু আপনারা এটা জানবেন যে অনেকে বলে যে মিয়ানমারে এই গ্যাস পাচ্ছে, সেই গ্যাস পাচ্ছে। কিন্তু গত দশ বছরে মিয়ানমার একটা কূপে এক্সপ্লোরেশন লেভেলে কোনো গ্যাস পায়নি। আগে পেয়েছিলো যেটা, সেটার কিছু গ্যাস চলে গিয়েছিলো কুনমিং। সেই গ্যাসটাই কিন্তু বাংলাদেশে আনার চেষ্টা হয়েছিলো। খালেদা জিয়ার (বেগম খালেদা জিয়া, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) সময় অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে এটা একটা প্রস্তাব ছিলো যে মিয়ানমার থেকে গ্যাস এনে বাংলাদেশ হয়ে এটা ভারতে যাবে। আমরাও কিছু ভাগ পাবো। সব দেশের মধ্যে এটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছিলো। কিন্তু যখন এটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেল, উনি এটা নাকচ করে দিলেন। তখন তো মিয়ানমারের খুব একটা উন্নতি হয়নি, মানে বিদ্যুতের ব্যবহার অনেক কম ছিল। সেজন্য, তখন যদি গ্যাসটা আনতাম তাহলে আজকে অনেক কিছুতে লাভবান হতাম। এছাড়াও আমি যখন এই অং সান সুচির আগে, যখন মিলিটারি গভর্নমেন্ট, রোহিঙ্গারা বিতাড়িত হচ্ছে, তারা আমাদের দেশে শরণার্থী হয়ে আসছে, তখন আমি গিয়েছি মিয়ানমারে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ এটা কোন সালের কথা?

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: ইলেকশনের আগে। সুচি গভর্নমেন্ট আসার আগে গিয়েছি। আবার আসার পরেও গিয়েছি। রোহিঙ্গা ইস্যু তখন অলরেডি শুরু হয়েছে। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন যে, "আমরা অন্তত চেষ্টা করে যাই, অন্যরকম কোনো সহযোগিতা হলে মানুষের মধ্যে হয়তো ট্রাস্ট বিল্ড আপ হয়। তখন তারা হয়তো মিসট্রাস্টের ভিত্তিতে যে অ্যাক্ট করছে তা হয়তো শোধরাবে।" তো আমি গিয়েছিলাম। গিয়ে মিলিটারি গভর্নমেন্ট-এর সময় বললাম যে, "দেখেন আপনাদের এখানে কিছু গ্যাস আছে শুনেছি। সেই গ্যাসটা যদি আপনি চট্টগ্রামে আনেন, তাহলে আমরা চট্টগ্রাম থেকে আরাকানে বিদ্যুৎ সাথে সাথে দিতে পারবো।" আমি ম্যাপও করে নিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আমাদের তখন চিটাগংয়ের কিছু প্লান্ট বসে ছিল। আর আরাকানে আমি কিছু লাইনও ড্র করে নিয়ে গিয়েছিলাম। আরাকান এটা পাহাড় তো, পাহাড়ের পশ্চিমে হলো আরাকান। তারা যদি নিজেরা আনতে চায় তাহলে পাহাড় ঘুরে বা পাহাড়ের উপর দিয়ে আনতে হবে, অনেক খরচ এই বিদ্যুতের লাইন আনতে। আরাকানে একটা বিষয় ছিলো যে ডিসক্রিমিনেশন হচ্ছে। তো সেজন্য আমরা বললাম যে, "এটা যদি করো, আমরা দুই বছরের মধ্যে আরাকানে বিদ্যুৎ দিব।" ওইসময় আমরা বললাম, "আমাদের যে সোলার হোম সিস্টেম, এটার ১০ হাজার ইউনিট এমনি বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে দিতে চাই। তারা ইমপ্রেসড হলো।" বলল যে, "আমরা টিম পাঠাবো, দেখি।" তারপর তো তাদের ইলেকশন চলে এলো, ইলেকশন যাওয়ার পরে ওই সরকার চলে গেলো। অং সান সুচি যখন এলো তখন আবার গেলাম। যেয়ে বললাম। কথাটা শুনলেন। উনাদের মিনিস্টার ছিলো সেখানে। কিন্তু, আই ডোন্ট নো, হোয়াই এটা সম্বন্ধে খুব উৎসাহ দেখালেন না। যাই হোক, আমরা ফেরত চলে আসলাম। তখনও কথা হয়েছিলো যে, একটা টেকনিক্যাল টিম আসবে, আসেনি।

মানে আমি যেটা বলতে চাচ্ছি যে, We have left no stone unturned...যাতে আমাদের দেশে গ্যাস সরবরাহ ডাইরেক্টলি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু Wishes are not horses. চাইবেন আর হয়ে যাবে। আমি তো দেখালাম, আমরা কূপ করে, কতখানি গ্যাস পেয়েছি।

আমরা উন্নতি অর্জন করেছি এবং আমাদের অপরচুনিটি কস্ট দিয়ে আমরা হিসাব করে দেখেছি, এলএনজি আনা আমাদের জন্য, তখনকার দামে গ্রহণযোগ্য ছিলো। এখন আপনি বলবেন, এখনকার দাম। এখনকার দাম আপনার আকাশচুম্বী। আমরা স্পটমার্কেটে পাঁচ ডলারে পর্যন্ত কিনেছি। এখন চল্লিশ ডলার। এখন এত বড় এই দামের বিভেদ। এতে আমাদের যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা লাগবে, এবং ইনফ্যাক্ট বাজারে যেটা এভেইলেবল সেটাও বলা যাবে না। We have been priced out of the market. ইউরোপ থেকে বিভিন্ন জায়গায় যেয়ে এরা এলএনজি নিচ্ছে। ইনফ্যাক্ট আমাদের আরেকটা করার কথা ছিলো। সেই জাহাজটা জার্মানি নিয়ে নিয়েছে।

তো সেইজন্য এখন এই পরিস্থিতিতে আমাদের যেটা করণীয়, সেটা হলো আমাদেরকে ধৈর্য্ ধরে সবাই মিলে কাজ করতে হবে। আর 'পয়েন্টিং ফিঙ্গার', এটার যেখানে কোনো ভিত্তি নাই, সেটা করা যাবে না।

বাংলাদেশে অন শোরে...রিসেন্টলি ভোলার কাছে একটা ছোট্ট ফিল্ড পেয়েছি। ভোলার কাছে নর্থে কিছু কিছু এক্সপ্লোরেশন চলছে। এখন একটা ফিল্ড পাওয়া অর্থ আর্ন কতখানি করতে পারে। একটা ফিল্ড পেলাম, এটা যদি ২০ এলএমসিএফটিও হয় দিনে, তাও তিন হাজারের তুলনায় কতটুকু বাড়লো, এটা তো বুঝতে হবে। যে আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় কতখানি, এক একটা ফিল্ডে পাচ্ছি। আপনি শুনবেন, ভোলায় বিরাট গ্যাসফিল্ড আছে। অপটিমিস্টিক্যালি হলো ১ টিসিএফ গ্যাস আছে। সেটা আমাদের এক-দেড় বছরের গ্যাসের সমান। তবু আমরা ভোলাতেই কিন্তু পাওয়ার প্লান্ট করেছি, যাতে গ্যাসটা যেটুকুন আসে ব্যবহার করার জন্য। এবং আমরা হাতে নিয়েছি একটা প্রকল্প, God willing আমরা পায়রা সাইড দিয়ে একটা এলএনজি ইনজেক্ট করবো। করে একটা ফ্যাসিলিটি করবো, infrastructureটা করবো। করে ওটাকে ভোলার সাথে কানেক্ট করবো। যদি ভোলা থেকে গ্যাস ভালো পাই আমরা, সেই পরিমান কম ইম্পোর্ট করবো। এই গ্যাসকে আমরা নিয়ে যাবো খুলনা পর্যন্ত। খুলনায় নিয়ে গেলে খুলনায় আমাদের পাইপলাইন আছে, খুলনা থেকে উত্তরবঙ্গ পর্যন্ত। তাহলে আমরা ওই গ্যাস দিতে পারবো খুলনায়, যেগুলো অয়েলবেসড পাওয়ার স্টেশন, সেগুলো রিপ্লেস করবো। আর ওদিকে নর্থে উন্নতিও করতে পারবো।

এখন এলএনজি আমি যখন রিপ্লেস করবো, আমাকে দেখতে হবে কী? যে খুলনায় যেগুলো ডিজেল পাওয়ার প্লান্ট, ভেড়ামারায় যেসব ডিজেল পাওয়ার প্লান্ট সেগুলোকে যদি আমি কমদামে, সাশ্রয়ী মূল্যে দিতে পারি তাহলে তো আমার লাভ হচ্ছে। ইনডেপেন্ডেন্টলি কোনো প্রাইসিং হয় না। সেজন্য আমরা পারস্যু করছি। কিন্তু আপনাদের মাধ্যমে আমি যেটা বলতে চাই যে, ইউক্রেন যুদ্ধ যদি না বন্ধ করা হয়, তাহলে এই দেশে, সারা পৃথিবীতে একটা বড় সমস্যা। আমাদের কথা ছেড়ে দেন, আপনি জানেন বিলেতে আজকাল প্রাইস বাড়ছে। ফুড এবং ফুয়েলের মধ্যে একটা কম্পিটিশন শুরু হয়েছে। It's not worth taking this risk. You know, western powers are such intelligent bunch of people. তারা এটা করতে পারবে না? বলা হলো, আমাদেরকে রাশিয়া কলাপ্স করে যাবে, রাশিয়া কোথায় কলাপ্স করেছে. বরং আয় আরো বাড়ছে। তেলের দাম বাড়ছে, সে কম বেচে বেশি দাম পাচ্ছে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করার ক্যাপাসিটি বাড়ানো হয়নি ফলে সংকটকালীন মজুদ রাখার সুযোগ তৈরি হয়নি। তেল পরিশোধনের ক্যাপাসিটি বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: আমরা অলরেডি একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। আমাদের চট্টগ্রামে যে রিফাইনারি আছে, সেটার ক্ষমতা বাড়ানোর। প্রায় দ্বিগুণ করার জন্য। এটার টেকনিক্যাল স্টাডি হয়ে গিয়েছে। এবং সেটা হলে, তেল শোধনাগার হলে, স্টোরেজ খুব একটা বাড়ে না। এটাও মনে রাখতে হবে যে, রিফাইনড অয়েলের সাথে ক্রুড অয়েলেও দাম বাড়ে। সুতরাং এটা দিয়ে আপনি কান্ট সলভ ইয়োর প্রবলেম বাট একটা অপশন তৈরি হয়। রিফাইনড অয়েল না পেলে আমি ক্রুড অয়েল আনবো। কিন্তু যদি বলা হয় যে ক্রুড অয়েল রিফাইন করলে আমার অবস্থার উন্নতি হয়ে যাবে বা বিরাট স্টোরেজ হবে...এটা ঠিক না। আমরা ক্রুড অয়েল যখন রিফাইন করি, রিফাইন করার সাথে সাথে আমাদের মার্কেটিং কোম্পানির মাধ্যমে বাজারে নিয়ে যেতে হয়। ইনফ্যাক্ট যদি অফটেক না হয় তাহলে রিফাইন হতে সমস্যা হয়। আমাদের সারাদেশে সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ দিনের ফুয়েল রিজার্ভ আছে। এটাকে বাড়িয়ে হয়তো ৩৫ দিন করা যায়। But it is not going to make a material difference.. আমি মনে করি ক্রুড অয়েলের এক্সপ্যানশন করা হোক, করছি আমরা। সেই সাথে আমাদের চিন্তা করা লাগবে যে, আমরা যে ক্রুড অয়েল আনি সেটা ডাইভারসিফাই করা যায় কি না। কারণ আমরা স্টাক উইথ অ্যা পার্টিকুলার কাইন্ড অফ ক্রুড অয়েল। তো মোটা দাগে উত্তর দিলাম যে, আমরা এটা করছি এন্ড it will take some time। এই প্রজেক্টে অনেক পয়সা (খরচ হচ্ছে), প্রায় দুই-তিন বছর ধরে। এছাড়াও আমরা মিডল ইস্টে বিভিন্ন দেশের সাথে কথা বলেছিলাম যে, "তোমরা এখানে এসে রিফাইনারি করো।" কুয়েতের সাথে কথা হয়েছে, সৌদি আরবের সাথে কথা হয়েছে, "তোমরা আমাদের এখানে এসে রিফাইনারি করো, আমাদের দাও আর প্লাস যদি তোমরা এক্সপোর্ট করতে চাও করো।" তাতে হয় কি, ওরা যদি রিফাইনারি করে তাহলে আমি ক্রুড অয়েল সম্বন্ধে শিওর হই। কারণ ওরাই ক্রুড অয়েল তৈরি করে। আমি গিয়েছি কুয়েতে কথা বলেছি। আমাদের প্রতিমন্ত্রী গিয়েছেন, সৌদি আরবে কথা হয়েছে। সৌদি আরবের টিম এসেছিল, তাদের সাথে কথা বলেছি যে, "তোমরা করো।" একটা বড় আকারে করলে লাভ হয় কী, যেহেতু ক্রুড তাদের। তারা রিফাইন করবে। আর আমরা বলছি, "আমাদের কিছু দাও। তুমি ইস্ট এশিয়ার জন্য একটা স্ট্র্যাটেজিক এখানে রিজার্ভ করতে পারো।" শুনেছে তারা। I'm still hoping that at some point they will come. যদি শুধু তেল না হয়, পেট্রোক্যামিক্যাল কমপ্লেক্স হতে পারে। যাতে আরো ডাইভারসিফাইড প্রোডাক্ট আসে।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ রিনিউয়েবল জ্বালানি, যেমন সৌরবিদ্যুৎ ইত্যাদি খাতে আপনাদের আমলে কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে? বর্তমানে মোট বিদ্যুতের শতকরা কতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে আসে, এনিয়ে আপনাদের স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা কী?

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: ওই কথা এসে যায় যে বাংলাদেশের জমি খুব কম। একটা উদাহরণ দিলে বুঝবেন, বাংলাদেশের যে ডেনসিটি, সেই ডেনসিটি যদি আমেরিকায় হতো, তাহলে আমেরিকা সারা পৃথিবীর পপুলেশনকে যোগ দিলে রাখতে পারতো অ্যান্ড অ্যানাদার ফিফটি পার্সেন্ট। ক্যান ইউ ইমাজিন দ্য ডেনসিটি... এখানে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলেন যে, "ঠিক আছে যেহেতু আমাদের জমি উর্বরা, আমরা খাদ্য উৎপাদন করবো", আমরা মোটামুটি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, মাছে ভাতে বাঙালি বলা হয়। মাছও আছে, সবজি-তরিতরকারি হচ্ছে অনেক। সেজন্য আমরা জমিকে আমাদের সবচেয়ে বেশি মূল্যবান সম্পদ মনে করি। জমির স্বল্পতার কারণে এবং যেহেতু সোলার রাত্রে থাকে না এবং ইউটিলিটি লেভেলের কোনো স্টোরেজের আবিষ্কার হয়নি। হাইড্রোজেন যদি আসে সেটা হতে পারে। যদি ভালো ব্যাটারি আসে, সেটা হতে পারে।

আমি ফিরে যাই আন্ডার সেক্রেটারি সাহেবের সাথে কথায়। আমরা তাকে বললাম যে, "আমরা বিভিন্ন রকম নতুন প্রযুক্তি যেটা, আমাদের যেহেতু জমির এতো অভাব, আমরা সোলার করলে কিছু ফুয়েল সেভ হবে।" ক্যাপাসিটির উপর কোনো লাভ হবে না। কারণ রাত্রে আমার ক্যাপাসিটি লাগবে। দিনের বেলা আমি যদি ইউজ করি, তাহলে ফুয়েল কিছু সেভ হবে। কিন্তু সম্প্রসারণের আমাদের যে সীমাবদ্ধতা, আমরা নিজেরা কী কী করেছি আর করলাম... দেখেন আমরা সারা দেশে যখন বিদ্যুৎ ছিলো না, তখন সোলার হোম সিস্টেম করেছিলাম। প্রত্যেক বাড়িতে ছোট্ট একটা প্যানেল লাগিয়ে ব্যাটারি দিয়ে ফ্যান আর বাতি জ্বালানো, কখনও হয়তো ছোটখাটো টেলিভিশন চলতে পারে। ৫ থেকে ৬ মিলিয়ন ছিল। এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন যে, "দেখেন আমরা বিদ্যুতায়ন করার জন্য গ্রামকে তো ছেড়ে দিতে পারি না।" সো এটা প্যারালাল প্রসেসিং ছিলো। যেসব জায়গায় তখন গ্রিড ছিল না, ২০০৯ সালে। সেসব জায়গায় আমরা সোলার হোম সিস্টেম করি। সোলার হোম সিস্টেম কিন্তু একটা জাস্ট ৬ মিলিয়ন হলে আপনি ৫ দিয়ে গুণ করেন। একটা বাড়িতে যদি ৫ জন যদি হয়, ৩০ মিলিয়ন ৩০ মিলিয়ন মানে নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্কে সব বাড়ি যদি সোলারে চলতো তাহলে সেই পরিমান আমরা চালিয়েছি। আস্তে আস্তে গ্রিড এক্সপান্ড হলো। সুতরাং মানুষ তো চায় ২৪X৭ ভালো ইলেকট্রিসিটি পাবে। দিনভর কাজ করতে পারবে। তো সেজন্য এখনকার পরিস্থিতি থেকে যেটা শিক্ষনীয় যে, ঠিক আছে দিনের বেলা হলেও যদি সোলারের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে ফুয়েল এন্ডে ক্যাপাসিটি রাখতে হবে। ফসিল ফুয়েল হোক যে ফুয়েল হোক আপনাকে চালাতে হবে। আমরা এটা করেছি নেট মিটারিং করে। যেসব বড় বড় ছাদ আছে, শিল্পের ছাদ। তাদেরকে বলেছি, "তোমরা ছাদে প্যানেল লাগাও। তাহলে জমি লাগলো না। এবং সেটা হলে আমরা বলেছি তুমি যে বিদ্যুৎটা উৎপাদন করবা সেটার জন্য তুমি ক্রেডিট পাবা। তুমি যদি দশ ইউনিট নাও আমাদের সিস্টেম থেকে, আর যদি দুই ইউনিট তুমি নিজে তৈরি করো তাহলে আট ইউনিটের জন্য পয়সা দিবা। এবং তোমার উইকএন্ডে বিদ্যুৎ দিচ্ছো, যখন তোমার শিল্প বন্ধ থাকে।" এটা তাদের জন্য অ্যাট্রাকটিভ। সেজন্য এই নেট মিটারিংয়ে বেশ শিল্প আগ্রহী হয়ে করেছে। আমিও দুই একটা নিজেই উদ্বোধন করেছি। সমস্যা হলো যে, শিল্পোদ্যক্তাদের জন্য এটা বাইরের কাজ। এটা বসাও, করো। তাদের যে শিল্পে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ তার সাথে এটা অতো অ্যাট্রাকটিভ না। এজন্য আমরা কোম্পানী করেছি। বললেই হবে যে, "ভাই এটা করে দেন।" অনেক কোম্পানী বলে, "আপনাকে এটা করে দিবো, যেটা লাভ তার অর্ধেক আমাকে দিবেন।" এরকম বিভিন্নরকম কন্ট্রাক্ট হচ্ছে। এটা বেশ হচ্ছে।

আমরা নদীতে বা ওয়াটার বডিতে করা যায় কিনা সেটার চেষ্টা করছি। কিছু কিছু পাইলট প্রজেক্ট আমরা হাতে নিয়েছি। তারপর আমি নিজেও চেষ্টা করেছিলাম, ক্ষেতের মধ্যে যদি প্যানেল লাগাতে পারি। এটা পাইলট প্রজেক্টে আমরা সাকসেসফুল। কিন্তু এটাকে স্কেইল আপ করা ডিফিকাল্ট হযে গেছে... আপনার ১০ মেগাওয়াটের জন্যও তো দুই- তিন শ ফার্মারের সাথে যোগাযোগ করতে হয়েছে। তাদের সাথে কন্ট্রাক্ট করা, তাদেরকে দিয়ে এগুলো ব্যবহার করা, এগুলো নিয়ে বহুরকম ম্যানেজমেন্ট। এখন আরেকটু অন্যভাবে আমরা সোলার ইরিগেশনের চেষ্টা করছি। যাতে কৃষিখাতে যদি দিনের বেলা লাগে, দিনের বেলা দিলেই হয়। এখন কৃষিকাজে যদি সোলার ইরিগেশন করতে পারি, তাহলে আমাদের হিসাবে বল পার্ক ফিগার, অ্যাবাউট হাফ মিলিয়ন ডলার হোক, ফুয়েল ইম্পোর্ট, ডিজেল লাগবে না। তো এখন এটার উপর জোর দিয়েছি। পাঁচ-ছয়ভাবে এটার পাইলট হচ্ছে। আমরা এটাকে সমন্বিত একটা পলিসির মধ্যে নিয়ে আসছি এখন।

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ সরকার বিপুল ভর্তুকি দিয়েছে, কোনো কোনো রিপোর্ট-এ এই ভর্তুকি ৯৩ হাজার কোটি টাকা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ক্যাপাসিটি চার্জের বিষয়টি চুক্তিতে রাখার কারণ কী ছিল? এখন কী এই চুক্তিগুলো পরিবর্তনের কোনো সুযোগ আছে? ভবিষৎতেও কী চুক্তি করার সময় এই ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়ার বিষয়টি থাকবে?

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: আমাদের তো লোড আসে রাত্রে। রাত্রে তো আমাকে রাত্রের জন্য ব্যবস্থা করতেই হবে। সুতরাং সেই ক্যাপাসিটি, রাত্রে হয়তো ১৫ হাজার মেগাওয়াট। দিনে নেমে আসে ১০ হাজার মেগাওয়াটে। তো আমাকে ওই ক্যাপাসিটি রাখতে হবে ১৫ হাজার মেগাওয়াটের। নাহলে তো আমি ওই সময়ে দিতে পারবো না। তারপরে দরকার হলো ফুয়েল যদি থাকে। অনেকে বলেন আপনার আইডল ক্যাপাসিটি। যখন ১৫ হাজার হবে তখন কোত্থেকে পাবেন। সো ক্যাপাসিটি হ্যাজ টু বি দেয়ার ইন দ্য কান্ট্রি। না হলে, বললেই তো ১৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করা যাবে না। সারা পৃথিবীতেই ক্যাপাসিটি বেশি রাখা হয় দুই কারণে। একটা হলো আমি যেটা বললাম, সেটা হলো পিকে, এছাড়া ধরা হয় যেটা স্পিনিং রিজার্ভ রাখা হয়। যখন একটা সিস্টেম চলছে, দশ পার্সেন্ট রাখতে হয়। কোনখানে যদি কোনো প্লাগ বসে যায়, গ্রিড যেন ফেইল না করে। এনাদার ফিফটিন পার্সেন্ট চলে যায় মেইনটেনেন্সে, রিপেয়ারে। তো ধরেন, ২৫ পার্সেন্ট চলে গেলো। তাহলে জাস্ট হিসাবের জন্য ২ হাজার মেগাওয়াট ধরি, তাহলে ২৫ পার্সেন্ট চলে গেলো আমার এভাবে। তাহলে আমাদের নিজেদের যে বর্তমান ক্যাপাসিটি, জাস্ট এবাউট সাফিসিয়ান্ট টু টেক কেয়ার অব মেইনটেনেন্স এবং আমাদের স্পিনিং রিজার্ভ রেখে। বারবার যে খবরের কাগজগুলোয় বলা হয়, এত ক্যাপাসিটি রাখা হয়েছে। আমি মনে করি যারা বলছে তারা এই ইন্ডাস্ট্রি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল না। বলা হয় যে ক্যাপাসিটি চার্জ এত দেয়া হচ্ছে। এখন ক্যাপাসিটি যদি রাখেন সে আমরাই করি আর বেসরকারি খাতই হোক এর তো একটা ব্যয় আছে। এই আইডল বসে আছে, ব্যয় আছে। সেই ব্যয় কী? আপনার যে বিনিয়োগ হয়েছে সেই ব্যয়। নিজেদের খাতায় হয়তো পরিষ্কার দেখা যায় না একবারে, কিন্তু প্রাইভেটের সাথে যখন চুক্তি করা হয়, সারা পৃথিবীতে, আমাদের দেশে শুধু না। বিনিয়োগের জন্য একটা পেমেন্ট দেয়া হয়। এটাকে বলা হয় ক্যাপাসিটি চার্জ। আর সে চললে তার জন্য একটা আলাদা একটা ফুয়েল কস্ট এ্যাড করা হয়। সুতরাং ক্যাপাসিটি চার্জ, এটা যেকোন রকম বিনিয়োগে আপনাকে দিতে হবে। কারণ আপনি চাচ্ছেন যে আপনি যখন চাইবেন, সেটা এভেইলেবল হবে।

"ক্যাপাসিটি চার্জ, এটা যে কোনরকম বিনিয়োগে আপনাকে দিতে হবে। কারণ আপনি চাচ্ছেন যে, আপনি যখন চাইবেন, সেটা এভেইলেবল হবে।"

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ জ্বালানি ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আপনারা কী ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন?

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কথা তুলেছিলেন যে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা। খুব তাড়াতাড়ি করে আমরা এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারত থেকে এনেছিলাম। খুব বেশি ক্যাপাসিটি বাড়ানো যায় না। আমাদের যে স্টেশন আছে, সেখানে আমরা বিদ্যুৎটা রিসিভ করি। ওখান থেকে আরো এক দেড়শো বাড়ানো হয়েছে। আর ত্রিপুরার সাইডে, বাংলাদেশের পুবদিকে, একটা কানেকটিভিটি করা হযেছে। ওখানেও দেড়শ, দুইশ মেগাওয়াট আসে। তো এটাই প্রথম আমরা ইন্টার কানেকটিভিটি করলাম, এই রিজিওনে।

এরপরে যেটা আরো হয়েছে, আদানিরা ঝাড়খন্ডে একটা কোল (coal) পাওয়ার প্লান্ট রান করছে। সেটার বিদ্যুৎটা ডাইরেক্ট আসবে বাংলাদেশে। ঐ লাইনটাই ডেডিকেটেড টু বাংলাদেশ। এবং এটা অলমোস্ট কমপ্লিট। আমরা আশা করছি, এই বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে ওখান থেকে বিদ্যুৎ আসবে। এটা একটা বড় উদ্যোগ।

তাছাড়াও কথা হয়েছে যে, গুজরাত বা ওখানে অনেক মরুভূমি, তাদের সোলার পাওয়ার, উইন্ড পাওয়ার অনেক। জমির কোন খরচ নাই। ওখান থেকে যদি আমরা কিছু সোলার পাওয়ার আনি, উইন্ড পাওয়ার আনি... সোলার আর উইন্ড মিললে কিন্তু অনেকটা, উইন্ড ইস অ্যা কাইন্ড অফ ব্যাটারি। রাত্রে উইন্ড বেশি আসে। সেজন্য সোলার, উইন্ড মিললে অনেক সময় পিক আওয়ারেও ধরা যায়। আর গুজরাতের সাথে আমাদের টাইম ডিফারেন্স আছে ঘন্টা দুয়েক। তাতে পার্ট অফ দি পিক আওয়ার ধরাতে পারি। সেজন্য একটা আলোচনা হচ্ছে। তারা গুজরাতে উইন্ড এবং সোলার মিক্স করে পাঠাবে বাংলাদেশে। ওদের নিজেদের যে লাইন করছে সেটায় সেই সক্ষমতা আছে, ৫০০-১০০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করার।

আর হাইড্রোপাওয়ার নিয়ে আমাদের আমাদের নেপাল, ভুটানের সাথে আলাপ হচ্ছে। আমরা নেপালের একটা প্রকল্পে এমওইউ সই করেছি। গ্রিড নিয়ে যেগুলো সীমাবদ্ধতা ছিলো সেগুলো এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অফ বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, নেপাল, ভুটান মিলে মোটামুটি সমাধান হয়ে গেছে। ওটা হলে আমাদের কমপ্লিমেন্টারি গ্যাস। নেপালে যখন বা ভুটানে যখন বেশি বিদ্যুৎ লাগবে, যখন তাদের সব জমে-টমে যায় বরফে, তখন আমাদের শীতের সময়, আমাদের এক্সেস থাকবে। আমরা পাঠাতে পারবো। আবার যখন গ্রীষ্মকালে তাদের অনেক বেশি উৎপাদন তখন আমাদেরও প্রয়োজন বেশি। এজন্য কমপ্লিমেন্টারি থাকার কারণে আমরা আগ্রহী, তারাও আগ্রহ দেখিয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমি মনে করি যে এটাও সম্ভব হবে। একটু সময় লাগবে। যে কোন জিনিসে একটু ধৈর্য্য ধরতে হয়। একটা জিনিস এক বছরে করা যায়, আরেকটা জিনিস পাঁচ বছরে করতে হয়, আবার আরেকটা জিনিস হয়তো দশ বছরে করা যায়। যত দূরে যাবেন, তত আনসার্টেনিটি বাড়তে থাকে।

"একটা দেশ তো গ্রোইং কনসার্ন, আপনি এটাকে নিয়ে কোনো এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবেন না।"

একটা দেশ তো গ্রোইং কনসার্ন, আপনি এটাকে নিয়ে কোনো এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবেন না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে কারণে, She is focused on outcome...এই করলাম, এটা কী লাভ হবে, মানুষের কী উপকার হবে, মেয়েদের কী উপকার হবে, বাচ্চাদের কী উপকার হবে, যারা গরীব তাদের কী উপকার হবে। ওখান থেকে এগুলোর সলিউশন আসে। সে কারণেই কিন্তু আমি যে বললাম আগে, মাথাপিছু আয়ের সাথেসাথে দেশের সাধারণ মানুষের কোয়ালিটি অফ লাইফ ইমপ্রুভ করেছে, তুলনামূলকভাবে। আপনি যে কোন সময়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ডাটা নিয়ে গুগল করে দেখবেন আমাদের ইনডিসেসগুলো... আমরা পিয়ার কান্ট্রিজের চেয়ে ইনকামে না যতবেশি, অনেক বেশি এগুলোর ব্যাপারে। লাইফ এক্সপেন্সি বলেন, ম্যাটারনাল মর্টালিটি, চাইল্ড মর্টালিটি বলেন, মেয়েদের এডুকেশন, এক্সেস টু ড্রিংকিং ওয়াটার বলেন, স্যানিটেশন বলেন।

তবে, আমি যোগ করবো, still a long way to go. আমরা যেটা চেয়েছিলাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটা চেয়েছিলেন আমরা মধ্যম আয়ের দেশে যাবো ২০৩০-এ। ২০৪০ এ আমরা উন্নত দেশের কাতারে যাবো। এই ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে কিন্তু এটা অব্যাহত ছিল।

আমি আর একটা ছোট্ট উদাহরণ দিয়ে বলতে চাই, ইউক্রেন যুদ্ধ যদি না হতো, এই তেলের দাম, এলএনজির দাম যদি না বাড়তো তাহলে কিন্তু সারাদেশে বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যবস্থা আমাদের ছিল। সারাদেশে বিদ্যুতে সয়লাব করে দিতাম। গ্রামে-গঞ্জে মানুষ বিদ্যুতের ব্যবহারে অনেক আগ্রহী হয়েছে। মেয়েরা গ্রামেও রাইসকুকার ব্যবহার করে। আমরা নিজেরা চিন্তা করছি যে আমরা স্কিপ করতে পারি কিনা, রান্না করার যেসব কনভেনশনাল ব্যবস্থা আছে, সেগুলো স্কিপ করে একবারে ইলেকট্রিসিটিতে যেতে পারি কিনা। আমেরিকায় যেমন আগে গ্যাস ব্যবহার করা হতো এখন ইনডাকশন কয়েল-টয়েল ব্যবহার করে। আমরা হিসাব করে দেখেছি যে, যদি আমরা প্যাকেজিং ভালো করে করতে পারি, তাহলে গ্রামে-গঞ্জে আমরা বিদ্যুৎ দিয়ে পাক করাবো। মেয়েদের, মায়েদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে, সময়ের সাশ্রয় হবে। এই প্ল্যানগুলো কিন্তু হোস্টেজ টু অ্যান = এক্সটার্নাল ফ্যাক্টর। আর কিছু না। আপনি কালকে তেলের দাম কমিয়ে দেন, টু বি লো স্ট্রেস অন বাংলাদেশ ইকোনমি। We will be fying with pride.

"ইউক্রেন যুদ্ধ যদি না হতো, এই তেলের দাম, এলএনজির দাম যদি না বাড়তো তাহলে কিন্তু সারাদেশে বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যবস্থা আমাদের ছিল। সারাদেশে বিদ্যুতে সয়লাব করে দিতাম।"

সুতরাং আমি অনুরোধ করবো আমাদের দেশে যারা আছেন তাদের এই দেশটাকে ভলোবেসে তার জন্য চিন্তা করতে হবে। একেক জায়গায়... একজন আমি বললাম অর্থনীতিবিদ, আরেকজন বললাম ভূতাত্ত্বিক, আরেকজন বললাম এনার্জি স্পেশালিস্ট। যার যার সাইলো থেকে দেখলে তো হবে না। একটা দেশকে পরিচালনার জন্য যে জিনিস দরকার। আপনি দেখেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দশ বছর আগে থেকে যেখানে গিয়েছেন, বক্তৃতা, পাবলিক স্পিচে বলেছেন যে, "আপনারা লাইট অফ করে দেবেন যখন না থাকেন, ফ্যানটা অফ করে দেবেন।" এটা কিন্তু বিহেভিয়েরাল চেঞ্জের কথা বলেছেন, আমাদেরকে রেসপন্সিবল হওয়ার জন্য বলেছেন। পৃথিবীর রিসোর্স ব্যবহারে এফোরডিবিলিটি ইজ নট দি ক্রাইটেরিয়া। আজকে আপনি শুনবেন, জার্মানিতে কথা হচ্ছে রেসপনসিবল হওয়ার জন্য। কাট করো কাট কনজাম্পশন, আজকে ব্রিটেনে কাট করার কথা হচ্ছে। দশ বছর আগেই আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। সেটাকে নিয়েই, পৃথিবীতে আমি যেখানে গেছি রেসপন্সিবল এনার্জি ইউজ নিয়ে আমি বলেছি। এটার দাম ধনী হলে দিতে পারবে আর গরীব হলে দিতে পারবে না সেটা না। এ এনার্জি ইউজের সাথে পৃথিবীর রিসোর্সেস রিলেটেড। আপনি কতখানি ফার্টিলাইজার দেবেন, কতখানি পানি ব্যবহার করবেন, যদি পানি ব্যবহার কম করেন কৃষির জন্য, তাহলে এনার্জি ইউজ কম হবে। যদি ফার্টিলাইজার কম ইউজ করেন তাহলে এনার্জি ইউজ কম হবে।

"মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দশ বছর আগে থেকে যেখানে গিয়েছেন, বক্তৃতা, পাবলিক স্পিচে বলেছেন যে, "আপনারা লাইট অফ করে দেবেন যখন না থাকেন, ফ্যানটা অফ করে দেবেন।" এটা কিন্তু বিহেভিয়েরাল চেঞ্জের কথা বলেছেন, আমাদেরকে রেসপন্সিবল হওয়ার জন্য বলেছেন।"

পৃথিবীতে যত খাবার নষ্ট হয়, এ খাবার দিয়ে সারা পৃথিবী খেতে পারবে। নুতন প্রজন্ম যারা আসছে তারা এগুলোর ব্যাপারে অনেক আগ্রহী। একটা গ্লোবাল ভিউ লাগবে। বিচ্ছিন্নভাবে উন্নতি কেউ করতে পারবে না। ডেভেলপড কান্ট্রিও পারবে না। দেয়ার ইজ অ্যা লিমিট। কিন্তু আমরা যদি কো-অপারেট করি, আমাদের মধ্যে যদি বিদ্বেষ কমাই, সংঘাত কমাই, আমি যদি দায়িত্বশীল হই। এখন যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং, এটা তো সামনে আসছে। আরো অনেক বিপদ সামনে আছে। পানি নিয়ে যুদ্ধ হবে। স্পেস নিয়ে হবে। এখনই যদি আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক ও সংযমী না হই। There is no pride in wasting resources. There may be little pride in saving resources. আমি অল্প দিয়ে কত ভালো থাকতে পারি। We cannot cater for unlimited consumption of all countries in the world.

আমার ছোট মুখে বড় কথা, আমি বলি বিশ্বের ধনী দেশগুলোর চিন্তা করার সময় এসেছে, কিভাবে আমরা একই জায়গায় থেকে সমভাবে, একটা সবার মধ্যে ভালোবাসা, রিসোর্স, এগুলো নিয়ে ভাল থাকতে পারি। ইকোনমিকস-এ স্টেডি স্টেট বলে একটা কথা আছে। গোল্ডেন রুল, স্টেডি স্টেট। এমন একটা জায়গায় যাবে, বাড়বেও না, কমবেও না। কিন্তু সবাই মিলেমিশে। সেলফিশ হয়ে গেলে আর সেটা হয় না। সেলফিশ হয়ে গেলে এক সময় না এক সময় বিপদে পড়তে হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শিতা নিয়ে এই যে এনার্জি রেসপন্সিবিলিটির কথা বলেছেন... আজকে জার্মানি বলছে, ভলান্টারি কাট থ্রু রেসপন্সিবল ইউজ। সাংহাইয়ের মতো জাযগায় বাতি অফ করে দেয়া হয়েছে। বাঁধের পাড়ে যে বড় বড় বিল্ডিং ছিলো, রাত্রে সুশোভিত থাকতো, কোনো দরকার নেই। পৃথিবীতে এত বিদ্যুৎ এবং এনার্জি অপচয় হয়... বড় বড় শহরে রাতভর বাতি জ্বলছে। কোন দরকার নেই। সিকিউরিটির জন্য আপনি নাইটভিশন ক্যামেরা লাগাতে পারেন। এটা ভালো লাগে যে অনেক বাতি জ্বলছে। এটাও ঠিক যে, ভালো লাগে, বাতি না থেকে যদি চাঁদ ওঠে। সুতরাং এই দুটোকেই বুঝতে হবে। প্রয়োজনের বাইরে অন্ধকারের সাথে যুদ্ধ করার দরকার নাই। অন্ধকার যেটুকু আমাদের জীবনে আছে সেটাকেই দূর করতে হবে।

"এটা ভালো লাগে যে অনেক বাতি জ্বলছে। এটাও ঠিক যে, ভালো লাগে, বাতি না থেকে যদি চাঁদ ওঠে। সুতরাং এই দুটোকেই বুঝতে হবে। প্রয়োজনের বাইরে অন্ধকারের সাথে যুদ্ধ করার দরকার নাই। অন্ধকার যেটুকু আমাদের জীবনে আছে সেটাকেই দূর করতে হবে।"

ভয়েস অফ আমেরিকাঃ বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আপনারা কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন? কতদিনের মধ্যে এ সংকট কেটে যাবে বলে আপনি আশাবাদী?

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী: আমি আবার আগের কথায় যাই। বিদেশে একটা যুদ্ধের কারণে যে সংকট, তার সল্যুশন তো আমাদের কাছে নাই। আমাদের জ্বালানির দাম যদি কম না পড়ে আমাদের কাছে ওভারঅল কোনো সল্যুশন নাই। আমাকে সেই বাধ্যবাধকতার মধ্য থেকে সল্যুশন খুঁজতে হবে। উত্তরণ আমি বলব না, How do we manage? আমরা এখন যেমন বললাম ডিমান্ড সাইড ম্যানেজ করছি। যেমন সেদিন স্বিদ্ধান্ত হয়েছে, অফিস বেলা ৩টার সময শেষ হয়ে যাবে। স্কুল দুইদিন বন্ধ থাকবে। এরকম করে করে আমরা নিজেদের বুদ্ধিতে যতটুকু কুলায়, যে অল্প কমিয়ে কিভাবে সাশ্রয়ী হওয়া যায়। আমাদের প্রোডাক্টিভ রাখতে হবে কৃষিকে, শিল্পকে। সেটার উপর আমরা জোর দিচ্ছি, প্লাস যেটা বললাম এনার্জি রেসপন্সিবিলিটি। সেই সাথে ডাইভারসিফিকেশনটায় কিছু লাভ হয়। যেমন আগামী বছর, ইনশাআল্লাহ, আমাদের প্রথম নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টটা আসবে। তারপরের বছর আরেকটা আসবে। নিউক্লিয়ার পাওয়ারের, ইটস নট টাইড টু অয়েল। সুতরাং এটার প্রাইসিং ইনডিপেনডেন্ট। কোলের দাম বেড়েছে কিন্তু অতখানি বাড়েনি। মানে বেইজটা কম ছিলো। সেই কোল থেকে আমরা ইনশাআল্লাহ আগামী বছরের মধ্যে অন্তত আরো তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবো। তাহলে আমরা আমাদের দেশটাকে ম্যানেজ করতে পারবো। আপনি উত্তরণ বলতে পারেন।

এই টানাপোড়েন যেটা, সেটা সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে কমা শুরু হবে। একদিকে টেম্পারেচার কমবে, আরেকদিকে কৃষির চাপ তখন কমে যাবে। আর আমাদের যেমন রামপাল আছে, পায়রায় আরেকটা ইউনিট আসবে, তারপর ঝাড়খন্ডের বিদ্যুৎ আসবে। এই যে ডাইভারসিফাই করা হয়েছিলো তার জন্য আমরা ইনশাআল্রাহ উত্তরণ করে যাবো।

আমরা তো চাই না পলিউট করতে, গ্যাস ইজ সাপোজ টু বি দি ক্লিন ফুয়েল। সেজন্য গ্যাসের আমরা ক্যাপাসিটি তৈরি করে রাখছি। গ্যাসের প্রাইস যখনই একটা নরমাল লেভেলে যাবে তখন কিন্তু আমরা আউট অফ ইট। আশা করতে চাই যে এই যুদ্ধের অবসান হবে। না হলে তো আরো অনেক বিপদ আছে।

এটা আপনাকে বলে রাখি, আমাদের পার ক্যাপিটা কার্বন ডাইঅক্সাইড এমিশন .৮ মেট্রিক টন। উন্নত দেশে এটা ১০-২০ মেট্রিক টন এবং ১০-২০ মেট্রিক টন শত বছর ধরে করছে। আমাদের তো দু-চার বছর আগে ছিলো .৫ মেট্রিকটন। সুতরাং এই যে গ্লোবাল ওয়ার্মিং হয়েছে, এটা কিন্তু উন্নত দেশের কারণে হয়েছে। আমাদের দেশে সবকটা পাওয়ার প্ল্যান্টে যদি ফসিল ফুয়েল বন্ধ করে দেই....ঠিক আছে, আমরা অন্ধকারে থাকবো... It will not make any material difference to CO2 emissions. সুতরাং যে কারণে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা একটা ক্লাইমেট ফান্ড করেছেন। এটা দিয়ে আমরা ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স (জলবায়ু সহনশীলতা) কীভাবে হয়, শিল্প, কৃষি কীভাবে হয় সেগুলোর জন্য গবেষনা করছি। আমরা বসে থাকিনি। যদিও আ লট অফ প্রমিসেস ওয়ের হার্ড ফ্রম ডেভেলপড কান্ট্রিজ, যেসব দেশ ভালনারেবল, তাদের জন্য। ঠিক আছে কথা হয়, তাদের ওপর আস্থা রেখে বসে থাকলে তো চলবে না। আমাদের নিজেদের প্রচেষ্টা হচ্ছে ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স করা।

আমরা এই যে কোল ফায়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট করছি, এর প্রযুক্তি state of the art, পৃথিবীর মধ্যে। খুব উন্নতমানের কযলা এবং এটাকে বলে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি। জার্মানি যেসব খুলছে, ওগুলো সাব ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি। পৃথিবীতে আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজির কোল ফায়ারড পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড। মে বি হান্ড্রেড। কোল ফায়ারড শুনলে অনেকে আৎকে উঠবে। "আবার আপনি কোল আনছেন!" এটা অনেক ক্লিনার কোল এবং যদি কোন সময় কার্বন ক্যাপচারের স্টোরেজ আবিষ্কার হয়, প্রযুক্তি আবিষ্কার না, এফোরডেবল হয় তাহলে এটা থেকে আমি কিন্তু কার্বন ক্যাপচার স্টোরেজ করে এটাকে ক্লিন করে ফেলবো। সুতরাং তাহলে আমরা বর্তমানকে সার্ভ করলাম, আমরা ফিউচারকেও সার্ভ করলাম। এবং সেইজন্য অনেকে কিন্তু বিরোধিতা করেছিলেন, "আপনারা কোল ফায়ারড পাওয়ার প্ল্যান্ট করছেন, এই হবে, সেই হবে।" আমি তাদের যুক্তি, আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে বুঝতে পারি নাই। আমি যেটা বললাম যে "আমাদের করা না করার উপর পৃথিবীর কোন এমিশন নির্ভর করে না। ঠিক আছে, আমরা রেসপন্সিবল জাতি হিসেবে, উই ওয়ান্ট টু বি রেসপন্সিবল।" সেজন্যই কতভাবে এনার্জি ইউজের রেসপন্সিবিলিটি আনা হচ্ছে। যে কারণে আমরা অনেক ব্যয় করে এই কোল ফায়ারড পাওয়ার প্ল্যান্ট করছি। সেদিনই এক সভায় এই কথাগুলো উঠলো... "যে আপনারা এরকম করলেন না, এখন এই কোল ফায়ারড পাওয়ার প্ল্যান্ট।" আমি বড় বড় বইও দেখেছি, লেখা হয়েছে...এই কোল ফায়ারড পাওয়ার প্ল্যান্টের বিরোধিতা করে। আমি বললাম, "আপনাদের কথা সবই সত্য। আপনাদের আমি টিকেট দিব, আপনারা ইউরোপ যেয়ে এই কথাগুলো বলেন। পলিউশন তো এখানে হচ্ছে না, ইউরোপে হচ্ছে। আপনি ওখানে যেয়ে আন্দোলন করেন।" এখন এসব কথা দিয়ে দেশকে বিভ্রান্ত করা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বিভ্রান্ত করা, এটা তো ঠিক না।

ভয়েস অফ আমেরিকা: অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য।

XS
SM
MD
LG