পুরুষদের মধ্যে যৌনমিলনকে আইনী বৈধতা দিতে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর। তবে, একজন পুরুষ ও একজন নারীর মধ্যে সীমাবদ্ধ বিয়ের আইনী সংজ্ঞাটিকে পরিবর্তনের কোন পরিকল্পনা নেই। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং রবিবার এ কথা বলেন।
লি বলেন, সিঙ্গাপুরের সমাজব্যবস্থা, বিশেষ করে এই নগররাষ্ট্রের তরুণরা সমকামী ব্যক্তিদের বিষয়ে আরও সহনশীল হয়ে উঠছে।
জাতীয় দিবসের র্যালিতে দেওয়া তার বক্তব্যে লি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি এটি সঠিক কাজ, এবং এমন কিছুই করতে হবে যা সিঙ্গাপুরের বেশিরভাগ মানুষ এখন গ্রহণ করবেন।” তিনি আরও বলেন যে, সরকার দণ্ডবিধির ৩৭৭-এ ধারাটি বিলোপ করবে সরকার। এটি একটি ঔপনিবেশিক আমলের আইন, যা পুরুষের মধ্যে যৌনমিলনকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে।
তবে, আইনটি ঠিক কবে নাগাদ বাতিল করা হবে সেই বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার নয়।
এমন পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে সিঙ্গাপুরই এশিয়ার সর্বশেষ দেশ, যারা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অবসানের পথে আরও একধাপ এগোল।
এর আগে, ২০১৮ সালে ভারতের সর্বোচ্চ আদালতও সমকামী যৌনমিলন নিষিদ্ধকারী ঔপনিবেশিক আমলের আইনটি বাতিল করে দেয়। অপরদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ড সমলিঙ্গ বিয়ে আইনসম্মত করার দিকে আরও কিছুটা পথ পাড়ি দিয়েছে।
সিঙ্গাপুরে ৩৭৭-এ ধারার অধীনে অপরাধীদের দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তবে, তা বর্তমানে এই ধারার সক্রীয় প্রয়োগ নেই। সিঙ্গাপুরে দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের সম্মতিতে হওয়া যৌনমিলনের কারণে কয়েক দশক ধরেই কোন সাজা হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। আইনটিতে নারী বা অন্য কোন লিঙ্গের মানুষজন অন্তর্ভুক্ত নয়।
আইনটি বাতিলের চেষ্টায় লেসবিয়ান, গে (সমকামী), বাইসেক্সুয়াল (উভকামী), ট্রান্সজেন্ডার (লিঙ্গ পরিবর্তনকারী), ও কুয়্যার (এলজিবিটিকিউ) গোষ্ঠীগুলো বেশ কয়েকটি আইনি চ্যালেঞ্জ উত্থাপন করেছিল, কিন্তু সেগুলোর কোনটিই সফল হয়নি।
ফেব্রুয়ারিতে সিঙ্গাপুরের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেয় যে, যেহেতু আইনটি প্রয়োগ করা হচ্ছে না, তাই এটি সাংবিধানিক অধিকার ভঙ্গ করে না, যেমনটি বাদী পক্ষ দাবি করেছিল। এছাড়াও আদালত এ বিষয়টিও পুনর্নিশ্চিত করে যে, দুইজন পুরুষ যৌনমিলনে লিপ্ত হলে সেটির বিচার করতে আইনটি ব্যবহার করা যাবে না।