বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মহানগর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলে, শিক্ষার্থীদের অন্যতম বাহন শাটল ট্রেন। ১৯৮০ সালে চালু হওয়া বাংলাদেশ রেলওয়ের এই শাটল ট্রেন সাজছে নতুন সাজে। এই রূপসজ্জার কাজটি করেছেন জার্মান আরইউএসবি আর্ট গ্রুপের প্রধান লুকাস জিলিঞ্জার ও তার স্ত্রী লিভিয়া জিলিঞ্জার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে জার্মান শিল্পী দম্পতি সম্পূর্ণ নিজেদের অর্থায়নে কাজটি করেছে। এছাড়া চবির চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের সার্বিকবাবে সহযোগিতা করছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “শহরের পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে ২২ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত চলমান এই কার্যক্রমে শিল্পীদের নিজস্ব সৃজনশীল থিমের পাশাপাশি, বগিগুলোতে চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি), জাতীয় সংসদ ভবন ও সমুদ্রসহ বাংলাদেশের নান্দনিক সৌন্দর্য তুলে ধরা হচ্ছে।”
গত শুক্রবার (২২ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন প্ল্যাট ফরমে এই দম্পতি শাটল ট্রেনের বগিগুলোতে আঁকার কাজ শুরু করছেন। নিজেদের ভালোলাগা থেকে, তারা নিজেদের অর্থায়নেই শাটল ট্রেনের বগিগুলো রাঙিয়ে তুলছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান জানিয়েছেন, “প্রায় চার মাস আগে জার্মান শিল্পী লুকাস জিলিঞ্জার ও তার স্ত্রী লিভিয়া জিলিঞ্জার উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে শাটল ট্রেনের বগিগুলো নান্দনিক শিল্পকর্মে সাজানোর প্রস্তাব দেন। সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে তাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে।”
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার বলেন, “আগেও ট্রেনের বগিতে নানা শিল্পকর্ম অঙ্কিত ছিল। সেগুলো পুরনো হয়ে যাওয়ায়, নতুন করে বগি সাজানোর পরিকল্পনা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের। জার্মান শিল্পীদের প্রস্তাব পাওয়ায়, তাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়েছে।”
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ জানানা, “চট্টগ্রাম নগরী থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চলাচল করা শাটল ট্রেনের বগিগুলো নান্দনিক শিল্পকর্মে সাজিয়ে তুলছেন জার্মান শিল্পী দম্পতি। নগরীর পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন প্ল্যাটফরমে এ কার্যক্রম চলছে। শিল্পীদের নিজস্ব সৃজনশীল থিমের পাশাপাশি, বগিগুলোতে চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যসহ বাংলাদেশের নান্দনিক সৌন্দর্য তুলে ধরার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।”
চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৯৮০ সালে শহর থেকে শাটল ট্রেন সার্ভিস চালু হয়। শিক্ষার্থীদের বহনে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত জোড়া ট্রেন চলাচল করে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিদিন প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী শাটল ট্রেনে যাতায়াত করেন।