মাত্র ১৮ মাসে সিরিয়ার একটি শিবিরে বহু নারীসহ ১০০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করা হয়েছে। জাতিসংঘ মঙ্গলবার বলেছে, দেশগুলি তাদের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের দাবি জানিয়েছে।
সিরিয়ার জন্য জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ইমরান রিজা বলেছেন, সিরিয়ার আল-হল শিবির ক্রমবর্ধমান ভাবে নিরাপত্তাহীন স্থান হয়ে উঠছে এবং সেখানে আশ্রয় নেয়া শিশু বন্দিরা ভবিষ্যৎবিহীন জীবনে যেন অভিশপ্ত হয়ে রয়েছে।
কুর্দি নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার উত্তর-পূর্বে, আল-হোল শিবিরটি একটি অস্থায়ী আটক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।
তবে সেখানে এখনও প্রায় ৫৬,০০০ শরণার্থী বাস করছে, যাদের বেশিরভাগই সিরিয়া এবং ইরাকের লোক। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ইসলামিক স্টেট জিহাদি গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে, যারা ২০১৪ সালে ইরাক এবং সিরিয়ার কিছু অংশ দখল করে নিয়েছিল।
বাকিরা আইএস যোদ্ধাদের শিশু ও তাদের অন্যান্য আত্মীয়সহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক।
রিজা, বেশ কয়েকবার আল-হোলে গিয়েছিলেন, জেনেভায় সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেছেন, বন্দীদের মধ্যে প্রায় ৯৪% নারী ও শিশু।
তিনি বলেন, "এটি একটি অত্যন্ত কঠোর জায়গা, এবং এটি একটি ক্রমবর্ধমান অনিরাপদ জায়গায় পরিণত হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "গত বছরের জানুয়ারি থেকে ঐ শিবিরে প্রায় ১০৬টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে" এবং এদের মধ্যে "অনেক" নারী হত্যাকান্ডের শিকার হন। এছাড়া "এখানে প্রচুর লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, শিবিরে সহিংসতা বেড়েই চলেছে, যার মধ্যে সর্বসাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার – গত ১১ জুন থেকে এটি সপ্তম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।
পর্যবেক্ষণ-সংস্থাটি আরও বলছে, চলতি বছর ক্যাম্পের ভিতরে নিহত ২৪ জনের মধ্যে ১৬ জনই ছিলেন নারী।
রিজা বলেন, শিবিরে বন্দি প্রায় ২৭,০০০ ইরাকি, ১৮,০০০-১৯,০০০ সিরিয়ার এবং প্রায় ১২,০০০ অন্যান্য দেশের নাগরিক।
কিছু শরণার্থীকে ইরাকে প্রত্যাবাসন করা হলেও, অনেক দেশ যাদের উচিত্ "তাদের জনগণকে ফিরিয়ে নেয়া " তারা তা অস্বীকার করছে।
তিনি বলেন, "এর একমাত্র সমাধান হল শিবির খালি করা।"
২০১১ সালে সরকার পরিবর্তনের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সহিংসভাবে দমনের পর, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
বর্তমানে, সিরিয়ার জনসংখ্যার ৯০% এরও বেশি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে বলে অনুমান করা হয়।