অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

বাবা যখন প্রবাসে


প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম (বয়স ৩৮ বছর) তেরো বছর ধরে সিঙ্গাপুরে আছেন। দেশে স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। মেয়ে মাটির জন্মের সময় দেশে ছিলেন। ছেলে মেহরাবের জন্মের কিছুদিন আগেই ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায়, প্রবাসে ফিরে যান তিনি। ছেলের যখন দুই বছর বয়স, পিতা পুত্রের তখন প্রথম দেখা হয়।

তিনি বললেন, “স্ত্রী-সন্তানদের সাথে নিয়মিতই কথা হয়। এই ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগে ভিডিও কলে সবাইকে দেখা হয়, সকলের সঙ্গে কথা হয়। অনেক সময় দিনে পাঁচ/ছয়বারও কথা হয়। তারপরও, সন্তানদের সঙ্গে কোথায় যেন একটা দুরত্ব তৈরি হয়ে আছে।”

প্রবাসে বসে তাঁর মনে হয়, তিনি সন্তানদের যতটা মিস করেন, হয়তো তারা সেভাবে বাবাকে মিস করে না।

বাংলাদেশের একটি বড় জনগোষ্ঠি দেশের বাইরে থাকেন। এই প্রবাসীদের একটি বড় অংশেরই পরিবার ও সন্তানেরা দেশে থাকেন। প্রবাসী বাবাদের অনেকেই নিয়মিত দেশে আসার সুযোগ পান না। বিভিন্ন কারণে অনেককে বছরের পর বছর বিদেশে থাকতে হয়। পরিবার পরিজন ও প্রিয় সন্তানদের ফেলে কেমন আছেন এই বাবারা? সন্তানের কোন স্মৃতি তাকে প্রবাস জীবনে অশ্রুসজল করে? বাবা ও সন্তানের মধ্যে বসবাসের এই ভৌগলিক দূরত্ব কি কখনও মনের দুরত্বও বাড়ায়? এসব নিয়ে এবারের বাবা দিবসে ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মোহাম্মদ শরীফুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন প্রবাসী বাবা এবং প্রবাসী বাবাদের সন্তানেরা।

মো: আফজাল (বয়স ৫২ বছর) একুশ বছর ধরে মালয়েশিয়াতে আছেন। ২০০০ সালে তিনি যখন দেশ ছাড়েন, ছেলে আরাফাত তখন সবে ক্লাস থ্রিতে উঠেছে। ওইটুকু বয়সের একমাত্র সন্তানকে রেখেই বিদেশে পাড়ি জমান তিনি। ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে, গত একুশ বছরের মধ্যে একবারও দেশে আসতে পারেননি মো. আফজাল। ছেলে আরাফাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করছেন।

তিনি বললেন বাবার কথা, “ছোটবেলায় পেটের সমস্যার কারণে মিষ্টি খাওয়া মানা ছিলো। আম্মু খেতে দিতো না। কিন্তু আমি খুব মিষ্টি পছন্দ করতাম।তাই বাবা হাট থেকে গামছায় লুকিয়ে মিষ্টি নিয়ে আসতেন। এসে বলতেন, চল মাঠ থেকে গরু নিয়ে আসি। বাবার সাথে যেতাম। তখন বাবা লুকিয়ে লুকিয়ে মিষ্টি খাওয়াতেন। যেখানেই যেতাম, বাবা কাঁধে চড়িয়ে নিয়ে যেতেন। বাজারে গিয়ে আগেই মিষ্টির দোকানে বসাতেন। আমি মিষ্টি খেতাম, বাবা বাজার করতেন।”

এতো বছর ধরে বাবা প্রবাসে। বাবার সঙ্গে সম্পর্কটা কেমন, জানতে চাই আরাফাতের কাছে। আরাফাত বললেন, “বাবার সাথে প্রতিদিন কথা হয় না। আম্মুর সাথে বাবার প্রতিদিন কথা হয়। আমার সাথে দুই/তিন দিন পরপর কথা হয়। বাবার সাথে আমার সম্পর্কটা বন্ধুর মতো। বাবা আমার কাছ থেকে এলাকার খোঁজ খবর নেন। সামনে বিয়ে করবো, সেগুলো নিয়েও বাবার সাথে আলাপ হয়। বাড়ি গেলে আমি, মা ও বাবা তিনজন মিলেই ভিডিও কলে গল্প করি।”

ইন্তেখাব মাহমুদ (বয়স ৩২ বছর) কর্মসুত্রে ইতালি থাকেন প্রায় পাঁচ বছর ধরে। একমাত্র সন্তান রুদাইবার বয়স ছয় বছর। রুদাইবার কাছে বাবার স্মৃতি মানে ফোনকলে বাবাকে দেখা, বাবার কন্ঠ শোনা। মাঝে মাঝে বাবা অনেক খেলনা, চকলেট, ড্রেস বিদেশ থেকে পাঠান। তবু রুদাইবার মন খারাপ হয়। রুদাইবার মা বললেন, “মাঝে মাঝেই ও মন খারাপ করে বসে থাকে। এখন তো স্কুলে যায়। অন্য শিশুদের বাবাদের স্কুলের গেটে অপেক্ষা করতে দেখে। কিন্তু ও তো বাবার সাথে স্কুল থেকে আসতে পারে না। আমাকে বলে, মা, বাবা কি ফোন থেকে বের হয়ে আমাকে কোলে নেবে না?”

ইন্তেখাব মাহমুদও মেয়েকে খুব মিস করেন। বললেন, “সেই এত্তটুকু দেখে এসেছি। এর মধ্যে আর দেশে যেতে পারিনি। আমি যখন কাজ থেকে ফিরি, বাংলাদেশে তখন গভীর রাত। মেয়ে ঘুমিয়ে থাকে। তাই, প্রতিদিন কথা হয় না। মেয়ের মায়ের কাছ থেকে খোঁজ খবর নেই।”

প্রবাসে বসে তাঁর মনে হয়, তিনি সন্তানদের যতটা মিস করেন, হয়তো তারা সেভাবে বাবাকে মিস করে না।

বাবা-সন্তানের সম্পর্কে ভৌগলিক দূরত্বের প্রভাব

শিশুরা বাবা-মায়ের আদর ও ভালোবাসায় বেড়ে ওঠে। স্বাভাবিক যোগাযোগ, স্নেহের সংস্পর্শ, নিয়মিত কথোপকথন পরিবারের সাথে তাদের বন্ধনকে দৃঢ় করে। একই সঙ্গে থাকার ফলে বাবা-মা ও সন্তানের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়ে, একে অন্যের পছন্দ, অপছন্দ বুঝতে পারে। দীর্ঘদিন সন্তানের কাছ থেকে দূরে থাকলে সম্পর্কের মধ্যেও এর প্রভাব পড়তে পারে। সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক হয়ে যেতে পারে খুব আনুষ্ঠানিক কিংবা সৌজন্যের। দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা বাবাদের ক্ষেত্রে এ বিড়ম্বনা অস্বাভাবিক নয়। আবার বাবা যখন দেশে ফিরে আসেন পাকাপাকিভাবে থাকার জন্য, তখনও অনেকসময় দেখা যায় সন্তানরা তার সাথে অভ্যস্থ হতে পারে না। বাবার কর্তৃত্ব, তার সিদ্ধান্ত সন্তানের কাছে আরোপিত লাগে। মা এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে তার পরিচিত গন্ডির মধ্যে বাবাকে বহিরাগত মনে হয়। এই যে টানাপোড়েন, তার কারণগুলো কী?

কথা বলি মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান লাইফস্প্রিং’য়ের কনসালট্যান্ট সাইকোলোজিস্ট মিথিলা খন্দকারের সঙ্গে। মিথিলা খন্দকার বলেন, “প্রবাসী বাবাদের ক্ষেত্রে যেটা হয়; সন্তানের প্রতি প্রবল মায়া, মমতাবোধ থাকা সত্বেও নিয়মিত যোগাযোগের একটা অভাব অনেক সময় দেখা যায়। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, সন্তানের ভরণ পোষণের খরচ যোগানো, তাকে ভালো জায়গায় পড়ানো ইত্যাদি কারণে আয় রোজগার করতেই নিরুপায় হয়ে অনেক বাবা প্রবাস জীবন বেছে নেন। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ পারিবারিক বন্ধন তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। শিশুরা খুব ছোটবেলা থেকেই যে কোনো সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ, স্পর্শ ইত্যাদিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তাই শিশুদের সামনে বা কাছাকাছি যারা থাকেন তাদের প্রতি নির্ভরশীলতা বেশি গড়ে ওঠে। একজন শিশু যখন ছোটবেলা থেকেই তার নার্সিং, প্যারেন্টিংয়ের সকল ক্ষেত্রে মাকেই পাশে দেখে, স্বাভাবিকভাবেই মায়ের প্রতি তার নির্ভরশীলতা বেড়ে যায়। মায়ের সাথে তার বন্ডিং, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বেশি গড়ে ওঠে। মা যখন সন্তানের সব বিষয় একাই সামলান, তখন অনেক ক্ষেত্রেই মায়ের মধ্যে প্রচন্ড মানসিক চাপ কাজ করে। অনেক সময় তার এই মানসিক চাপের প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি সন্তানকে বোঝান যে সব কষ্ট তার একারই করতে হয়। এক্ষেত্রে তিনি বাবার কষ্টটাকে হয়তো পুরোটাই বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। ফলে, সন্তান যেহেতু মাকেই সবকিছু করতে দেখছে এটা তার বাবার প্রতি একটা বিরূপ ধারণা তৈরি করতে পারে। খুব প্র্যাকটিক্যালি যদি বলি, বাবার সাথে একটা মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় এবং সন্তান যত বড় হয়, বাবার সাথে তার দূরত্ব তত বাড়তে থাকে।”

মানসিক দূরত্ব নিরসনে করণীয়

এই সংকট দূরীকরণের ক্ষেত্রে করণীয়গুলো নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার সাথে কথা বলেছেন সাইকোলোজিস্ট মিথিলা খন্দকার। তার আগে জেনে নেই আরেকজন বাবার কথা। যিনি আশি ও নব্বইয়ের দশকে প্রায় উনিশ বছর সৌদি আরব থেকেছেন। তিনি মোহাম্মদ ইয়াহিয়া (বয়স ৬৬ বছর)। মোহাম্মদ ইয়াহিয়া যখন প্রবাসে ছিলেন, তখন পরিবারের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ছিলো ল্যান্ড ফোন আর চিঠি। সে সময়ে সেই কঠিন যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যেও তিনি কিভাবে তার স্ত্রী ও একমাত্র ছেলের সঙ্গে একটা সুন্দর সম্পর্ক রক্ষা করেছেন; সেই গল্প বললেন ভয়েস অফ আমেরিকার কাছে।

১৯৮৩ সালের ডিসম্বরে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে একটি কোম্পানিতে কাজ নিয়ে, সে দেশে পাড়ি জমান। ল্যান্ড ফোনে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। নিজে ফোন করতেন কোম্পানীর ফোন থেকে যার বিল তার বেতনের সঙ্গে সমন্বয় করা হতো। আবার কখনও ফোন করতেন ফোনবুথ থেকে। স্ত্রীকে বাড়ির দোতলা থেকে নেমে এসে শ্বশুরের স্টাডি রুমে থাকা ফোনে কথা বলতে হতো। পরে অবশ্য মোহাম্মদ ইয়াহিয়া নিজের বেডরুমে সরাসরি একটা ল্যান্ড ফোনের ব্যবস্থা করেছিলেন। ফলে, স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলাটা কিছুটা সহজ হয়েছিলো। কাজে যোগদানের পাঁচ মাস পরে তার স্ত্রী পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সে সময় তিনি দেশে আসতে চেয়েছিলেন কিন্তু কোম্পানী তাকে ছুটি দেয়নি। ছেলে ইসামকে তিনি সাত মাস বয়সে দেখেন। সে সময় চিঠির যুগ। ছেলের হাতে আলতা লাগিয়ে কাগজে ছাপ তুলে বাবার কাছে পাঠিয়েছিলেন ছেলের মা। বিভিন্ন বয়সে তোলা ছেলের ছবিও পাঠাতেন খামে। আরও পাঠাতেন অডিও ক্যাসেটে রেকর্ড করা ছেলের কথা।

মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বললেন, “ইসাম যখন স্কুলিং শুরু করলো, ওর মায়ের পাঠানো চিঠির খামে আলাদা করে ও একটা লিস্ট পাঠাতো। সেখানে থাকতো খেলনা, চকলেট আরো নানান কিছুর ফরমায়েশ।”

ছুটিতে দেশে এলে ছেলেকে নিয়ে ঘুরতেন। দেশে এবং বাংলাদেশের আশেপাশের দেশগুলোতে পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতেন। মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বললেন, “এই ব্যাপারটা কিছুটা ক্ষতিপূরণ দেয়ার মতোই ছিলো। এই যে আমি তাদের সাথে থাকতে পারছি না সেই শূন্যতা পূরণ করতেই আমি তাদের সময় দিতাম। ইসামের সাথে এ কারণেই খুব ভালো একটা সম্পর্ক আমি গড়তে পেরেছি। সৌদিতে বাঙালিদের জন্য ভালো কোনো স্কুল ছিলো না, হাতে গোনা দুই/তিনটা স্কুল ছিলো। তাই আমি ফ্যামিলি ভিসা পেয়েও সেখানে পরিবারকে নিতে পারিনি। একটা পর্যায়ে আমি ছেলের জন্যই ওখানকার জব ছেড়ে দেশ চলে আসি। ইসাম যখন ‘ও’ লেভেল দেবে, তখন আমার স্ত্রী আমাকে বললেন দেশে চলে আসতে। ওর মনে হচ্ছিলো ছেলে বড় হচ্ছে, এখন আর ছেলেকে একা সবরকম টেককেয়ার করা, সাপোর্ট দেয়া ওর পক্ষে সম্ভব হবে না। সে সময় আমি চলে আসার সিদ্ধান্ত নেই।”

সাইকোলোজিস্ট মিথিলা খন্দকার বলেন,“প্রবাসী বাবার সাথে সন্তানের বন্ডিং বাড়ানোর জন্য কিছু পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে। যেসব শিশু স্বাভাবিকভাবেই বাবা-মা দুজনের সঙ্গে থেকে বেড়ে ওঠে, তাদের সাথে তুলনা করলে বিষয়টি হয়তো একটু অন্যরকম হবে। তবে, এই অভাববোধ দূর করার জন্য যতটা সম্ভব চেষ্টা করতে হবে।”

তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে সন্তানের মাকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে হবে। বাবাকে সব কাজে সম্পৃক্ত করা সুন্দর সমাধান হতে পারে। যেমন: রাতে ঘুমানো আগে বাবার সাথে ভিডিও কলে কথা বলা বা বাবাকে একটা গুডবাই মেসেজ লিখে কিংবা মুখে বলে ভিডিও করে পাঠানো। রাতে ঘুমাতে যাবার আগে কিংবা অবসরে সন্তানের সঙ্গে বাবার গল্প করা। পোশাক, খেলনা, জুতো ইত্যাদি কেনার ক্ষেত্রে বাবার প্রসঙ্গ আনা। যেমন; ‘তোমার বাবা বলেছে তোমাকে লাল রঙের পোশাক কিনে দিতে। এই রঙে তোমাকে বাবার রাজকন্যার মতো লাগবে।বাবা টাকা পাঠিয়েছে বলেই কিন্তু মা তোমাদের ড্রেস কিনে দিতে পেরেছি।’ স্কুলে যাওয়ার আগে বাবাকে একটা টেক্সট বা ভয়েস মেসেজ দিয়ে যাওয়া, ‘বাবা, আমি স্কুলে যাচ্ছি।’ অর্থাৎ যে কাজটা বাবা সামনে থাকলে করতো সেটা ভার্চুয়ালি করা। এভাবে সব কাজে বাবাকে সম্পৃক্ত করে সন্তানের জীবনে বাবার গুরুত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। বাবা যে নেপথ্যে থেকে পরিবারে কত বড় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন তা সন্তানকে বোঝাতে হবে। বাবা যে অন্য দেশে একা আছেন, চাইলেই সন্তানকে জড়িয়ে ধরতে পারেন না, সেটা মাকেই বোঝাতে হবে। বাবার জন্য সন্তানের মনে শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতা তৈরি করতে হবে। আমরা ভাবি শিশুরা বোঝে না, কিন্তু এটা আমাদের ভুল ধারণা। শিশুদের তাদের মতো করে বোঝালেই তারা বোঝে।”

“একইভাবে, পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখতে বাবাকেও এগিয়ে আসতে হবে। শুধু টাকা পাঠিয়ে দিয়ে আর সপ্তাহে একদিন ভিডিও কল করে সবার সাথে কথা বললেই হবে না বরং বাবাকেও সন্তানের ছোট ছোট বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। সন্তান অসুস্থ থাকলে, বাবাও যদি বারবার তার খোঁজ খবর রাখেন, পরামর্শ দেন তাহলে সন্তানের পাশাপাশি সন্তানের মায়েরও মনে হবে তিনি বাচ্চা নিয়ে একা লড়াই করছেন না। বাচ্চার বাবা দূরে থাকলেও পাশে আছেন; বললেন সাইকোলোজিস্ট মিথিলা খন্দকার।

মিথিলা খন্দকার আরও বলেন, “বাবা যত ব্যস্তই থাকুন না কেনো ছেলেমেয়ের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, কী খাচ্ছেন এই সব ছোট ছোট বিষয় শেয়ার করলে তারাও শেয়ার করতে শিখবে। বাবার সাথে তাদের সম্পর্কটা বন্ধুত্বপূর্ণ হবে। এগুলো যে শুধু বাবার ভালো লাগার জন্য করা তা কিন্তু নয়। এ ধরণের শেয়ারিং সন্তানকে ‍নিরাপদ বোধ করায়। বাবা যে তাদের সঙ্গে আছেন এই অনুভূতিটা তার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলে। শিশুর মানসিক উন্নয়নের জন্য এ বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

XS
SM
MD
LG