আর্জেন্টিনার একটি আদালত বৃহস্পতিবার প্রায় এক শতাব্দী আগে ৪০০’এরও বেশি আদিবাসীকে হত্যার জন্য রাষ্ট্রকে দায়ী করেছে এবং প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।
১৯২৪ সালের জুলাই মাসে, আর্জেন্টিনার পুলিশ ও বসতি স্থাপনকারীরা চাকোর উত্তরাঞ্চলে তুলা চাষের খামারে অমানবিক জীবনযাপন এবং কাজের পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী শত শত আদিবাসীকে কচুকাটা করেছিল ।
কোম ও মোকোইত সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০০ জন সদস্যকে হত্যা করা হয়েছিল। তারা ইউরোপ থেকে আগত বসতি স্থাপনকারী অভিবাসী কৃষকদের জমিতে যা তথাকথিত নাপাপলি সংরক্ষিত এলাকা সেখানে আধা-দাসত্বের পরিবেশে বসবাস করত।
এর আগে একজন ফেডারেল বিচারক এই গণহত্যাকে মানবতার বিরুদ্ধে একটি অপরাধ হিসাবে রায় দিয়েছেন তবে বিবাদীরা উপস্থিত না থাকার কারণে কোনও প্রথাগত ফৌজদারি বিচার অনুষ্ঠিত হয়নি। বিবাদীরা দীর্ঘকাল আগে মারা গিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত, আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও দোষ করার দায়ের কথা বলা হয়নি।
কথিত "সত্য বিচার" নামে এক মাসের শুনানির পর বৃহস্পতিবার রেজিজটেনশিয়ার আদালত স্প্যানিশে, কোমে এবং মোকোইত ভাষায় রায় দিয়েছে।
এতে বলা হয় “আদিবাসী গণহত্যার” প্রেক্ষাপটে সংঘটিত “মানবতাবিরোধী অপরাধ”-এ “রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা” প্রমাণিত হয়েছে।
বিচারক জুনিলদা নীরেম্পারগার “ঐতিহাসিক ক্ষতিপূরণ”এর আদেশ দেন তবে এর মধ্যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
পদক্ষেপগুলির মধ্যে রয়েছে স্কুলের সিলেবাসে গণহত্যা অন্তর্ভুক্ত করা এবং নিহতদের দেহাবশেষ খুঁজে বের করার জন্য ফরেনসিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।
২০২০ সালে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছিল।
আর্জেন্টিনার আদিবাসীদের উপর নিপীড়নের বিষয়ে এটা ছিল আদালতে প্রথম মামলা।
১৯২৪ সালের গণহত্যায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের বিবরণ অনুযায়ী নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু ও বয়স্করাও ছিল।
আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আর্জেন্টিনার সাড়ে চার কোটি নাগরিকের মধ্যে মাত্র ১০ লক্ষ হচ্ছেন মূল ৩৯টি আদিবাসী গোষ্ঠীর সদস্য বা বংশধর।
ইতিহাসবিদরা বলছেন, আর্জেন্টিনায় অভিবাসীরা বসতি স্থাপনের ফলে আদিবাসীরা প্রায় নির্মূল হতে থাকে।
নৃশংস ঘটনাগুলির মধ্যে দ্য ডেজার্ট ক্যাম্পেইন নামে পরিচিতঘটনাটি হচ্ছে সবচেয়ে নিষ্ঠুর অধ্যায় । ১৮৭৮ থেকে ১৮৮৫ সালের মধ্যে আর্জেন্টিনার বাকি অংশের সঙ্গে প্যাটাগোনিয়াকেঅন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টায় কমপক্ষে ১৪ হাজার আদিবাসীকে হত্যা করা হয়েছিল।