অ্যাকসেসিবিলিটি লিংক

ফরিদপুরে ডায়ারিয়া আক্রান্ত রোগীদের ঈদ কাটল হাসপাতালেই


ফরিদপুরে ডায়ারিয়া আক্রান্ত রোগীদের ঈদ কাটল হাসপাতালে
ফরিদপুরে ডায়ারিয়া আক্রান্ত রোগীদের ঈদ কাটল হাসপাতালে

মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদ বাংলাদেশে উদযাপিত হচ্ছে আজ মঙ্গলবার (৩ মে)। ঈদের এই উৎসবের দিনেও বাংলাদেশের অনেক হাসপাতালের মতো ফরিদপুর জেলার সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অনেক ডায়ারিয়া রোগী। উৎসবের এই দিনটিতে তাদের হাসপাতালেই কাটাতে হয়েছে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা এই মানুষগুলোর মধ্যে ঈদে ছিল না কোনো আনন্দ।

ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সোমবার (২ মে) সকালে ভর্তি হয়েছেন শাকিল হোসেন (৩০)। হাসপাতালের বেডে জায়গা হয়নি তার। বারান্দাতেই চলছে তার চিকিৎসা। শাকিল হোসেনের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলায়। তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে ফরিদপুরে কর্মরত রয়েছেন।

শাকিল হোসেন বলেন, “সোমবার সকালে হঠাৎ করেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হই। কিন্তু কিছুতেই বমি ও পায়খানা কমছে না। সঙ্গে রয়েছে পেট ব্যথা”।

শাকিলের মা আফসানা বেগম বলেন, “ছেলের অসুস্থতার কথা শুনেই চলে এসেছি। হাসপাতালেই কাটছে ঈদ। তবুও ছেলে সুস্থ হোক, সামনের বছর ঈদ পালন করব”।

ফরিদপুর সদর উপজেলার ধুলদী এলাকার বাসিন্দা আজিজ বেপারী। তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত শুক্রবার থেকে ভর্তি রয়েছেন। বর্তমানে কিছুটা সুস্থ।

তিনি বলেন, “চারদিন ধরে ভর্তি রয়েছি। এখন কিছুটা সুস্থ। সম্পূর্ণ ভালো হতে আরও কয়েক দিন লাগবে। এবার আর ঈদের আনন্দ করা হলো না। হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে। বাড়িতে ছেলেমেয়ে রয়েছে। আমার জন্য তাদেরও ঈদ করা হয়নি”।

শুধুমাত্র শাকিল ও আজিজই নয়, ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে বিভিন্ন বয়সের ৭০ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হাসপাতালের ডায়রিয়া রোগীদের সেবার কাজে নিয়োজিত সেবিকা গোলাপী বেগম জানান, “রোগী আসছে প্রচুর, জায়গা দিতে পারছি না। নিরুপায় হয়ে অনেকেই ফ্লোর, বারান্দায় সেবা নিচ্ছেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি সেবা নিশ্চিত করতে”।

তিনি আরও জানান, “রোগীর চাপ থাকায় আমাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। রোগীদের সঙ্গে আমাদের হাসপাতালেই ঈদ করতে হচ্ছে”।

ফরিদপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গনেষ আগারওয়াল জানান, গত দেড় মাস ধরে ডায়রিয়া রোগী আসছে। তবে দুই দফা ডায়রিয়ার সংক্রমনের হার বেড়েছে। এবারের আক্রান্তের হার গত কয়েক বছরের তুলনায় অধিক। প্রতিদিন গড়ে এক শর ওপর রোগী ভর্তি হচ্ছে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে মাত্র ১০ বেড রয়েছে। অন্য ওয়ার্ডেও ডায়রিয়ার চিকিৎসা চলছে। তাতেও জায়গা সংকুলন হচ্ছে না। এ কারণে বারান্দাতেও রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, “সদর হাসপাতালে অন্য রোগীদের সেবা সাময়িক স্থগিত করে সকল ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগীদের সেবা চলছে দিন রাত। এই বিপুলসংখ্যক রোগীর সেবা দিতে নার্স ও চিকিৎসকদের হিমসিম খেতে হচ্ছে”।

তিনি জানান, রোগীদের সেবা দিতে হাসপাতালে কর্মরতদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

XS
SM
MD
LG