মালির শাসক জান্তা সোমবার (২ মে) ঘোষণা করেছে যে, দেশটি তার প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শাসক ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি ছিন্ন করছে। জান্তা ফরাসি সেনা কর্তৃক তার দেশের জাতীয় সার্বভৌমত্বের “স্পষ্ট লঙ্ঘনের” নিন্দা জানিয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ কয়েকবার হুমকির পর আসা ঘোষণাটি মালি ও ফ্রান্সের জান্তার মধ্যে সম্পর্কের অবনতির সর্বশেষ ঘটনা।
“মালি প্রজাতন্ত্রের সরকার অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছে, কিছু সময় ধরে ফ্রান্সের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার গভীর অবনতি হয়েছে”, মুখপাত্র কর্নেল আবদৌলায়ে মাইগা একটি টেলিভিশন বিবৃতিতে বলেছেন।
মাইগা ফরাসি বাহিনী কর্তৃক একাধিকবার তার দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগ করেন।
তিনি মালির বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযান শেষ করার জন্য ফ্রান্সের ২০২১ সালের জুনের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন।
এবং তিনি মালি থেকে ফ্রান্সের সেনা প্রত্যাহারের জন্য ফেব্রুয়ারিতে ফ্রান্সের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
মালির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার বিকেলে তারা প্যারিসকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।
ফ্রান্স এখন পর্যন্ত জান্তার ঘোষণার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেনি।
২০২০ সালের অগাস্টে ক্ষমতা দখলকারী জান্তা এবং ফ্রান্সের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা বাড়ছিল।
মালি যে চুক্তি অবসান করেছে, সেটা ২০১৪ সাল থেকে মালিতে ফ্রান্সের হস্তক্ষেপের কাঠামো নির্ধারণ করেছিল।
মালির সশস্ত্র বাহিনীকে সেখানে জিহাদি আক্রমণ বন্ধ করতে সাহায্য করার জন্য ফরাসি সেনারা একটি বড় বাহিনী মোতায়েন করার এক বছর পরে চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
মালির সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক শীতল হওয়ার কারণ, জান্তা গণতান্ত্রিক ও বেসামরিক শাসনে দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি সময়সূচি নির্ধারণের জন্য আন্তর্জাতিক চাপকে প্রতিহত করেছিল।
প্যারিস ক্রেমলিনের সঙ্গে জান্তার সম্পর্ক নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে।
ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই দেশই, ক্রেমলিনভিত্তিক নিরাপত্তা সংস্থা ওয়াগনারের ভাড়াটে সেনাদের মালিতে মোতায়েন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। জান্তা দাবি করে যে, রাশিয়ানরা কেবল সামরিক প্রশিক্ষক হিসেবে শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করছে।
জিহাদি অভ্যুত্থানের কারণে মালির বিস্তীর্ণ অংশ সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। ২০১২ সালে এই তৎপরতা শুরু হয়েছিল এবং তিন বছর পরে প্রতিবেশী বুরকিনা ফাসো এবং নিজারে তা ছড়িয়ে পড়েছিল।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রবিবার মালি, গিনি ও বুরকিনা ফাসোতে দ্রুত বেসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনটি দেশই বর্তমানে সামরিক শাসনের অধীনে রয়েছে।