চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির একটি শীর্ষ নীতিনির্ধারণী কমিটি শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) বলেছে, চীন কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব এবং ইউক্রেনে সংঘাতের ফলে ঝুঁকিতে থাকা ইন্টারনেট প্ল্যাটফরমসহ সামগ্রিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা প্রদানে পদক্ষেপ নেবে। এই সিদ্ধান্তের ফলে শেয়ারবাজার আবারও চাঙ্গা হয়েছে।
ইউক্রেনের সংঘাত এবং করোনাভাইরাস চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছরে অর্থনৈতিক মন্দার সৃষ্টি করেছে। এ বছর তিনি নজিরবিহীন তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বেসরকারি অর্থনীতিবিদরা বলেছেন যে, এই বছর প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বেইজিংয়ের লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হবে, কারণ লকডাউন এবং মহামারি মোকাবিলায় অন্য কঠোর পদক্ষেপ পণ্য সরবরাহে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।
শুক্রবার শির সভাপতিত্বে পলিটব্যুরোর (কমিউনিস্ট দলের শীর্ষ নীতিনির্ধারনী কমিটি) বৈঠকে বলা হয়েছে যে, তারা কোভিড-আক্রান্ত শিল্প এবং ছোট সংস্থাগুলোকে সহায়তা প্রদান করবে, অবকাঠামো নির্মাণকে গতিশীল করবে এবং পরিবহন, রসদ ও পণ্য সরবরাহকে স্থিতিশীল করবে, কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়েবসাইটের একটি বিবৃতিতে বলা হয়।
শীর্ষ নেতারা স্বীকার করেছেন যে, প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং মূল্য স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।
প্রতিশ্রুতির প্রতিক্রিয়ায় চীনা শেয়ারের দাম বেড়েছে, বিশেষ করে ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলোর, যার ওপর কর্তৃপক্ষ গত বছর বিধিনিষেধ আরোপ করে। কারণ পলিটব্যুরোর প্রতিশ্রুতি “প্ল্যাটফর্ম অর্থনীতির সুস্থ বিকাশের প্রচার” আশা জাগিয়েছে, সবচেয়ে খারাপ অধ্যায় শেষ হয়ে গেছে।
বিশ্লেষকেরা বিশ্বাস করেন যে ২০২২ সালের জন্য সরকারের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আরও প্রণোদনা ব্যবস্থা এবং সম্পত্তির ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করার প্রয়োজন হবে।
কোভিডের ধাক্কা
লকডাউন চীনের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারকে বাধাগ্রস্ত করবে। এই আশঙ্কায় গত দুই সপ্তাহ ধরে আর্থিক বাজারগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল। উল্লেখ্য, অনেক দেশ সবে মহামারি থেকে উদ্ভূত মন্দা কাটিয়ে উঠছে।
মঙ্গলবার, শির সভাপতিত্বে একটি সভায় চাহিদা বাড়ানোর জন্য একটি বড় অবকাঠামোগত উদ্যোগের ঘোষণা করা হয়। এটি প্রবৃদ্ধির জন্য বড় প্রকল্পের ওপর বেইজিংয়ের নির্ভরতাকে আরও শক্তিশালী করবে।
বেইজিং সম্পত্তি বাজারের “সুগঠিত উন্নয়নকেও” সহায়তা প্রদান করবে। আশা করা হচ্ছে, কিছু শহরে ডেভেলপারদের জন্য তারল্য সংকট সহজ করতে তৃতীয় পক্ষের তহবিলের তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা শিথিল করবে।
কিন্তু পলিটব্যুরো বলেছে যে, চীন মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাব কমিয়ে রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতিহত করতে তার বিতর্কিত শূন্য-কোভিড নীতি অব্যহত রাখবে।